নীলছবি বা ‘পর্ন’ দেখা অনেকেরই পছন্দের। শরীরে বিশেষ উত্তেজনা পেতে মানুষ এই ধরনের ছবি দেখেন। তবে এই ছবিগুলির শুটিংয়ের নেপথ্যে কী চলে, তা কেউই দেখতে পান না। যে কাহিনি অনেক সময়ই মজা বা সুখের হয় না। চরম বেদনার পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েও যেতে হয় কুশীলবদের। ছবি দেখে মানুষ কামোন্মাদনা লাভ করেন। কিন্তু নেপথ্যকাহিনি জানলে শিউরে উঠতে হয়। সেই যন্ত্রণা প্রকাশ্যে আনলেন পরিচালক। দেখালেন, শুধু অর্থ উপার্যনের জন্য কী না করতে হয় ওঁদের।
পর্ন ছবির নেপথ্য অভিজ্ঞতা চাক্ষুষ করেন পরিচালক এবং অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে ছবির সেটে থাকা সদস্যেরা।
একই অভিজ্ঞতা রয়েছে ‘অল্ট ইরোটিক’ নামে প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমার প্রযোজনা সংস্থার সিইও তথা পরিচালক ইভান সাইডারম্যানের। গত ২০ বছর ধরে ইভান পর্ন ছবির পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। তিনি সম্প্রতি নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে। যে অভিজ্ঞতা শুনলে শিউরে উঠতে হয়। বলতে ইচ্ছা করে ‘এ এক বীভৎস মজা।’
প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্রের এই নির্মাতা স্বীকার করেছেন, পর্ন সিনেমা বানানোর সময় অনেক রকম অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। এমনকি, শুটিং চলাকালীন এক বিশেষ পরিস্থিতিতে অভিনেতা মলত্যাগ করে ফেলেছেন, এমন ঘটনারও সাক্ষী থাকতে হয়েছে তাঁকে।
ইভানের কাছে এক সংবাদমাধ্যমের তরফে জানতে চাওয়া হয়, পর্ন সিনেমার পরিচালনা করার সময় তাঁকে কী কী মুহূর্তের মুখোমুখি হতে হয়েছে? এর পরই নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন তিনি।
ইভান যখন প্রথম পর্ন ছবির সঙ্গে যুক্ত হন, তখন পর্ন ছবি দেখার জন্য কোনও অর্থ দিতে হত না।
তিনি জানান, এক দিন সিনেমার সেটে এক পর্ন তারকা তাঁর প্রেমিককে নিয়ে আসেন। তবে তখনও তিনি পরিচালনার কাজে হাত দেননি। এক জন সাধারণ সদস্য হিসাবে কাজ করছিলেন। কী ভাবে অভিনয় করতে হবে, তা তাঁদের বোঝাচ্ছিলেন পরিচালক। বোঝানোর সময় নিজের পরনের প্যান্টও পরিচালক খুলে ফেলেন।
কিছু ক্ষণ পরই হঠাৎ করে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়। সবাই গিয়ে দেখেন ওই পরিচালককে মারতে উদ্যত হয়েছেন পর্ন তারকার প্রেমিক! বিশালাকায় ওই প্রেমিককে দেখে যথেষ্ট ভয়ও পান ওই পরিচালক। প্রেমিকের দাবি ছিল, অভিনয় বোঝানোর নামে যৌনসুখ পেতে চাইছিলেন ওই পরিচালক। তাই আসল অভিনেতাদের না পাঠিয়ে তিনি নিজে ওই কাজ করছিলেন!
