পাকিস্তানে ‘ভারতীয় খাবারের’ পসরা। সেখানে জড়ো হচ্ছেন বহু মানুষ। খাচ্ছেন পেট পুরে। সে দোকান তৈরি করেছে এক হিন্দু পরিবার। ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ভিডিয়ো।
করাচির ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে রয়েছে সেই ভারতীয় খাবারের দোকান। সেটি চালান কবিতা নামে এক তরুণী এবং তাঁর পরিবার। দোকানটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আমিষ এবং নিরামিষ, দুই রকম খাবারই পাওয়া যায় কবিতার দোকানে। তবে তাঁর হাতে তৈরি পাও ভাজি, বড়া পাও, ডাল সামোসা সব থেকে জনপ্রিয়।
কবিতার দোকানের খাবারের ভিডিয়ো তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন কারামত খান নামে এক জন। তাঁকে অনেক পথচলতি মানুষই জানিয়েছেন, কবিতার খাবারের স্বাদ নাকি দারুণ। এক বার খেলে ভোলা যায় না।
কারামত নিজেও কবিতার দোকানে বড়া পাও খেয়ে মজেছেন। জানিয়েছেন, এর আগে তিনি কখনও এই খাবার খাননি। তবে এর স্বাদ দারুণ। ভিডিয়োয় কবিতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘বড়া পাও মুম্বইয়ে বিখ্যাত। এখন করাচির লোকজনও পছন্দ করছেন।’’
কবিতা ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ‘কবিতাদিদি’ নামে পরিচিত তিনি। শুধু নিরামিষ নয়, দারুণ সব কবাবও তৈরি করেন কবিতা।
রমজান মাসে করাচিতে কবিতার দোকানের সামনে ভিড় জমে যায়। বহু মানুষ রোজার উপোস ভাঙেন কবিতার তৈরি পাও ভাজি আর বড়া পাও খেয়ে। ক্রেতাদের সামলাতে হিমশিম খান তরুণী।
কেন হঠাৎ এই পেশায়? কবিতা নিজেই এক ভ্লগারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, খাবারের প্রতি অনুরক্ত তিনি। যেমন খেতে ভালবাসেন, তেমন খাওয়াতেও ভালবাসেন। সেই কারণেই ভেবেছিলেন, খাবারের দোকান খুললে কেমন হয়!
কবিতা ভেবেছিলেন, নিজে যে সব পদ খেতে ভালবাসেন, সেগুলি অন্যদেরও খাওয়াবেন। তাঁর ইচ্ছায় সমর্থন জানিয়েছিল পরিবার। দোকানে তাঁর হাতে হাতে সাহায্য করেন মা-সহ পরিবারের অন্য সদস্যেরা।
বেশ কিছু চেনা খাবারকে নতুন মোড়কে পরিবেশন করেন কবিতা। যেমন সামোসা বা শিঙাড়া। তাঁর দোকানে ওই পদের নাম ‘ডাল সামোসা’। শিঙাড়ার সঙ্গে ঘরে তৈরি ডাল মিশিয়ে পরিবেশন করেন কবিতা। ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয় সেই খাবার।
এমনিতে পাকিস্তানের বাসিন্দারা আমিষ খাবার পছন্দ করেন। তবে কবিতা জানিয়েছেন, তাঁর হাতে তৈরি নিরামিষ পদও ক্রেতারা পছন্দ করেন। নিমেষে শেষ হয়ে যায় সব পদ।
এখন নিজের তৈরি রান্না নিয়ে আরও গবেষণা করে চলেছেন কবিতা। চান, ক্রেতাদের পাতে নতুন নতুন পদ তুলে দিতে। তবে বড়া পাও, পাও ভাজি কোনও দিন তালিকা থেকে বাদ দেবেন না, জানিয়ে দিয়েছেন কবিতা।
কবিতার ভিডিয়ো দেখে সমাজমাধ্যমে বহু মানুষ প্রশংসা করেছেন। করাচির অনেকেই তাঁর দোকানে খেতে যাওয়ার জন্য মানুষজনকে আর্জি জানিয়েছেন। বহু মানুষ তাতে সাড়াও দিয়েছেন।
সমাজমাধ্যমের এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘আমি আপ্লুত। কারণ আমি নিজেও এক জন গুজরাতি মুহাজির।’’ অন্য এক জন ভিডিয়ো দেখে লিখেছেন, ‘‘আমি করাচির বাসিন্দা। ঠিকানাটা বলুন। শীঘ্রই খেতে যাব।’’