আমেরিকায় পড়তে যাওয়া এক ভারতীয় ছাত্রীর ব্যাপারে খুঁটিনাটি জানতে চাইছে এফবিআই।
ছাত্রীর বয়স ২৯। নাম ময়ূষি ভগত। বছর কয়েক আগে প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন তিনি। হঠাৎই এক দিন উধাও হয়ে যান।
আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সেই ময়ূষির ব্যাপারেই তথ্য পেতে এখন মরিয়া।
যেনতেনপ্রকারে তাঁর ব্যাপারে দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করতে মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করেছে তারা।
এফবিআই জানিয়েছে ময়ূষি এখন কোথায়, সে ব্যাপারে বিশদ তথ্য দিলে তথ্য প্রদানকারীকে ১০ হাজার ডলার পুরস্কার হিসাবে দেবে তারা। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকার সমান।
কিন্তু এক জন নিখোঁজ ভারতীয় ছাত্রীর জন্য এত অর্থ কেন খরচ করতে চায় আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা?
ময়ূষি উধাও হয়েছিলেন বছর চারেক আগে। তাঁকে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল শেষ বার দেখেছিলেন তাঁর প্রতিবেশীরা।
নিউ ইয়র্কে পড়াশোনা করলেও ময়ূষি থাকতেন নিউ জার্সির একটি অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তাঁকে সেই অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই একটি কালো টি-শার্ট এবং একটি রংচঙে পাজামা পরে বাইরে বেরোতে দেখেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তার পর আর ময়ূষির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২০১৯ সালের ১ মে ময়ূষির পরিবার তাঁর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন জার্সি সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টে। তার পর সাড়ে চার বছর কেটে গেলেও ছাত্রী নিখোঁজ রহস্যের কোনও কিনারা হয়নি।
সম্প্রতি সেই তদন্তেরই দায়িত্ব নিয়েছে এফবিআই। এ ব্যাপারে জার্সি সিটি পুলিশের সাহায্য নেওয়ার পাশাপাশি জনগণেরও সাহায্য চেয়েছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
গত জুলাই মাসেই ময়ূষির নাম এফবিআই নথিভুক্ত করেছে তাদের নিজস্ব নিখোঁজ তালিকায়। ওয়েবসাইটের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ পেজে তাঁর ছবি পোস্ট করে জনতার সাহায্য চেয়ে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছে তারা।
কিন্তু কে এই ময়ূষি? পুলিশের রেকর্ড বলছে ১৯৯৪ সালে ভারতেই জন্ম এই তরুণীর। ২০১৬ সালে এফ ওয়ান স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে তিনি আমেরিকায় যান। ভর্তি হন নিউ ইয়র্ক ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে।
শ্যামলা রঙের দীর্ঘাঙ্গি ময়ূষির উচ্চতা সাধারণ ভারতীয় মেয়েদের থেকে অনেকটাই বেশি— ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। তার চোখের মণি বাদামি রঙের। চুল কালো।
ইংরেজি, হিন্দি এবং উর্দু ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন ময়ূষি। তাঁর বন্ধুরা জানিয়েছেন, গত তিন বছরে আমেরিকায় থাকাকালীন নিউ জার্সি এবং দক্ষিণ প্লেনফিল্ডে বেশ কিছু বন্ধুবান্ধবও হয়েছিল তাঁর।
এ হেন ময়ূষির নাম এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড পেজে উঠল কি শুধু চার বছর ধরে নিখোঁজ থাকার জন্য? তা না হলে ভারতীয় ছাত্রীকে নিয়ে এত দিন পরে এফবিআইয়ের সক্রিয়তা কেন? কারণ খুঁজতে গিয়ে ক্রমশই ঘনাচ্ছে ময়ূষি অন্তর্ধান রহস্য।