আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির অভিযোগে দিন কয়েক আগে ভোপালের এক রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসার (আরটিও) সন্তোষ পালের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান ইকনমিক অফেন্সেস উইং (ইওডব্লিউ)-এর আধিকারিকেরা।
সন্তোষ পাল নিজে আরটিও আধিকারিক। তাঁর স্ত্রী রেখা পালও একই অফিসে করণিকের কাজ করেন। শুধু স্ত্রী নন, আরটিওতে কাজ করেন সন্তোষের বহু আত্মীয়ও।
সন্তোষের তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ১৬ লক্ষ টাকা এবং প্রচুর গয়না উদ্ধার করেন ইওডব্লিউ আধিকারিকরা।
গত দু’বছর ধরে সন্তোষের গতিবিধি এবং তাঁর সম্পত্তির উপর নজর রাখছিল ইওডব্লিউ। দু’বছরে তাঁর সম্পত্তি আয়ের তুলনায় ৬৫০ গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইওডব্লিউ।
মাসে ৬৫ হাজার টাকা বেতন পান সন্তোষ। এই বেতনে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী কী ভাবে হলেন, তা নজরে আসে ইওডব্লিউ-র।
ইওডব্লিউ তদন্তে নামতেই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসে। ইওডব্লিউ সূত্রে খবর, স্থাবর এবং অস্থাবর মিলিয়ে সন্তোষের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকা।
জবলপুরের শতাব্দীপুরমে ১০ হাজার বর্গ ফুটের দু’টি বাড়ি রয়েছে সন্তোষের।
এ ছাড়াও গৌরীঘাটে ১,২৪৭ বর্গফুট এবং ১,১৫০ বর্গফুটের দু’টি বাড়ি এবং আরও দু’টি বাড়ি রয়েছে তাঁর নামে। ইওডব্লিউ তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালালেও, তারা জানিয়েছে যে, সন্তোষের মোট ছয়টি বাড়ি রয়েছে। তাঁর নামে রয়েছে দুটি দোকানও।
ইওডব্লিউ আরও জানিয়েছে যে, সন্তোষের একটি খামারবাড়ি রয়েছে। সেই খামারবাড়ির আয়তন প্রায় দেড় একর। একটি স্করপিও এবং আই ২০ গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়াও দু’টি মোটরবাইক রয়েছে।
সন্তোষ তাঁর বিলাসবহুল বাড়িতে ছোটখাটো একটি সিনেমাহলও বানিয়েছেন। কোনও বিলাসবহুল সিনেমাহলের সঙ্গে এর ফারাক খুঁজে পাওয়া ভার বলে দাবি ইওডব্লিউ-র অফিসারদের। সেই সিনেমাহলে রয়েছে দামি সোফা থেকে বিনোদনের যাবতীয় আয়োজন।
শুধু সিনেমাহলই নয়, তিনতলা বিলাসবহুল বাড়িতে রয়েছে লিফট, পাঁচ হাজার বর্গফুটের বিশাল বাগান, সুইমিং পুল এবং কয়েক লক্ষ টাকার ঝাড়বাতি।
আরও চমকের বিষয়, সন্তোষ একটা ছোটখাটো বারও বানিয়েছেন বাড়িতে। সেখানে থরে থরে সাজানো দামি মদ। এ ছাড়াও রয়েছে বিশাল একটি কনফারেন্স হল।
ইওডব্লিউ সূত্রে খবর, সন্তোষ এই বিপুল সম্পত্তি বানিয়েছেন ঘুষের টাকায়। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়েরও বেশ কয়েকটি মামলা রুজু হয়েছে।