শুরুটা তিনিই করেছেন। তাঁর আগের প্রজন্মের কেউ নয়। আর তা করেই ভারতের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোগপতি হয়েছেন নেহা নারখে়ড়ে। ডেটা টেকনোলজি সংস্থা কনফ্লুয়েন্টের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। মেসেজ, ডেটা পাঠানোর একটি অ্যাপও রয়েছে নেহার।
২০২২ সালের ‘আইআইএফএল ওয়েলথ হারুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট’ প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। সেখানে ৩৩৬ নম্বরে নাম রয়েছে নেহার। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪,৭০০ কোটি টাকা।
২০২২ সালের জুনে স্বপ্রতিষ্ঠিত মহিলা উদ্যোগপতিদের একটি তালিকা প্রকাশ করে ফোর্বস পত্রিকা। সেই তালিকায় ৫৭ নম্বরে নাম ছিল নেহার। সেই সময়ে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩,৯৮২ কোটি টাকা।
নেহা এখন আমেরিকার নাগরিক। থাকেন ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোতে। যদিও তাঁর জন্ম, পড়াশোনা ভারতে।
৩৭ বছরের নেহার জন্ম পুণেতে। ২০০৬ সালে সাবিত্রীবাঈ ফুলে পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়েছিলেন তিনি।
২০০৬ সালেই স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য আমেরিকার জর্জিয়া পাড়ি দেন। সেখানে জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পড়াশোনা শুরু করেন।
স্নাতকোত্তর শেষ করে ওরাক্ল সংস্থায় যোগ দেন। সেখানে লিড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এর পর লিঙ্কডইনে যোগ দেন।
২০১১ সালে লিঙ্কডইনে চাকরি করার সময় তৈরি করেন তথ্য আদানপ্রদানের অকটি প্ল্যাটফর্ম। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে থাকে সেই প্ল্যাটফর্ম।
এই সময়ই লিঙ্কডইনের চাকরি ছেড়ে নিজে কিছু শুরু করার চেষ্টা করেন নেহা। ২০১৪ সালে নিজের টিমের সঙ্গে মিলে শুরু করেন একটি প্রযুক্তি সংস্থা।
নেহার লিঙ্কডইন প্রোফাইল বলছে, তিনি ওই সংস্থার কার্যনির্বাহী বোর্ডে রয়েছেন। গত আড়াই বছর ধরে বিভিন্ন সংস্থায় বহু বিনিয়োগ করেছেন তিনি।
২০১৮ সালে বিশ্বের প্রথম ৫০ জন মহিলা প্রযুক্তিবিদের একটি তালিকা প্রকাশ করে ফোর্বস পত্রিকা। সেখানেও স্থান পেয়েছিলেন নেহা।
২০১৯ সালে লন্ডনে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল নেহার সংস্থা। সেখানে দেখা গিয়েছিল, ওই সময় শতাধিক সংস্থা তথ্য দেওয়া-নেওয়ার জন্য নেহার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। কেন এত জনপ্রিয় এই প্ল্যাটফর্ম? নেহার দাবি, খুব দ্রুত তথ্য পাঠানো যায় এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।
কী ভাবে সফল হল তাঁর ভাবনা? নেহা জানিয়েছেন, নিজের পড়াশোনা, দক্ষতার উপর আস্থা রেখেছেন। আর তাই দিয়েই নিজের পরিচয় তৈরি করার চেষ্টা করেছেন।
নেহা তাঁর সাফল্যের কৃতিত্ব দিয়েছেন বাবা-মাকে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার জীবনে মা-বাবার ভূমিকা বিরাট। বাবাই আমাকে প্রথম বুঝিয়েছিলেন যে আমি যা চাই, তা করতে পারি। লক্ষ্যপূরণ করতে পারি। তাঁরাই বুঝিয়েছিলেন যে, আজ যেটা কিছুই বুঝি না, কাল চেষ্টা করে সেটাই বুঝব। শিক্ষার মূল্য বুঝিয়েছিলেন।’’
তিন জনের অনুপ্রেরণা রয়েছে নেহার জীবনে। তাঁরা কারা? নেহার কথায়, ‘‘ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, পেপসি সংস্থার প্রাক্তন কর্তা ইন্দ্রা নুয়ি এবং প্রাক্তন আইপিএস কর্তা কিরণ বেদী।’’