মুকেশ অম্বানী। বিশ্বের বিত্তশালীদের তালিকায় প্রথম দিকেই নাম রয়েছে তাঁর। রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান তিনি। অম্বানীদের চেনেন না, ভারতে এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।
মুকেশের বিশাল ধনভান্ডার। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ আকাশছোঁয়া। কিন্তু তাঁর পুত্র-কন্যারাও কম বিত্তশালী নন। মুকেশের কনিষ্ঠ পুত্র অনন্তের সম্পত্তির পরিমাণও বিপুল।
অনন্তের জন্ম ১৯৯৫ সালের ১০ জুলাই। ২৯ বছর বয়সি এই যুবা ইতিমধ্যেই রাশ ধরেছেন রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার।
রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডে, বিশেষ করে শক্তিক্ষেত্রে অনন্তের ভূমিকা তাঁকে ইতিমধ্যেই ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর এক অন্যতম মুখ করে তুলেছে।
রিলায়্যান্স গোষ্ঠীতে অনন্তের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং সবুজ শক্তি (গ্রিন এনার্জি)-সহ রিলায়্যান্সের শক্তিক্ষেত্রের গুরুভার তাঁর উপরেই।
অনন্ত ‘জিয়ো প্ল্যাটফর্ম লিমিটেড’ এবং ‘রিলায়্যান্স রিটেল ভেঞ্চার্স লিমিটেড’-এর পরিচালনা সমিতিরও সদস্য, যা রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর মধ্যে তাঁর প্রভাব আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অনন্তের নেতৃত্বে রিলায়্যান্সের শক্তি ও জ্বালানি ক্ষেত্রের ব্যবসা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস অম্বানীদের।
রিলায়্যান্স গোষ্ঠী থেকে বেতন বাবদ প্রতি বছর ৪.২ কোটি টাকা করে পান অনন্ত। কাছাকাছি বেতন পান তাঁর দিদি ঈশা অম্বানীও।
২০২৪ সালের হিসাবে অনন্তের সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪০০০ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩,৩৫,৭৭০ কোটি টাকা। এর ফলে বাবা, দাদা, দিদির মতো অনন্তও ভারতের অন্যতম বিত্তশালীদের তালিকায় নাম তুলেছেন।
অনন্তের মোট সম্পত্তির সিংহভাগই রিলায়্যান্স গোষ্ঠীতে তাঁর অংশীদারির কারণে পাওয়া।
একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে অনন্তের। মার্সিডিজ় বেন্জ এস-ক্লাস বুলেটপ্রুফ গাড়ি ছাড়াও একাধিক নামীদামি সংস্থার গাড়ি রয়েছে অনন্তের গ্যারাজে। সংগ্রহে রয়েছে বহুমূল্য ঘড়িও। তার মধ্যে রয়েছে ১৮ কোটি টাকার একটি গাড়িও।
ধনকুবের পরিবারে জন্ম নিলেও স্বাস্থ্যের দিক থেকে ছোট থেকেই অনন্তের যাত্রা ছিল কণ্টকপূর্ণ।
ছোটবেলা থেকেই হাঁপানির সমস্যায় ভুগছেন অনন্ত। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রচুর পরিমাণে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেতে হয় তাঁকে। অতিরিক্ত স্টেরয়েড গ্রহণের কারণে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা শুরু হয় অনন্তের।
২০১৭ সাল নাগাদ ১০৮ কেজি ওজন ঝরিয়েছিলেন তিনি। প্রায় দেড় বছরের চেষ্টা এবং পরিশ্রমে একেবারে ভোল বদলে ফেলেছিলেন মুকেশ-পুত্র। ছিপছিপে অনন্তকে দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই।
তবে সেই চেহারা খুব বেশি দিন ধরে রাখতে পারেননি অনন্ত। স্টেরয়েডের কারণে আবার আগের চেহারায় ফিরে গিয়েছেন তিনি।
মা নীতা অম্বানীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে জনহিতকর কাজের জন্যও পরিচিত অনন্ত।
অনন্ত অম্বানীর ব্যক্তিগত জীবনও অনেক দিন ধরে চর্চায় রয়েছে। সম্প্রতি শিল্পপতি বীরেন মার্চেন্টের কন্যা তথা দীর্ঘ দিনের বান্ধবী রাধিকা মার্চেন্টকে বিয়ে করেছেন তিনি।
সম্প্রতি অম্বানীর কনিষ্ঠ-পুত্র অনন্তের বিয়েতে চাঁদের হাট বসেছিল মুম্বইয়ে। ১২ জুলাই মুম্বইয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ধনকুবের মুকেশের কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত অম্বানী। তার রেশ চলেছে অনেক দিন ধরে। তিন দিন ধরে চলা সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ১৪ হাজারেরও বেশি অতিথি। উপস্থিত ছিলেন তাবড় বলি তারকা থেকে শুরু করে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, জনপ্রিয় নেটপ্রভাবীরাও।