চেঙ্গিস খান ওরফে তেমুজিন ছিলেন মোঙ্গল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং এই সাম্রাজ্যের প্রথম ‘গ্রেট খান (সম্রাট)’। তিনি ছিলেন বিপুল সম্পত্তির মালিক। হিসাব বলছে, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে চেঙ্গিসের মোট যে সম্পত্তি ছিল, তার বর্তমান মূল্য ১২০ লক্ষ কোটি ডলার। অর্থাৎ বিশ্বের বর্তমান ধনকুবেরদের মোট সম্পত্তি মিলিয়েও এত সম্পত্তি হবে না।
চেঙ্গিস বর্তমানে বেঁচে থাকলে তিনিই পেতেন বিশ্বের সেরা ধনী ব্যক্তির তকমা।
হিসাব অনুযায়ী, চেঙ্গিসের মোট সম্পত্তির বর্তমান মূল্য বিশ্বের সমস্ত কোম্পানির মোট সম্পদের তিন গুণ। এমনকি, তাঁর মোট সম্পত্তি দিয়ে কিনে নেওয়া যেত আমেরিকাকেও।
ইতিহাসে চেঙ্গিসকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এবং ধনী শাসকদের মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হয়।
শাসনকালে এশিয়া ও ইউরোপ জুড়ে প্রায় ১৫০ লক্ষ বর্গমাইলেরও বেশি জায়গা জয় করেন চেঙ্গিস। এর মধ্যে শুধু চিনেই ছিল ৯০ লক্ষ বর্গমাইল জমি।
তবে চেঙ্গিসের কাছে কী এমন সম্পত্তি ছিল, যা তাঁকে এত ধনী বানিয়েছিল?
চেঙ্গিস যে পরিমাণ জমির মালিক ছিলেন, তার বর্তমান বাজারমূল্য ৯০ লক্ষ কোটি ডলার।
চেঙ্গিসের স্বর্ণভান্ডারে থাকা সোনার পরিমাণও ছিল বিপুল। তাঁর কোষাগারে দু’লক্ষ টনেরও বেশি পরিমাণ সোনা ছিল।
চেঙ্গিসের আমানতে থাকা সোনার বর্তমান মূল্য ১০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
চিন এবং মঙ্গোলিয়ায় প্রচুর পরিমাণ মূল্যবান ধাতুর খনি সমৃদ্ধ ভূমিও জয় করেছিলেন চেঙ্গিস। এমনকি, চেঙ্গিসের মালিকাধীন জমিতে ইউরেনিয়ামের খনিও ছিল।
প্রচুর পরিমাণ হিরে ছিল চেঙ্গিসের মণিভান্ডারে। চেঙ্গিসের কাছে থাকা মোট হিরের বর্তমান মূল্য ১ লক্ষ কোটি ডলার।
নিজের শাসনকালে বহু দুর্গ নির্মাণ করেন চেঙ্গিস। পাশাপাশি বহু দুর্গ তিনি জয়ও করেছিলেন।
চেঙ্গিসের কাছে থাকা মোট দুর্গের সংখ্যা ছিল ১০৫০।
চেঙ্গিসের আস্তাবলে মোট ২ লক্ষ ৭০ হাজার ঘোড়া ছিল। এক-একটি ঘোড়ার বর্তমান মূল্য চার লক্ষ টাকারও বেশি।
চেঙ্গিস খান ১১৬২ সালে মঙ্গোলিয়ার বর্তমান রাজধানী উলানবাতারের কাছে একটি জায়গায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ছিলেন ইয়েসুগেই এবং ইয়েসুগেইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী হোয়েলুনের প্রথম সন্তান।
জীবদ্দশায় চেঙ্গিস মোট ছ’জনকে বিয়ে করেন। চেঙ্গিসের ছয় স্ত্রীর নাম বোর্তে, ইয়েসুজেন, ইয়েসুই, খুলন খাতুন, মৃগে খাতুন, জুয়েরবিসু এবং ইবাকা বেকি। সন্তান-সন্ততির সংখ্যাও ছিল অনেক।
চেঙ্গিস ১২২৭ সালের অগস্ট মাসে পশ্চিম জিয়ার রাজধানী ইনচুয়ানের পতনের সময় মারা যান। উলুগ খান এবং জেনারেল জাফর খানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় চেঙ্গিসের।
মারা যাওয়ার অনেক আগেই ছেলে ওগেদি খানকে নিজের উত্তরসূরি হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন চেঙ্গিস।
মৃত্যুর সময় প্রায় দেড় লক্ষ সৈন্যের একটি বাহিনী তিনি রেখে গিয়েছিলেন। চেঙ্গিসের মৃত্যুর পর সমস্ত সম্পত্তি তাঁর সন্তানদের মধ্যে ভাগ করা হয়।