কোথাও ধস নেমে রাস্তা বন্ধ। কোথাও আবার সেই রাস্তা রাতারাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। ব্যাপক বর্ষণে ভেসে গিয়েছে বহু রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, শপিং মল। চারিদিকে অসহায়তার ছবি। এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে চিনের হংকং শহরে।
রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে নাজেহাল অবস্থা হংকংয়ের সাধারণ মানুষের। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বন্ধ হয়েছে স্কুল এবং ব্যবসাবাণিজ্য।
হংকংয়ের প্রায় প্রতিটি রাস্তার উপর দিয়েই জলের ধারা বয়ে যাচ্ছে। সমস্ত রাস্তাই যেন নদীতে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে এক ঘণ্টার কিছু ক্ষণ বেশি সময় ধরে জোরালো বৃষ্টিপাত হয়। আর সেই সময়ের মধ্যে ভেসে গিয়েছে হংকং।
হংকংয়ের হাওয়া অফিস বলছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টির গড় পরিমাণ ছিল ১৫৮.১ মিলিমিটার।
হংকংয়ের আবহাওয়া অফিস বলছে, ১৮৮৪ সালের পর থেকে সে শহরে এ রকম তুমুল বৃষ্টিপাত হয়নি।
তবে বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি যে ধেয়ে আসছে, সেই পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল হংকংয়ের আবহাওয়া দফতর। তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চিনের ফুজিয়ান প্রদেশের মধ্যে তৈরি হওয়া নিম্নচাপকেই চরম বৃষ্টিপাতের কারণ হিসাবে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
গত দু’বছরে সে ভাবে ভারী ঝড়বৃষ্টির মুখ দেখেননি হংকংয়ের মানুষ। তাই বৃষ্টির খবরে হংকংয়ের মানুষের মধ্যে খুশির হাওয়া বয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই বৃষ্টি যে ঘরবাড়ি ভাসিয়ে দেবে, তেমনটা কল্পনাও করেনি শহরবাসী।
হংকংয়ের আবহবিদরা বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে মূলত হংকংয়ের প্রধান দ্বীপ কাউলুন এবং শহরের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল প্রচুর বৃষ্টিপাতে ভেসে গিয়েছে।
প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। হংকংয়ের নদীর কাছাকাছি বসবাসকারীদেরও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা এবং মেট্রো স্টেশনগুলি ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অধিকাংশ গাড়িই ডুবে গিয়েছে।
সমাজমাধ্যমে হংকংয়ের দুর্বিষহ অবস্থার যে সব ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কী ভাবে ঝুঁকি নিয়ে বৃষ্টির জলে ভেসে যাওয়া রাস্তার উপর গাড়ি চালানোর চেষ্টা করছেন।
একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, সাধারণ মানুষ কোমর অবধি জলে ডুবে অতি কষ্টে যাতায়াত করছেন। মেট্রো স্টেশনে এসকালেটর এবং সিঁড়ি পর্যন্ত জল উঠে গিয়েছে।
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, হংকংয়ের শাসকদলের নেতা জন লি ভয়াবহ বন্যা নিয়ে ‘খুব উদ্বিগ্ন’ এবং বন্যা পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বন্যা পরিস্থিতির জেরে শুক্রবার বন্ধই ছিল হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ। ঝড়বৃষ্টি চলতে থাকলে শনিবারও তা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।