ছবি নির্মাণের জন্য খরচ হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। খরচের নিরিখে আশির দশকের দামি ছবির তালিকার প্রথম সারিতে নামও লিখিয়ে ফেলেছিল। তবে পাঁচ বছর ধরে তৈরির পরেও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতের অন্যতম ব্যর্থ ছবি ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’।
১৯৮০ সালে ২০ মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’। চলতি বছরে ৪৪ বছর পূর্ণ করল ছবিটি। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই ছবি নির্মাণে খরচ হয়েছিল ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। আশির দশকে এত টাকা খরচ করে খুব কম ছবিই তৈরি হত।
‘দ্য বার্নিং ট্রেন’-এর নির্মাতারা ভেবেছিলেন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর বক্স অফিসে রমরমিয়ে ব্যবসা করবে ছবিটি। কিন্তু বক্স অফিস থেকে মাত্র ছ’কোটি টাকা আয় করে এই ছবি।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল অমিতাভ বচ্চনকে। কিন্তু সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন অভিনেতা। বলিপাড়ার অন্য ছয় জনপ্রিয় তারকাকে নিয়ে তৈরি হয় ছবিটি।
ধর্মেন্দ্র, বিনোদ খন্না, জীতেন্দ্র, হেমা মালিনী, পরভিন ববি এবং নীতু কপূরের মতো বলি তারকারা ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন। বলিপাড়া সূত্রে খবর, অমিতাভকেও অন্যতম মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি।
‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রেও অভিনয় করতে দেখা যায় বলিপাড়ার নামজাদা তারকাদের। ড্যানি ডেনজোংপা, সিমি গারেওয়াল, আশা সচদেব, বিনোদ মেহরা, নবীন নিশ্চলের মতো তারকারা এই ছবিতে অভিনয় করেন।
‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিটি তৈরি করতে পাঁচ বছর সময় লেগেছিল। বলিপাড়া সূত্রে খবর, শুটিংয়ের জন্য একটি আসল ট্রেন ভাড়া করেছিলেন ছবির পরিচালক রবি চোপড়া।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিটির অধিকাংশ শুটিং মুম্বইয়ের ফিল্ম সিটিতে হলেও পানভেল এবং বরোদা স্টেশনেও ছবির কিছু অংশ শুট করা হয়।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৪টের মধ্যে পানভেল এবং বরোদা স্টেশনে শুটিং করতেন রবি। পর্দায় সত্যতা ফুটিয়ে তুলতে তিনি নাকি একটি রাজধানী এক্সপ্রেস ভাড়া করেছিলেন।
বলিউডের একাংশের দাবি, পর্দায় সত্যতা ফুটিয়ে তুলতে আসল ট্রেনেই নাকি আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন রবি।
বলিপাড়ার জল্পনা, শুটিংয়ের সময় আসল রাজধানী এক্সপ্রেসেই নাকি আগুন লাগানো হয়েছিল। সে কারণে ভারতীয় রেল ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’-এর নির্মাতাদের কাছে। কিন্তু ছবি ব্যর্থ হওয়ার পর ধারদেনায় ডুবে গিয়েছিল প্রযোজক সংস্থা। তাই ক্ষতিপূরণ দিতে পারেনি তারা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ মুক্তির প্রথম কয়েক দিন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ভিড় হলেও তার পর থেকে তা কমতে শুরু করে। বক্স অফিসে ফ্লপের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলে ছবিটি।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিটি বক্স অফিসে ব্যর্থ হওয়ার কারণ এই ছবির দৈর্ঘ্য। ছবিনির্মাতারাও নাকি এই কথা স্বীকার করেছিলেন।
বলিপাড়ার জল্পনা, তিন ঘণ্টা ধরে প্রেক্ষাগৃহে বসে সিনেমা দেখতে গিয়ে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছিল দর্শকের। তাই প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ভিড়ও কমতে থাকে। ছবির দৈর্ঘ্য খানিকটা কম হলে ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করতে পারত বলে অনুমান ছবিনির্মাতাদের।