নীল ছবির দুনিয়ায় কাজ করে কত টাকা আয় করেছেন মিয়া খালিফা? জানিয়েছিলেন প্রাক্তন পর্ন তারকা নিজেই।
২০১৯ সালের ১২ অগস্ট টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন মিয়া। সেই ভিডিয়োতেই তিনি প্রকাশ করেন নিজের আয়ের কথা। আর সেই আয়ের পরিমাণ শুনে বিশ্বাসই করতে চাননি ব্যবহারকারীরা।
মিয়া নীল ছবিতে অভিনয় করেছেন সর্বসাকুল্যে তিন মাস। তবে ওই কয়েক মাসেই যাবতীয় খ্যাতি বা কুখ্যাতি কুড়িয়েছেন তিনি। পেয়েছেন অজস্র অনুরাগী। তার রেশ এখনও কাটেনি।
মিয়া ওই ভিডিয়োতে জানান, তিনি তাঁর পর্ন ছবিতে অভিনয় করে সব মিলিয়ে ১২ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৪৬ টাকা) আয় করেছেন।
মিয়া বলেন, ‘‘অনেকে মনে করেন, আমি নীল ছবি থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে। কিন্তু তা সত্যি নয়। আমি পর্ন ছবিতে অভিনয় করে ১২ হাজার ডলার আয় করেছিলাম। এর পরে আর কখনও একটি পয়সাও আমি পর্ন তারকা হয়ে আয় করিনি৷ পর্ন ছাড়ার পর অন্য কাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। তবুও আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসি।’’
মিয়া এই দাবি করার পরই হতবাক তাঁর ভক্তকুল। পর্ন ছবিতে কাজ করার সুবাদে যাঁর খ্যাতি জগতজোড়া, তিনি মাত্র এই কটা টাকা আয় করেছেন?
এই ভিডিয়ো দেখে অবাক হয়ে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, অভিনেত্রী সত্যি কথা বলছেন কি না।
মিয়ার টুইটের প্রসঙ্গে পাল্টা টুইট করেছিলেন এক জনপ্রিয় পুরুষ পর্ন তারকাও। তিনি জনি সিন্স। তবে সরাসরি কিছু না বলে মিয়ার আয় নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন জনি।
এক সাক্ষাৎকারে জনি বলেন, “কেউ যদি অন্য প্রযোজনা সংস্থার হয়ে কাজ করেন, তা হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। কেউ যদি অন্য সংস্থার ১২টি পর্ন ছবিতে কাজ করেন, তা হলে তিনি আনুমানিক ১২ হাজার ডলার আয় করবেন। কেউ যদি ৩৬৫টি ছবিতে কাজ করেন, তা হলে তিনি সেই হিসাবে আয় করবেন। সেই জন্য নিজের কাজ নিজেই করা উচিত। নিজে গল্প তৈরি করে নিজে সেই নীল ছবিতে অভিনয় করলে আয় অনেক বেশি। টাকাই জীবন।’’
জনির এই টুইটের পর টুইটারে হাসির রোল ওঠে। অনেক জনির টুইট শেয়ার করেন মজার মজার মন্তব্য করে।
২০১৮ সালে গুগলে অনুরাগীদের অনুসন্ধানের নিরিখে মিয়ার স্থান দ্বিতীয় স্থানে ছিল। অথচ, তিনি ব্লু ফিল্মের জগৎ তার বহু আগেই ছেড়ে এসেছেন।
বছর সাতেক আগে নীল ছবির দুনিয়াকে বিদায় জানিয়েছেন মিয়া। তবে সমাজমাধ্যমে এখনও তাঁর খোঁজ চলে। তিনি আজকাল কী করেন, কার সঙ্গে থাকেন, বিয়ে করেছেন কি না, মিয়াকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই তাঁর অনুরাগীদের।
অতীতকে পিছনে ফেলে মিয়া এখন ফ্যাশন দুনিয়ায় বেশ খ্যাতি পেয়েছেন। ইনস্টাগ্রামে তার অনুরাগীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি।
সমাজমাধ্যমের পাতায় মাঝেমধ্যেই মিয়া নিজের হরেক রকম ছবি শেয়ার করেন। কখনও অভিনব কায়দার পোশাক পরে তো কখনও আবার পোশাক ছাড়াই ক্যামেরবন্দি হন তিনি।
নীল ছবির দুনিয়া ছেড়ে আসার পর তাঁকে সমাজ কী চোখে দেখে? এক সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের উত্তরে মিয়া বলেছিলেন, ‘‘নীল ছবিতে কাজ করার জন্য আমার সম্মান কমে থাকলেও তা নিয়ে আমার কিছু যায়-আসে না। কারণ, তুমি কী কাজ করছ, বা কোন বাড়ি থেকে এসেছ, তা দিয়ে কিছুই প্রমাণিত হয় না।’’
সম্প্রতি মিয়া সমাজমাধ্যমে একগুচ্ছ ছবি পোস্ট করেন। যে ছবি দেখে নেটপাড়ায় ফের ঝড় ওঠে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন সাজে মিয়া ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন। তবে তাঁর শরীরে নেই অন্তর্বাস। কোনও ছবিতে নীল রঙের রাতপোশাকে অন্তর্বাস ছাড়াই নিজস্বী তুলছেন তিনি। কোনও ছবিতে আবার ধূসর রঙের টপ পরেছেন তিনি, বক্ষযুগল স্পষ্ট।
এত সবের মধ্যে নিজেকে ফিট রাখার জন্য নিয়ম করে শরীরচর্চা করেন মিয়া। তাঁর নজরকাড়া ফিটনেসে অনেক অনুরাগীই মুগ্ধ। তবে একটা সময় ছিল, যখন মিয়া তাঁর বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। ওজন কমানোর আগে তাঁকে কেমন দেখতে ছিল, সে ছবি তিনি নিজেই সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছিলেন। মিয়ার সেই ছবি দেখে সত্যি চিনতে পারেননি তাঁর অনুরাগীরা। অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন, কী ভাবে এত ওজন ঝরালেন তিনি?
মিয়া জানিয়েছিলেন, এই পরিবর্তন এক দু’দিনের পরিশ্রমে হয়নি। দীর্ঘ দিনের কঠোর পরিশ্রমের ফল। সপ্তাহে পাঁচ দিন জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতেন তিনি। সেই সঙ্গে কঠোর ডায়েট তো ছিলই। এখনও যে অভ্যাস জারি রেখেছেন তিনি।
অতীত যে তাঁর পিছু ছাড়ে না, তা এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেছিলেন মিয়া। বলেছিলেন, ‘‘নীল ছবির দুনিয়া থেকে বেরিয়ে আসার পর সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে জনসমক্ষে আসতে। লোকে আমার দিকে এমন ভাবে তাকাত যে মনে হত, পোশাক ভেদ করে তারা আমার শরীর দেখছে। খুবই লজ্জা করত। মনে হত, আমার আর কিছুই গোপন নেই। মাউসের এক ক্লিকেই আমার জীবন সকলের সামনে খুলে যায়।’’