ভারতের শিয়রে জি২০। রাত পোহালেই নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে বসবে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসর। উপস্থিত থাকবেন বাইডেন, মাকরঁ, সুনকের মতো তাবড় তাবড় বিশ্বনেতা।
জি২০ সম্মেলনের জন্য ঢেলে সাজানো হয়েছে রাজধানীকে। সাজানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের প্রধান এবং তাঁদের প্রতিনিধি দল যে বিলাসবহুল হোটেলগুলিতে থাকবেন, সেই হোটেলগুলিও। হোটেলগুলির চারদিকে কড়া নজরও রেখেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।
রাষ্ট্রনেতা এবং বিদেশি প্রতিনিধিদের থাকার জন্য দিল্লি এবং গুরুগ্রামের ১১টি হোটেলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কামরা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তবে দিল্লির হোটেলগুলিতে মূলত থাকবেন রাষ্ট্রপ্রধানরা।
জি২০ দেশগুলির পাশাপাশি অতিথি দেশের রাষ্ট্রনেতাদেরও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বিলাসবহুল হোটেলগুলিতে।
সেই হোটেলগুলিকে রাষ্ট্রপ্রধানদের খাবার পরিবেশন করা হবে এক বিশেষ উপায়ে। যা তুলে ধরবে ভারতীয় ঐতিহ্য এবং গৌরবময় সংস্কৃতিকে!
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, অতিথিদের খানাপিনার জন্য কী বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন আইটিসি মৌর্য শেরাটন, তাজ প্যালেস, শাংরি-লা হোটেল কর্তৃপক্ষ।
হোটেলগুলিতে রাষ্ট্রনেতা এবং বিদেশি প্রতিনিধিদের খাবার পরিবেশন করা হবে এক অনন্য উপায়ে। খাবার পরিবেশন করা হবে রুপো এবং সোনায় মোড়ানো ধাতবপাত্রে। এই পাত্রগুলিতে ভারতের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ঝলক থাকবে বলেও সূত্রের খবর।
এই পাত্রগুলি প্রস্তুতকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই ১১টি হোটেলে সেই বহুমূল্য পাত্রগুলি পাঠিয়ে দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র সঙ্গে কথা বলার সময়, ওই সংস্থার মালিক রাজীব এবং তাঁর ছেলে জানিয়েছেন, তিন প্রজন্ম ধরে তাঁরা এই পাত্রগুলি তৈরি করছেন।
বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে ভারতীয় ঐতিহ্যের পরিচয় করানোই তাঁদের মূল লক্ষ্য বলে রাজীব জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, সোনা এবং রুপোর পাত্রগুলি জয়পুর, উদয়পুর, বারাণসী, কর্ণাটক-সহ বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পের নিদর্শন বহন করে, যা ভারতের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। অনেক পাত্রে জাতীয় পাখি ময়ূরের নকশাও রয়েছে।
বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য যে পাত্রগুলি বিভিন্ন হোটেলে পৌঁছনো হয়েছে, তার থিম ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। সেগুলি বিশেষ নিরাপত্তার সঙ্গে ইতিমধ্যেই হোটেলগুলিতে পাঠানো হয়েছে বলে রাজীব জানিয়েছেন।
রাজীব জানিয়েছেন, প্রতিটি পাত্র তৈরির পর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার জন্য সেগুলি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল।
এই বাসনগুলির নকশা প্রতিটি হোটেলের নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। ‘মহারাজা থালি’র জন্য আলাদা লবণ এবং মরিচের রুপোর পাত্রও পাঠানো হয়েছে হোটেলগুলিতে।
রাজীব জানিয়েছেন, আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের সময়ও তিনি তাঁদের সংস্থার তৈরি পাত্রেই খাবার খেয়েছিলেন। ওবামা পাত্রগুলি দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়ে যান যে, কয়েকটি পাত্র তিনি তাঁর সঙ্গে আমেরিকা নিয়ে গিয়েছিলেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিলাসবহুল হোটেলগুলিতে বিদেশি অতিথিদের জন্য বিশেষ খানাপিনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কার কোন ধরনের খাবার পছন্দ, তা মাথায় রেখেই তৈরি করা হবে বিভিন্ন পদ। সেই সব পদ পরিবেশন করা হবে সেই সব সোনা-রুপোর পাত্রে।