সম্প্রতি বেঙ্গালুরু শহরের বুকে ভারতের প্রথম ‘সেন্ট্রালাইজড এসি রেলওয়ে টার্মিনাল’ পরিষেবা চালু করা হয়েছে। গঠন ও পরিষেবার ক্ষেত্রে যে কোনও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে তাক লাগিয়ে দিতে পারে বৈয়াপ্পানাহাল্লির এই টার্মিনালটি।
স্যর মোক্ষগুন্দম শ্রীনিবাস শাস্ত্রী বিশ্বেশ্বরায়ার নামে এই রেলওয়ে টার্মিনালের নামকরণ করা হয়েছে ‘স্যর এম বিশ্বশ্বরায়া টার্মিনাল’ (সংক্ষেপে, এসএমভি টার্মিনাল)। মাইসোরের দেওয়ান ছিলেন তিনি। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে বেঙ্গালুরুর উন্নয়নমূলক কাজে তাঁর অবদান অসীম। ১৯৫৫ সালে তাঁকে ‘ভারত রত্ন’ সম্মানে ভূষিত করা হয়।
টার্মিনালের ভিতরে প্রতীক্ষালয়, ভিআইপি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট সবই রয়েছে। ছাদের উপরে রয়েছে সোলার প্যানেল। যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য চলমান সিঁড়ি, লিফট এবং ফুট ওভারব্রিজের ব্যবস্থাও রয়েছে।
চলাচলের জন্য সমান্তরাল ভাবে দুটি ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি করা হয়েছে। দেওয়ালে রয়েছে বেঙ্গালুরুর উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্রের ছবি। সবকটি প্ল্যাটফর্ম এই পথের সঙ্গে যুক্ত।
প্রতিটি দরজায় ‘অটোম্যাটিক লক সিস্টেম’-এর সুবিধা রয়েছে। ভিতরে চারদিকে রয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড।
রেল টার্মিনালে প্রবেশ করার মুহূর্তে চোখে পড়বে স্যর বিশ্বেশ্বরায়ার একটি মূর্তি। অন্য দিকে রয়েছে এলইডি আলো দিয়ে লেখা ‘আই লাভ বেঙ্গালুরু’। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই টার্মিনাল তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২১-এর মার্চে এসে তা সম্পূর্ণ সমাপ্ত হয়।
এই অত্যাধুনিক প্রকল্পের জন্য মোট ৩১৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বেঙ্গালুরু সিটি এবং যশবন্তপুর রেলওয়ে টার্মিনালের পর শহরের তৃতীয় প্রধান রেল টার্মিনাল এটি। ৬ জুন অর্থাৎ সোমবার এই টার্মিনাল থেকে রেল চলাচল শুরু হয়েছে।
ক্রান্তিবীর সঙ্গোলি রায়ান্না (কেএসআর) এবং যশবন্তপুর রেল স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় সামলাতেই এসএমভি টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়েছে। ৪২০০ বর্গমিটার ক্ষেত্রের টার্মিনালে মোট সাতটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।
১৫ মিটার চওড়া ও ৬০০ মিটার দীর্ঘ প্ল্যাটফর্মগুলি একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। এই রেল টার্মিনাল দিয়ে বানসওয়াডি-এর্নাকুলম এক্সপ্রেস ট্রেন ও কোছুভেলি হমসফর এক্সপ্রেস ট্রেন-সহ মোট ৫০টি ট্রেন চলবে।
টার্মিনালের সামনেই গাড়ি পার্ক করার বিশাল জায়গা রয়েছে। একসঙ্গে এখানে প্রায় ২৫০টি গাড়ি, ২০টি ক্যাব ট্যাক্সি, ৯০০টি বাইক, ৫০টি অটো-রিকশা এবং ৫টি বাস দাঁড়াতে পারে।
ট্রেন যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে টার্মিনালের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও বাড়ানো হচ্ছে, যাতে যাত্রীরা খুব সহজেই টার্মিনালে পৌঁছতে পারেন।