সাধারণত পর্ন তারকাদের সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে শুটিংয়ের সেটে নিয়ে যাওয়ার এক্তিয়ার থাকে না। তবে এ ক্ষেত্রে পরিচালক এই অনুমতি দিয়ে নিজেই বিপদে পড়েন। পরিচালক প্রেমিকটিকে অনেক বোঝান যে, তিনি সত্যি সত্যিই তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে সঙ্গম করেননি। শুধু অভিনয় করছিলেন। তবে অনেক বোঝানোর পরও ওই প্রেমিককে শান্ত করা যায়নি।
তবে পরে অবশ্য ওই পর্ন তারকাকে তাঁর প্রেমিকের ব্যবহারের ফল ভুগতে হয়েছিল। এই ঘটনার পর পরই ওই পর্ন তারকার চাকরি যায়। তাঁকে ওই সিনেমার শুটিং থেকেও বাদ দেওয়া হয়।
ইভান আরও জানান, এর পর ২০০৬ সালে তাঁকে আরও এক উদ্ভট ঘটনার সাক্ষী হতে হয়। সেই সময় পর্ন ছবি বানায় এমন অন্য একটি প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে তিনি কাজ করছিলেন। সেই সংস্থার এক অনুষ্ঠান চলাকালীন তিনি দেখেন, এক পর্ন তারকা নিজের অণ্ডকোষে পেরেক গেঁথে রেখেছেন!
ইভান আরও এক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, যা দেখে তাঁর গা ঘিনঘিন করে উঠেছিল। তিনি জানান, বেশ কিছু ছবির শুটিং শৌচালয়ে হয়। তবে সেই শৌচালয়গুলিকে শুটিংয়ের আগে পরিষ্কার করা হয়। সেগুলি এতই পরিষ্কার করা হয় যে, এক জন মানুষ সেখানে বসে খেতে পারবেন বলেও ইভান জানান।
ওই পরিচালক বলেছেন, তিনি এ রকমই একটি ছবি তৈরি করছিলেন, যার শুটিং চলছিল একটি শৌচাগারে। একটি যৌন দৃশ্য করার সময় মহিলা পর্ন তারকা টয়লেট সিট ধরে বসেছিলেন। এই শুটিং চলাকালীন প্রায় সমস্ত সদস্যই শৌচাগারে উপস্থিত ছিলেন।
তবে শুটিংয়ের ওই দৃশ্যের একদম শেষে হঠাৎই ওই পর্ন তারকা সঙ্গম দৃশ্যকে বেশি উদ্দীপক দেখাতে টয়লেট সিটটি জিভ দিয়ে চেটে দেন। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত সকলেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তবে এই দৃশ্য দেখে ইভানের গা ঘিনঘিন করে ওঠে।
ইভান জানান, একটি পর্ন ছবিতে একটি দৃশ্য চলাকালীন তিনি এক পর্ন তারকাকে মলত্যাগ অবধি করতে দেখেছেন।
আবার অন্য একটি পর্ন ছবি বানানোর সময় ইভান এক পর্ন তারকাকে ইচ্ছে করে বমি করতে দেখেন। সে সময় তাঁর কষ্টে চোখে জল চলে এসেছিল বলেও উল্লেখ করেন ইভান।
ইভানের মন্তব্য, তিনি মানুষ হিসেবে একটু পুরনো ধাঁচের। তাই যখন তিনি এই দৃশ্যগুলি দেখেন, তখন তিনি অবাক হয়ে যান। কখনও কখনও বিরক্তও হন। কিন্তু এক জন স্রষ্টা হিসেবে তাঁর কাজ ভাল পর্ন ছবি তৈরি করা। তাই তিনি কোনও দিকে নজর না দিয়ে চুপচাপ নিজের কাজ করে যান বলেও উল্লেখ করেছন। এখনও পর্যন্ত তিনি ৪৮৫টি পর্ন ছবি পরিচালনা করেছেন।
ইভানের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটও আছে। তাঁর জীবন এবং কাজ বিভিন্ন পর্ন অ্যাওয়ার্ড শোতে দেখানো হয়েছে। প্লেবয় টিভির ‘কিকি’স আমেরিকান অ্যাডভেঞ্চার’ নামক একটি রিয়েলিটি শোতে তিনি অংশগ্রহণ করেন৷
পর্ন তারকা বাগদত্তা মিশা মন্টানার সঙ্গে মিলে ইভান একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালান। পর্ন ছবি নিয়ে ইভান একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করেছেন।