বয়স মাত্র ১১ বছর। এই বয়সেই কোটিপতি খুদে। তা-ও একেবারে নিজের চেষ্টায়, নিজের রোজগারে। এতটাই রোজগার করেছে সেই মেয়ে যে, ১৫ বছর বয়সেই নাকি অবসর নিতে পারে। তার পর ফের মন দিতে পারে পড়াশোনায়। নিজের টাকা দিয়ে কী করে সেই মেয়ে? কী ভাবেই বা হল এত ধনী?
১১ বছরের এই কোটিপতির নাম পিক্সি কার্টিস। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। ওর বয়সি আর পাঁচ জন স্কুলছাত্রীর থেকে ও কিন্তু একেবারেই আলাদা। কম বয়সেই স্কুল, বইপত্র ছেড়েছে। মন দিয়েছে নিজের ব্যবসায়। আর সেই ব্যবসা করেই মাসে এখন তার রোজগার লক্ষ লক্ষ পাউন্ড।
পিক্সির মায়ের নাম রক্সি জাসেঙ্কো। পেশায় তিনি পাবলিসিস্ট। মেয়ের ব্যবসার প্রচারেও নাকি সাহায্য করেন মা। পিক্সি, বাবা, মা, ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন সিডনির একটি বিশাল অ্যাপার্টমেন্টে।
২০২১ সালে মা আর মেয়ে রঙিন খেলনা তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি শুরু করে। রাতারাতি বিখ্যাত হয় তাদের খেলনা।
সেই খেলনা ধীরে ধীরে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, যে প্রতি মাসে এখন পিক্সি রোজগার করে ১ লক্ষ ১০ হাজার পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক কোটি ১১ লক্ষ টাকারও বেশি। রক্সি যদিও ২০১৪ সাল থেকেই অনলাইনে বিভিন্ন ব্যবসা করে থাকেন।
পিক্সি এখন খেলনার পাশাপাশি চুলের সাজপোশাকও তৈরি করে বিক্রি করে। বেশির ভাগটাই অনলাইনে। পিক্সির চুলের সাজপোশাকের ব্র্যান্ডের নাম পিক্সি বাও। আর খেলনার ব্র্যান্ডের নাম পিক্সি ফিজেডস। যদিও খেলনার থেকে এখন চুলের সাজপোশাকের ব্যবসাতেই বেশি নজর দেন পিক্সি।
১১ বছর বয়স। গাড়ি চালানোর শংসাপত্র পায়নি সে। তবে ইতিমধ্যে কিনে ফেলেছে মার্সিডিজ়। দাম ৪৩ হাজার পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৩ লক্ষ টাকা।
এখানেই শেষ নয়, পিক্সি নিজের রোজগারের টাকা খরচ করে কেনাকাটাতেই। তার অন্যতম শখ হল নামী বিপণির দামি জিনিসপত্র কেনা। সমাজমাধ্যমে সেই কেনাকাটার ফিরিস্তিও দেয় পিক্সি। আর তা দেখেন কয়েক লক্ষ ব্যবহারকারী। সমাজমাধ্যমে পিক্সির অনুগামীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৬ হাজার।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা শেষ ভিডিয়োতে পিক্সি জানিয়েছে, শেষ রবিবার কী কী কেনাকাটা করেছে। বয়স কম হলেও পিক্সির প্রসাধনী সামগ্রি দারুণ পছন্দ। এ সবের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করে সে। সম্প্রতি সে কিনেছে ঠোঁটে দেওয়ার ইঞ্জেকশন, ব্রোঞ্জিং স্টিক।
ঘরের জন্য নামী বিপণির মোমবাতিও কিনেছে পিক্সি। এর এক একটির দাম ৬৪ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৬ হাজার টাকা। শুনে অনেক সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীর চোখ কপালে উঠেছে। যদিও পিক্সি এ সবে কান দেয় না। সে নিজের কেনাকাটা করে লাখ লাখ টাকা উড়িয়ে দেয় প্রায় প্রতি সপ্তাহেই।
মোমবাতির পাশাপাশি একটা জুতোও কিনেছে সে। দাম ১৫৫ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা।
পিক্সির এই কেনাকাটার বহর দেখে সমাজমাধ্যমে অনেকেই বিরক্ত। অনেকেই আবার টিপ্পনী কেটেছেন। লিখেছেন, ‘‘এই বয়সে এত মেকআপের দরকার পড়ে কেন?’’ অন্য জন আবার লিখেছেন, ‘‘নিজের রোজগারের টাকায় ওর যা ইচ্ছা, ও তা-ই করবে। কার কী বলার থাকতে পারে?’’
পিক্সিও এ সবে খুব একটা কান দেয় না। সে চলে নিজের খেয়ালে। দু’হাতে টাকা রোজগার করে। তার পর সেই টাকা খরচ করে নিজের পছন্দের জিনিস কিনে। পিক্সির এক ভাই রয়েছে। তাকে মাঝেমধ্যেই খেলনা কিনে দেয় পিক্সি।
তবে একটা বিষয়ে সে নিশ্চিত। ১৫ বছরে অবসর নেবে কাজ থেকে, ব্যবসা থেকে। তার পর আবার মন দেবে পড়াশোনায়। আবার পিঠে ব্যাগ নিয়ে স্কুল যাবে। শেষ করবে স্কুলের পড়াশোনা।