প্রত্যাশিত ভাবেই দেশের নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন জগদীপ ধনখড়। বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারালেন বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল।
উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৭১টি ভোট। ধনখড় পেয়েছেন ৫২৮টি ভোট। যা মোট ভোটের ৭০ শতাংশ।
ভোটের নিরিখে বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নায়েডুকেও পিছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি। তাঁর থেকে প্রায় দু’শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন ধনখড়।
উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে জগদীপ ধনখড়ের রাজনৈতিক জীবন কেমন ছিল? আইনজীবী থেকে কী ভাবে হলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব?
১৯৫১ সালের ১৮ মে রাজস্থানের ঝুনঝুনুতে এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম ধনখড়ের।
চিতরগড়ের সৈনিক স্কুলে পড়াশোনা শেষে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন ধনখড়।
এর পর রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন।
১৯৭৯ সালে সুদেশ ধনখড়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ধনখড়। তাঁদের এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
সালটা ১৯৭৯। প্রথমে আইনজীবী হিসাবে পেশাদার জীবন শুরু করেছিলেন দেশের নয়া উপরাষ্ট্রপতি। যোগ দিয়েছিলেন রাজস্থানের বার কাউন্সিলে।
পরে শীর্ষ আইনজীবী পদে তাঁর উত্তরণ ঘটেছিল। ১৯৯০ সালে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি দেশের একাধিক হাই কোর্টেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ধনখড়ের।
রাজস্থান হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন জগদীপ।
আইনজীবী হিসাবে কাজ করতে করতেই রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন ধনখড়। ১৯৮৯ সালে রাজনীতিতে তাঁর অভিষেক ঘটে।
রাজস্থানের ঝুনঝুনু থেকে জনতা দলের টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ হন তিনি।
১৯৯০ সালে প্রথম বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন ধনখড়।
এর পর ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রাজস্থান বিধানসভার সদস্য ছিলেন ধনখড়। কিষানগড় কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি।
তবে রাজনীতিতে আসার ক্ষেত্রে তাঁর ‘অনিচ্ছা’র কথা জানিয়েছিলেন ধনখড়। অথচ সেই তিনিই সাংসদ, বিধায়ক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব সামলানোর পর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক মঞ্চে ধনখড়ের মেন্টর ছিলেন দেবী লাল। ১৯৮৯ সালে বিরোধীদের প্রার্থী হিসাবে ধনখড়কে বেছেছিলেন লাল।
২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে বসার পর থেকেই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন ধনখড়। মমতা সরকারের সঙ্গে নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্ঘাত ঘিরে প্রায়শই সরগরম থাকত রাজনীতির ময়দান। ‘বিজেপির এজেন্ট’ হয়ে রাজ্যপাল কাজ করছেন বলে সরব হতে দেখা গিয়েছে বাংলার শাসকদলকে।
শেষ দিন পর্যন্ত নবান্ন বনাম রাজভবন সঙ্ঘাতের সাক্ষী থেকে বাংলা। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ধনখড়কে সমর্থন না জানালেও ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল।
আগামী ১১ অগস্ট দেশের উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেবেন ধনখড়।