The First Kiss in Cinema

১৮ সেকেন্ড ঠোঁটে ঠোঁট, বয়কটের সঙ্গে লড়াই! কেমন ছিল সিনেমার ইতিহাসের প্রথম চুম্বনদৃশ্য?

উনিশ শতকের শেষ দিকে আমেরিকাতেই পর্দার চুম্বনের হাতেখড়ি। প্রথম চুম্বনদৃশ্য ছিল ১৮ সেকেন্ড দীর্ঘ। ক্যামেরার সামনে ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলেন আমেরিকান অভিনেতা এবং কানাডিয়ান অভিনেত্রী।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ১৪:১৬
Share:
০১ ১৫

সিনেমা সৃষ্টির একেবারে আদিলগ্নে, যে সময় ক্যামেরা, প্রযুক্তি বর্তমান যুগের মতো উন্নত ছিল না, সেই সময় থেকেই পর্দায় চুম্বনদৃশ্যের প্রবেশ। সাদা-কালো পর্দায় ঠোঁটে ঠোঁট রেখে উনিশ শতকের ইউরোপে যেন বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছিলেন কলাকুশলীরা।

০২ ১৫

সিনেমার ইতিহাসের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, বড়পর্দায় প্রথম চুম্বনের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল ১৮৯৬ সালে। আমেরিকাতেই পর্দার চুম্বনের হাতেখড়ি। চুম্বনদৃশ্যটি দেখা গিয়েছিল ‘দ্য মে ইরউইন কিস্‌’ ছবিতে।

Advertisement
০৩ ১৫

সিনেমায় যৌন দৃশ্যের সূচনাও হয় উনিশ শতকের শেষের দিকেই। ১৮৯৬ সালে ‘দ্য মে ইরউইন কিস্‌’-এর বছরেই মুক্তি পেয়েছিল ফরাসি ছবি ‘লে কৌচের দে লা মারি’। ছবিটিকে বিশ্বের প্রথম পর্নোগ্রাফির আখ্যা দেওয়া হয়।

০৪ ১৫

আমেরিকার প্রথম ফিল্ম স্টুডিয়ো এডিসন। ১৮৯৬ সালের এপ্রিল মাসে ‘দ্য মে ইরউইন কিস্‌’ ছবিটি সেই স্টুডিয়োতে প্রকাশ করা হয়। এই ছবির পরিচালক ছিলেন উইলিয়াম হেইস এবং টমাস এডিসন।

০৫ ১৫

ছবিটিতে চুম্বনদৃশ্য ছিল ১৮ সেকেন্ড দীর্ঘ। ক্যামেরার সামনে শুটিংয়ের স্বার্থে ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলেন আমেরিকান অভিনেতা জন রাইস এবং কানাডিয়ান অভিনেত্রী মে ইরউইন। পর্দায় তাঁদের চরিত্রের নাম ছিল যথাক্রমে বিলি বাইক্স এবং উইডো জোন্স।

০৬ ১৫

তৎকালীন আমেরিকান সমাজ পর্দায় প্রকাশ্যে নরনারীর এই ঘনিষ্ঠতা ভাল চোখে দেখেনি। ছবিটিকে ‘অশ্লীল’ আখ্যা দেওয়া হয়। কড়া ভাষায় এই ছবির সমালোচনা করে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

০৭ ১৫

সে সময় প্রকাশ্যে চুম্বন পশ্চিমি সমাজেও ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রকাশ্যে চুম্বন করলে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানোর রীতিও প্রচলিত ছিল কোথাও কোথাও। ফলে ‘দ্য মে ইরউইন কিস্’ প্রকাশিত হলে চারদিকে সাড়া পড়ে যায়।

০৮ ১৫

রোমান ক্যাথলিক চার্চের রোষের মুখে পড়েন ছবির নির্মাতা এবং চুম্বনদৃশ্যের কলাকুশলীরা। এই ছবিতে সেন্সরের মাধ্যমে চুম্বনদৃশ্যে কাটছাঁট করে সামাজিক সংস্কারের ডাক দিয়েছিলেন চার্চ কর্তৃপক্ষ।

