ভারতীয় ক্রিকেটে এপ্রিল মাস মানেই আইপিএলের রমরমা। সন্ধ্যা হলেই টিভির সামনে রিমোট নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। ঘরে ঘরে ধোনি, কোহলি, রোহিতদের দলের জন্য গলা ফাটান সমর্থকেরা।
ক্রিকেটারদের রানের নজির, একের পর এক ছক্কা, বোলারের কেরামতি থেকে শুরু করে চিয়ারলিডার— আইপিএল নিয়ে উন্মাদনা কম নয়। দেশ-বিদেশের নামীদামি তারকা খেলোয়াড়দের আইপিএলের মঞ্চে একসঙ্গে দেখা যায়।
আইপিএলে দেশ-বিদেশের এই সমস্ত ক্রিকেটারদের বেতনও থাকে আলোচনার কেন্দ্রে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তাঁদের নিলামের দিকে চোখ রাখেন আগ্রহীরা। কিন্তু বাইশ গজের লড়াইয়ে আসল ছড়ি যাঁদের হাতে, তাঁদের রোজগার কেমন?
ক্রিকেটারেরাই কেবল কোটি কোটি টাকা রোজগার করেন না। আইপিএলের ম্যাচ পরিচালনা করে মোটা টাকা বেতন পান আম্পায়াররাও। তাঁদের সঙ্গে আগে থেকেই চুক্তি করা থাকে আয়োজকদের।
ফিল্ডারদের আউটের আবেদন গ্রাহ্য হবে কি না, বোলার নো বল করছেন কি না, মাঠে কোনও রকম নিয়ম ভাঙা হচ্ছে কি না, খেলার সময় সর্ব ক্ষণ সতর্ক থাকতে হয় আম্পায়ারদের। সব দিকেই থাকে তাঁদের সজাগ দৃষ্টি।
তাই ক্রিকেটের মাঠে আম্পায়ারদের গুরুত্ব খেলোয়াড়দের চেয়ে কম নয়। তাঁদের কাজ অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করা হয়। আইপিএলে এক একটি ম্যাচ পরিচালনা করে অনেক টাকা পান আম্পায়াররা।
আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ারদের দু’টি বিভাগে ভাগ করা হয়। অভিজ্ঞতা, কাজের দক্ষতা অনুযায়ী কয়েক জন আম্পায়ার ‘এলিট’ তকমা পান। বাকিরা থাকেন ‘ডেভেলপমেন্ট’ বা উন্নয়নশীল হিসাবে।
এলিট প্যানেলে যে আম্পায়াররা থাকেন, তাঁরা আইপিএলের একটি ম্যাচ পরিচালনা করে ১ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা পান। এ ছাড়া, প্রতি ম্যাচে তাঁদের উপরি পাওনা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার টাকা।
আম্পায়ারদের থাকা, খাওয়া এবং যাতায়াতের খরচও এই বেতনের মধ্যেই ধরে নেওয়া থাকে। আইপিএলের সব ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এক এক জন আম্পায়ার এই টুর্নামেন্ট থেকে ৪০ লক্ষ টাকা রোজগার করতে পারেন।
গত মরসুমে এলিট প্যানেলে আইপিএলের আম্পায়ারদের বেতন ছিল ম্যাচপ্রতি ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এ বছর বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলিতে এলিট প্যানেলের আম্পায়ারেরাই দায়িত্ব পান।
যে সমস্ত আম্পায়ারের অভিজ্ঞতা কম, যাঁরা প্রশিক্ষণের পর্যায়ে রয়েছেন, তাঁদের ‘ডেভেলপমেন্ট আম্পায়ার’ বলা হয়। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বের ম্যাচগুলিতে তাঁদের সুযোগ দেওয়া হয়।
ডেভেলপমেন্ট আম্পায়াররা আইপিএলের এক একটি ম্যাচ পরিচালনা করে ৫৯ হাজার টাকা বেতন পান। গত মরসুমে তাঁদের বেতন ছিল ম্যাচপ্রতি ৪০ হাজার টাকা। এই আম্পায়াররা প্রতি ম্যাচে নিয়মিত থাকেন না। উপরি আয়ও নেই।
এ ছাড়াও আইপিএলে আম্পায়ারদের আরও কিছু রোজগার রয়েছে। বেশ কিছু বিজ্ঞাপনী সংস্থার পোশাক পরে তাঁদের কাছ থেকে প্রচারের জন্য টাকা পান আম্পায়াররা। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় আইপিএলের ১৪তম মরসুমের কথা।
আইপিএলের ১৪তম মরসুমে স্পনসর হিসাবে ছিল পেটিএম। মরসুমের শেষে সংস্থার তরফে প্রতি আম্পায়ারকে ৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়েছিল। এ বারেও আম্পায়ারদের পোশাকে পেটিএমের নাম রয়েছে।
আইপিএলের বাইরে আইসিসির অন্যান্য টুর্নামেন্টে ম্যাচের ভিত্তিতে আম্পায়ারদের বেতন নির্ধারিত হয়। টি২০ বা এক দিনের ম্যাচের ক্ষেত্রে তাঁদের বেতন এক রকম, আবার পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচের জন্য বেতন কাঠামো আর এক রকম।