দেশে এক কোটিরও বেশি পেনশনভোগী মানুষ আছেন, যাঁরা পেনশন বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ যেমন ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস ইত্যাদির মাধ্যমে তাঁদের বকেয়া পেনশন পান। পেনশনভোগীদের প্রতি বছর নভেম্বর মাসে পেনশন বিতরণকারী কর্তৃপক্ষকে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা করতে হয়। আগে সেই লাইফ সার্টিফিকেটের ফর্ম দেওয়া হত ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিস থেকেই পেনশনভোগীদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা শারীরিক ভাবে সুস্থ নন। সে ক্ষেত্রে এই বয়স্ক মানুষদের কষ্ট লাঘব করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র।
কয়েকটি সহজ পদ্ধতিতে বাড়ি থেকেই এই ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা করতে পারেন পেনশনভোগীরা। প্রয়োজন নেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম তোলার বা জমা দেওয়ার।
কোন পথে এগোলে সহজেই নিজেদের ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে পারবেন পেনশনভোগীরা, দেখে নিন এক নজরে।
প্রথমে গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে ‘আধার ফেস আরডি অ্যাপ’ ডাউনলোড করুন।
এই অ্যাপে জীবন প্রমাণ ফেস অ্যাপ ডাউনলোড করার লিঙ্ক রয়েছে।
প্রদত্ত লিঙ্কে ক্লিক করে https://jeevanpramaan.gov.in-এ গিয়ে জীবন প্রমাণ ফেস অ্যাপটি ডাউনলোড করার অপশন রয়েছে।
তবে সেই অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য আগে ইমেল আইডি দিতে হবে।
ইমেল আইডি দেওয়ার পর ইমেল-এ একটি ওটিপি আসবে। নির্দিষ্ট জায়গায় ওই ওটিপি বসানোর পরই অ্যাপটি নামানো যাবে।
অ্যাপ নামানোর পর সেখানে অনুমোদনের জন্য আধার, ই-মেল আইডি, ফোন নম্বর দিতে হবে। এর পরই ওই এক বার ব্যবহারের অথেন্টিকেশন (ওয়ান টাইম অপারেটর অথেন্টিকেশন) বা অনুমোদন দেওয়া হবে।
এর পর ওই পেনশনভোগী ব্যক্তিকে আবার আধার নম্বর জমা দিয়ে মুখের ছবি স্ক্যান করতে হবে। মুখের ছবি স্ক্যান করার সময় পর্যাপ্ত আলো থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ছবি তোলার সময়ে দু’তিনবার চোখের পলক ফেলাও বাধ্যতামূলক।
মুখের স্ক্যান শেষ হওয়ার পর পেনশন প্রাপকের পরিচয় যাচাই করা বাধ্যতামূলক।
পরিচয় যাচাইয়ের পর অ্যাপেই তৈরি হবে প্রমাণ আইডি এবং ডিজিটাল সার্টিফিকেট।
ডিজিটাল সার্টিফিকেট তৈরি হওয়ার পর সেই সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার লিঙ্ক এসএমএস মারফত মোবাইলে পাঠানো হবে। ওই লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করা যাবে সেই সার্টিফিকেট।
সার্টিফিকেট ডাউনলোডের আগে ১০ সংখ্যার বিরল প্রমাণ আইডি নির্দিষ্ট জায়গায় বসাতে হবে। রোবট নন এটা প্রমাণ করার জন্য দিতে হবে ক্যাপচাও।
নির্দিষ্ট জায়গায় উক্ত তথ্য দেওয়ার পর পেনশনভোগীর ছবি, তারিখ এবং নির্দিষ্ট কিছু তথ্য উল্লেখ করা ডিজিটাল ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ ডাউনলোড করা যাবে।
কী কী প্রয়োজন বাড়িতে বসেই এই লাইফ সার্টিফিকেট তৈরি করতে?
অন্ততপক্ষে ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি তথ্য ভরার জায়গা-সহ একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ফোন থাকতে হবে এক জন পেনশন প্রাপকের কাছে। যার মধ্যে ৫০০ এমবি খালি থাকা জরুরি। প্রয়োজন রয়েছে ইন্টারনেট সংযোগেরও।
ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস বা অন্যান্য যে সব প্রতিষ্ঠানে পেনশন অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার সঙ্গে আধার নম্বর নথিভুক্ত থাকা অত্যাবশ্যক।
খেয়াল রাখতে হবে যে, এক জন পেনশনভোগী শুধু মাত্র নিজের লাইফ সার্টিফিকেটই ডাউনলোড করতে পারবেন।
আধার এবং ১২ সংখ্যার পেনশন পেমেন্ট অর্ডারে একই মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত থাকতে হবে।
লাইফ সার্টিফিকেট তৈরি হলে এক জন পেনশন প্রাপক বাড়ি থেকেই অনলাইনে বা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ওই লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে পারবেন।