যুদ্ধ এবং অতিমারি প্রভাব ফেলেছে বিশ্বের ধনকুবেরদের কোষাগারে। বিলিওনেয়ার বা শতকোটিপতিদের সংখ্যা কমেছে, কমেছে তাঁদের হাতে থাকা মোট সম্পদের পরিমাণও। তবে এই পরিস্থিতিতেও ভারতে ১০০ কোটি ডলারের মালিকের সংখ্যা ১৬৬ জন। বুধবার ২০২২ সালের ‘বিশ্ব ধনী তালিকা’ প্রকাশ করেছে অর্থনীতি বিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস। তাতেই প্রকাশ্যে এসেছে ধনকুবের সংক্রান্ত এই তথ্য।
২০২২ সালের শুরুতেই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে। ফোর্বসের তালিকা বলছে, এ বছর বিশ্বের শতকোটিপতিদের মোট সংখ্যা ২৬৬৮ জন। যা আগের বছরের তুলনায় অনেকটাই কম। গত বছর আরও ৮৭ জন শতকোটিপতি ছিলেন এই তালিকায়।
শতকোটিপতিদের মোট সম্পদের পরিমাণও কমেছে। ২০২২ সালে শতকোটিপতিদের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২.৭ লক্ষ কোটি ডলার। যা ২০২১ সালের থেকে অন্তত ৪০ হাজার কোটি ডলার কম।
তবু এর মধ্যেও এক হাজার ধনকুবের আরও ধনী হয়েছেন। যুদ্ধ পরিস্থিতি, অতিমারী তাঁদের উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। গত বছরের তুলনায় আরও সম্পদ বেড়েছে তাঁদের। শতকোটিপতিদের তালিকায় নতুন সংযোজিতও হয়েছেন ২৩৬ জন শতকোটিপতি।
শীর্ষস্থানে সামান্য বদল হয়েছে। গত বছরের বিশ্বের ধনীশ্রেষ্ঠ জেফ বেজোসকে টপকে টেসলার প্রধান এলন মাস্ক ছিনিয়ে নিয়েছেন প্রথম স্থান। তাঁর সম্পদের পরিমাণ আগের থেকে বেড়েছে। এলন এখন ২১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের মালিক।
দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে রয়েছেন অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস, বার্নার্ড আর্নল্ট ও তাঁর পরিবার এবং মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। জেফ ছাড়া এঁদের প্রত্যেকেরই সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্য দিকে, গত বছর এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে থাকা ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের সম্পদ অনকটাই কমেছে। নতুন তালিকায় পঞ্চদশ স্থানে রয়েছেন তিনি।
তবে ‘বিশ্ব ধনী তালিকা’-য় ভারতীয়দের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তালিকায় আদানি-অম্বানীদের সঙ্গে রয়েছেন আরও ১৬৬ জন ভারতীয় শতকোটিপতি। যদিও প্রথম দশে রয়েছেন এক জনই। তিনি মুকেশ অম্বানী।
‘বিশ্ব ধনী তালিকা’-য় দশম স্থানে রয়েছে অম্বানীর নাম। যুদ্ধের বাজারেও তাঁর সম্পদ বেড়ে হয়েছে ন’হাজার ৭০ কোটি ডলার।
গৌতম আদানিরও সম্পদ বেড়েছে। আদানি এবং তাঁর পরিবারের সম্পদের মূল্য বেড়ে হয়েছে ন’হাজার কোটি ডলার। বিশ্ব ধনী তালিকায় একাদশ স্থানে রয়েছেন আদানিরা। অম্বানীর ঠিক পরেই। তবে এর পর ভারতীয় শতকোটিপতিরা রয়েছেন তালিকার অনেকটা পিছনে।
এইচসিএলের শিব নাদার রয়েছেন ৪৭তম স্থানে। তাঁর মোট সম্পদ ২৮৭০ কোটি ডলার। গত এক বছরে তাঁর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে।
সেরাম ইনস্টিটিউটের সাইরাস পুনাওয়ালা রয়েছেন তালিকায় ৫৬ নম্বরে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ২৪৩০ কোটি ডলার।
ভারতীয় ধনকুবের রাধাকিষণ দামানি ৮১তম শতকোটিপতি। মোট সম্পদ দু’হাজার কোটি ডলার।
৮৯তম স্থানে রয়েছেন ইস্পাত শিল্পপতি লক্ষ্মী মিত্তল। মোট সম্পদ ১৭৯০ কোটি ডলার।
প্রথম একশোর মধ্যে আর একটিF ভারতীয় পরিবার রয়েছে। সাবিত্রী জিন্দলের পরিবার। তাঁদেরও সম্পদ বেড়েছে। গত এক বছরে মোট সম্পদের পরিমাণ হয়েছে ১৭৭০ কোটি ডলার।
এক নজরে দেখলে, বিশ্বের অন্য ধনকুবেরদের তুলনায় ভারতীয়রা ক্ষতির মুখ কম দেখেছেন। ১০০-র মধ্যে থাকা কোনও ভারতীয় শতকোটিপতিরই সম্পদ কমেনি। বরং গত এক বছরে বেড়েছে।