চলতি বছরে শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ এবং ‘জওয়ান’ ছবি দু’টিই বক্স অফিসে এক হাজার কোটি টাকার ক্লাবে নাম লিখিয়েছে। বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করতে যে ছবিগুলি সফল হয়েছে সেগুলির মধ্যে অধিকাংশই অ্যাকশন ঘরানার। তবে এই ধারণার বিপরীত খাতে বয়ে গিয়েছে অন্য একটি হিন্দি ছবি।
নব্বইয়ের দশকে ফ্যামিলি ড্রামা ঘরানার ছবি পরিচালনা করে বলিপাড়ার প্রথম সারির পরিচালকদের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেন সুরজ বরজাতিয়া। বলিপাড়া সূত্রে খবর, বিশ্ব জুড়ে বক্স অফিসে ২০০ কোটি টাকার ক্লাবে প্রথম জায়গা করে নেয় সুরজেরই ছবি।
১৯৮৯ সালে সলমন খান এবং ভাগ্যশ্রীকে নিয়ে ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির পরিচালনার মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন সুরজ। রোম্যান্টিক ঘরানার এই ছবি দর্শকের কাছে বহুল প্রশংসা পায়।
‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ মুক্তির পাঁচ বছর পর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সুরজের কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবি ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’। ফ্যামিলি ড্রামা ঘরানার এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন সলমন খান এবং মাধুরী দীক্ষিত।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিটি তৈরি করতে ৬ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন নির্মাতারা।
১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিটি মুক্তির পর শুধুমাত্র ভারতেই ৭২ কোটি টাকার ব্যবসা করে।
সলমন-মাধুরীর এই ছবি মুক্তির পর বিশ্ব জুড়ে ২১০ কোটি টাকার ব্যবসা করে।
১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ভারতে যে ছবিগুলি মুক্তি পেয়েছিল সেগুলির মধ্যে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ প্রথম ভারতীয় ছবি যা বক্স অফিসে ২০০ কোটি টাকার ক্লাবে জায়গা করে নেয়।
তবে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবির যাত্রাপথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। মুক্তির সময় এই ছবিতে মোট ১৪টি গান ব্যবহার করা হয়েছিল। ছবিমুক্তির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দর্শক অভিযোগ করতে থাকেন যে অতিরিক্ত গানের ব্যবহারে ছবির দৈর্ঘ্য অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।
দর্শকের একাংশের দাবি ছিল, ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে এত গানের ব্যবহার করা হয়েছে যে তা গল্পের তাল কেটেছে। এমনকি দর্শকের মনোযোগেও ছেদ পড়ছে গানের কারণে।
ছবি দেখার পর দর্শকের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে কাঁচি চালানোর সিদ্ধান্ত নেন সুরজ। ছবি থেকে কাটছাঁট করে দু’টি গান বাদ দেওয়া হয়।
দু’টি গান বাদ দেওয়ার পর আবার নতুন করে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। মুক্তির পর দর্শকের পছন্দও হয় সেই ছবি।
নব্বইয়ের দশকে সর্বোচ্চ গানযুক্ত হিন্দি ছবির তালিকায় শীর্ষে নাম ছিল ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’-এর। ১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মিঠুন চক্রবর্তীর ‘ডিস্কো ডান্সার’ প্রথম হিন্দি ছবি যা বক্স অফিসে ১০০ কোটি টাকার ক্লাবে নাম লেখায়।
‘ডিস্কো ডান্সার’-এর পর ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ বিশ্ব জুড়ে ইতিহাস করে। তার ঠিক এক বছর পর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’। শাহরুখের এই ছবি মুক্তির পর আরও ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হয় বলিপাড়াকে।
২০০৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় আমির খানের ছবি ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিটি। সেই সময় বিশ্ব জুড়ে বক্স অফিসে ৩০০ কোটি টাকার ক্লাবে নাম লেখায় আমিরের ছবি।