০৯ ১৫

নির্মাতাদের বিরুদ্ধে সে সময় পুলিশে অভিযোগ দায়েরের দাবিও তুলেছিলেন কেউ কেউ। তবে ‘দ্য মে ইরউইন কিস্‌’ যেন পাশ্চাত্য সমাজে রক্ষণশীলতার আগল খুলে দিয়েছিল। সমালোচনা সত্ত্বেও এর পর থেকে ধীরে ধীরে অন্য ছবিতে ছোট, বড় চুম্বনদৃশ্যের অবতারণা করা হয়।

১০ ১৫

১৮৯৮ সালে সিনেমার জগতে আর এক বিপ্লব ঘটে। ‘সামথিং গুড— নিগ্রো কিস্’ নামক একটি নির্বাক চলচ্চিত্রে প্রথম বার পর্দায় একে অপরকে চুম্বন করেন কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতারা। আফ্রিকান আমেরিকান সেই কলাকুশলীদের নাম ছিল সেন্ট সাটেল এবং গার্টি ব্রাউন।

১১ ১৫

তবে এই ছবিটির অস্তিত্ব দীর্ঘ দিন পর্যন্ত অজানা ছিল। ২০১৭ সালে ছবিটি পুনরুদ্ধার করে আমেরিকার জাতীয় ফিল্ম রেজিস্ট্রিতে নথিভুক্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে, চুম্বনের দৃশ্য ছিল ২৯ সেকেন্ড দীর্ঘ।

১২ ১৫

হলিউডে চুম্বনদৃশ্যের শুটিংয়ে আর এক মাইলস্টোন হয়ে আছে ‘উইংস্’। ১৯২৭ সালে আমেরিকায় মুক্তি পায় এই ছবি। প্রথম সমলিঙ্গ চুম্বনের জন্য এই ছবি স্মরণীয় হয়ে আছে। পর্দায় একে অপরের ঠোঁটে ঠোঁট রাখেন অভিনেতা রিচার্ড আর্লেন এবং চার্লস রজার।

১৩ ১৫

‘উইংস’ ছবিটিও নির্বাক। নির্বাক চলচ্চিত্রের জগতে অভিনেতাদের এই সাহসী প্রদর্শন ছবিটিকে অস্কারের মঞ্চে সম্মান এনে দিয়েছিল। একমাত্র নির্বাক ছবি হিসাবে অস্কার জেতে ‘উইংস’।

১৪ ১৫

সময় যত এগিয়েছে, প্রযুক্তির সুবাদে আরও উন্নত, আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সিনেমার চুম্বনদৃশ্য। শুধু ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ানো নয়, ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ঠোঁটের খেলা, চোখে চোখে রোমান্টিক ভাবের বিনিময়, ক্যামেরার সামনেই নায়ক-নায়িকার দীর্ঘ চুম্বনে ডুব দেওয়া— চুম্বনদৃশ্যে একঘেয়েমি কাটিয়ে নতুন স্বাদ এনে দিয়েছে দর্শকদের।

১৫ ১৫

নানা ভাবে, নানা কোণ থেকে এখন অভিনেতাদের ঘনিষ্ঠতা ক্যামেরাবন্দি করা যায় সহজেই। সমাজও প্রকাশ্যে চুম্বনের প্রতি অনেক স্বচ্ছন্দ, অনেক উদার হয়েছে। এক সময় সিনেমার পর্দায় যে চুম্বন দেখে হইহই করে তেড়ে এসেছিল সমাজ, সেই চুম্বনই এখন দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহের দিকে টানে মৌমাছির মৌচাকের মতো। তবে চুম্বনদৃশ্যে অন্য ইন্ডাস্ট্রির থেকে বরাবর এগিয়ে হলিউড। সেখানেই প্রথম চুম্বনের হাতেখড়ি।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement