কথায় আছে, ‘পড়াশোনা করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে’। কঠোর অধ্যবসায় করেছেন। তার সুফলও হাতেনাতে পেয়েছেন তাঁরা। তাঁদের রুপোলি পর্দায় দেখা যায় না। তা সত্ত্বেও তাঁদের তারকা দ্যুতি নেহাত কম নয়! সমাজমাধ্যমে এই ললনাদের নিয়ে রোজই চর্চা চলে। সেলুলয়েডের নক্ষত্রদের মতোই তাঁদের ঘিরেও কৌতূহলের অন্ত নেই। তাঁরা দেশের হাল আমলের মহিলা আইএএস অফিসার।
আইএএস হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়! এ এক সাধনার মতোই। আর পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর আইএএস হিসাবে কাজ করাও মুখের কথা নয়। তাঁদের কাঁধে রয়েছে বিশাল দায়িত্ব। কাজটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজ ক্ষেত্রে তাঁরা প্রত্যেকেই সফল। তাঁদের সেই সাফল্যের কাহিনি অনেককেই প্রেরণা জোগায়। আর এখানেই তাঁরা প্রত্যেকে তারকা হয়ে উঠেছেন। এমনই কয়েক জন মহিলা আইএএস অফিসারের কথা এখানে তুলে ধরা হল।
দেশের মহিলা আইএএসদের মধ্যে যাঁর নাম ঘিরে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়েছে সাম্প্রতিককালে, তিনি হলেন টিনা দাবি। ২০১৫ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় শীর্ষ স্থান দখল করেছিলেন টিনা। প্রথম বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেই সাফল্য। তার পর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
তবে ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী হওয়ার থেকেও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশি চর্চায় থেকেছেন টিনা। নয়াদিল্লিতে আইএএস উত্তীর্ণদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গিয়ে মনের মানুষকে পেয়েছিলেন টিনা। তাঁর নাম আথহার আমির খান।
২০১৫ সালে টিনার সঙ্গেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন আমির। পরীক্ষায় টিনা প্রথম হয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় হয়েছিলেন আমির। নয়াদিল্লির ওই অনুষ্ঠানে তাঁদের আলাপ হয়। সেই আলাপ প্রেমে গড়ায়। ২০১৮ সালে বিয়ে করেন তাঁরা। টিনা এবং আমিরের বিয়ে ঘিরে সেই সময় জোর চর্চা চলেছিল। তবে সেই বিয়ে টেকেনি। ২০২১ সালে তাঁরা আইনি বিচ্ছেদ সারেন।
গত বছর আরও এক আইএএসের সঙ্গে বিয়ে সেরেছেন টিনা। তাঁর নাম প্রদীপ গাওয়ান্ডে। বর্তমানে রাজস্থানের জয়সলমেরের জেলাশাসক হিসাবে কর্মরত টিনা।
দিদির দেখানো পথেই এগিয়েছেন টিনার বোন রিয়া দাবি। তিনিও আইএএস অফিসার হিসাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন। ২০২০ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসে সফল হন রিয়া। পরীক্ষায় ১৫ র্যাঙ্ক করেন। জনপ্রিয়তার নিরিখে অবশ্য এখনও দিদিকে ছাপাতে পারেননি রিয়া।
টিনার মতোই দেশের আরও এক তরুণী প্রথম বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসে সফল হন। তিনি ঐশ্বর্যা শেরন। রাজস্থানের চুরু জেলার বাসিন্দা ঐশ্বর্যা অবশ্য কেরিয়ার শুরু করেছিলেন এক জন মডেল হিসাবে।
২০১৪ সালে একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছিলেন ঐশ্বর্যা। তার পর থেকে গ্ল্যামার দুনিয়ায় সাফল্যের স্বাদ পেতে থাকেন ঐশ্বর্যা। ২০১৫ সালে ঐশ্বর্যার মাথায় ওঠে ‘মিস দিল্লি’র খেতাব। পরের বছর, অর্থাৎ, ২০১৬ সালে ভারত সুন্দরীর প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেছিলেন তিনি। একাধিক ফ্যাশন শোয়ের র্যাম্পেও হাঁটেন তিনি।
তবে এত কিছুর পরও তাঁর আসল লক্ষ্য ছিল এক জন আইএএস অফিসার হওয়া। সেই লক্ষ্যপূরণে শান দিতেই মডেলিং কেরিয়ারকে বিসর্জন দেন ঐশ্বর্যা। শুরু করে দেন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি।
২০১৯ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৯৩ র্যাঙ্ক করেন ঐশ্বর্যা। মডেল থেকে হয়ে যান আইএএস অফিসার। ঐশ্বর্যার এই কাহিনি অনেকের কাছেই প্রেরণা।
প্রথম বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেই বাজিমাত করেছেন সৃষ্টি জয়ন্ত দেশমুখ। ২০১৮ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি।
টিনা, ঐশ্বর্যাদের মতো সৃষ্টির জনপ্রিয়তাও নেহাত কম নয়। সমাজমাধ্যমে সৃষ্টিকে নিয়ে একাধিক ভিডিয়ো বানিয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা। এমনকি, সৃষ্টির ইউপিএসসি পরীক্ষার ইন্টারভিউ পর্বের ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে দেখা গিয়েছে। যা দেখে মজেছেন অনেকেই।
টিনার মতোই আইএএসকে বিয়ে করেছেন সৃষ্টি। তাঁর স্বামী আইএএস নাগার্জুন গৌড়া। ২০২২ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। এই আইএএস দম্পতির নানা ছবি ঘিরে রোজই চর্চা চলে সমাজমাধ্যমে।
আইএএস হিসাবে চর্চা বাড়িয়েছেন পরী বিষ্ণোইও। ২০১৯ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হন আজমেঢ়ের এই তরুণী। পরীক্ষায় ৩০ র্যাঙ্ক করেছিলেন তিনি। সমাজমাধ্যমে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও অনেক। আইএএস হওয়ার স্বপ্নপূরণের কৃতিত্ব নিজের মাকেই দেন পরী।
টিনা, ঐশ্বর্যাদের থেকে প্রায় দু’দশক আগে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন স্মিতা সবরওয়াল। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তিনি। যার ছাপ রেখেছেন আগামী দিনেও।
২০০০ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান দখল করেছিলেন স্মিতা। তাঁর আইএএস হওয়ার কাহিনিও অনেকের কাছে প্রেরণা।