কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে রবিবার মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্স। লিয়োনেল মেসি বনাম কিলিয়ান এমবাপের বহু প্রতীক্ষিত দ্বৈরথ দেখতে চলেছে ফুটবল বিশ্ব।
দু’জনেই ফুটবল জগতের তারকা। মেসিকে সর্বকালের সেরা বলে মনে করেন কেউ কেউ। আবার মাত্র ২৩ বছর বয়সে পায়ের জাদুতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এমবাপেও। পেলের সঙ্গে তুলনা চলছে। অনেকের মতে, মেসি-রোনাল্ডো যুগের পর, ফুটবল বিশ্বের শাসন এ বার তাঁর হাতেই যাচ্ছে।
বিশ্বকাপ ফাইনালে কাতারের লুসেইল স্টেডিয়ামে বল গড়ানোর আগে এক ঝলকে ফিরে দেখা যাক দুই দলের দুই ১০ নম্বর জার্সির অতীত পরিসংখ্যান।
অতীতে দেশের জার্সিতে কিংবা ক্লাবের হয়ে একাধিক বার মুখোমুখি হয়েছেন মেসি এবং এমবাপে। মোট ৩ বার তাঁদের দ্বৈরথ দেখেছে ফুটবল বিশ্ব।
সেই পরিসংখ্যান কিন্তু ফাইনালের আগে এগিয়ে রাখছে ফরাসি তারকাকেই। সম্মুখসমরে মেসিকে কার্যত বলে বলে গোল দিয়েছেন এমবাপে।
বার্সেলোনা ক্লাবে খেলার সময় এমবাপের বিপক্ষে মোট ২ বার খেলেছেন এলএম১০। ২০২০-২১ ইউএফএ চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ২ বার মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা-পিএসজি।
প্রথম ম্যাচটিতে প্রথম গোলটি করেছিলেন মেসি স্বয়ং। কিন্তু মাঠে তার পর শুরু হয় এমবাপের দাপট। তিনি হ্যাটট্রিক করেন। খেলার ফলাফল দাঁড়ায় পিএসজির পক্ষে ৪-১।
দ্বিতীয় ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। বার্সেলোনা এবং পিএসজি-র হয়ে একটি করে গোল করেছিলেন যথাক্রমে মেসি এবং এমবাপে। দু’টি ম্যাচ মিলিয়ে ফলাফল দাঁড়ায় বার্সেলোনা ২, পিএসজি ৫।
এর পর ক্লাব ফুটবলে মেসি, এমবাপেকে মুখোমুখি দেখা যায়নি। কারণ তাঁরা একই ক্লাবে খেলতে শুরু করেন। ২০২১ সালের অগস্ট মাসে এমবাপের ক্লাব পিএসজি-তে যোগ দেন মেসি।
তার পরেও অবশ্য এক বার একে অপরের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন মেসি এবং এমবাপে। শেষ বার তাঁদের মুখোমুখি দেখা গিয়েছে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে। রাশিয়ায় শেষ আটের লড়াইয়ে খেলেছিল আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স।
সে ম্যাচেও এমবাপে শেষ হাসি হাসেন। খেলার ফলাফল দাঁড়ায় ফ্রান্সের পক্ষে ৪-৩। মেসিকে একটিও গোল করতে দেখা যায়নি রাশিয়া বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে।
দুই তারকার দ্বৈরথে এমবাপের মোট গোলসংখ্যা ৬ (পিএসজি-র জার্সিতে ৪ এবং ফ্রান্সের জার্সিতে ২)। অন্য দিকে এমবাপের বিপরীতে খেলতে নেমে মেসি এখনও পর্যন্ত করেছেন ২টি গোল (বার্সেলোনার জার্সিতে ২, আর্জেন্টিনার জার্সিতে ০)।
তবে ইতিহাস যাই বলুক, কাতার বিশ্বকাপের অঙ্ক অন্য। এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বকাপে গোলের দৌড়ে সমানে সমানে একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছেন মেসি এবং এমবাপে। সোনার বুটের দৌড়ে এগিয়ে মেসি।
চলতি বিশ্বকাপে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন মেসি। ইতিমধ্যে তাঁর ৫টি গোল করা হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ৩টি অ্যাসিস্ট। অর্থাৎ, তাঁর দেওয়া পাস থেকে ৩টি গোল হয়েছে।
এমবাপের গোলসংখ্যাও ৫। তবে গোলের ঠিকানা লেখা পাস দেওয়ায় খানিক পিছিয়ে ফ্রান্সের এই স্ট্রাইকার। এমবাপের পাস থেকে এখনও পর্যন্ত ২টি গোল হয়েছে।
ফাইনালে দেশের হয়ে লড়াইয়ের পাশাপাশি দুই তারকার সোনার বুটের লড়াইও দেখা যাবে। যাঁর গোল বেশি হবে, তিনি পাবেন বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা এই সম্মান।
মেসি সেমিফাইনালের পরই জানিয়ে দিয়েছেন, রবিবারের ফাইনালই হবে দেশের হয়ে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। শেষ বারের মতো কি ঝলসে উঠবেন এলএম১০? না কি তাঁর মুখের গ্রাস কেড়ে নেবেন তাঁর চেয়ে ১২ বছরের ছোট ক্লাব-সতীর্থ? উত্তর আর কয়েক ঘণ্টায়।