গুনতে গুনতে হল বেলা। বেলা পেরিয়ে হয়ে গেল রাত, আবার রাত পেরিয়ে দিন। অক্লান্ত পরিশ্রমে অবশেষে উদ্ধার হল মোট ৩০০ কোটি টাকা।
বুধবার ওড়িশা এবং ঝাড়খন্ডে বৌধ ডিস্টিলারিজ় প্রাইভেট লিমিটেড-এর কারখানায় তল্লাশি চালায় আয়কর দপ্তর। সেখানেই টাকার পরিমাণ দেখে কার্যত ভিড়মি খান আয়কর কর্তারাই। শুরু হয় গোনা। এত টাকা গুনতে গিয়ে বিকল হয়ে যায় আয়কর দপ্তরের টাকা গোনার যন্ত্রটিও।
সাময়িক বিরতি দিয়ে পুনরায় শুরু হয় টাকা গোনার কাজ। আর সেই কাজ শেষ হয় শুক্রবারে।
৫০…১০০..১৫০! এক দিনে ১৫০ কোটি। তার পরেও কত টাকা রয়েছে তা জানতে আরও এক দিন সময় নিয়েছিলেন আয়কর কর্তারা। দু’দিন ধরে টানা তল্লাশি চালিয়ে ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের মদ কারখানা থেকে অবশেষে উদ্ধার হল মোট ৩০০ কোটি টাকা।
বুধবার পর্যন্ত জানা গিয়েছিল, ১৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু তার পরেও গোনা থামেনি। টাকা গোনার যন্ত্রগুলি বিকল হয়ে যাওয়ায় সাময়িক থমকে গিয়েছিল কাজ।
আয়কর দফতর সূত্রে খবর, আবার যন্ত্র আনিয়ে গোনার কাজ চালু করা হয়। বৃহস্পতিবার সারা দিন ধরে সেই টাকা গোনার কাজ শেষে জানা গিয়েছে, মোট ৩০০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
পশ্চিম ওড়িশার সবচেয়ে বড় মদ প্রস্তুতকারক কারখানায় বুধবার হানা দেয় আয়কর দফতর। কোনও রকম বিল, ভাউচার ছাড়াই ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় মদ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল বৌধ ডিস্টিলারিজ়ের বিরুদ্ধে।
আয়কর দফতর সূত্রে খবর, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হিসাবের গরমিল ধরা পড়েছে। আয় এবং ব্যয়ের হিসাবে বিস্তর ফারাক ধরা পড়েছে।
ওড়িশায় মদের যে সব কারখানায় তল্লাশি চালানো হয়েছে, সেই সব কারখানার সঙ্গে বিজু জনতা দলের (বিজেডি) বিধায়ক যোগেশ সিংহের ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সুন্দরগড়ের বিজেপি বিধায়ক কুসুম তেতে।
বিজেপি বিধায়কের দাবি, “সুন্দরগড়ে মদ কারখানাটি বিজেডি বিধায়ক যোগেশ সিংহের মায়ের নামে রয়েছে। বিধায়কের কাছে এই কারখানা থেকে নিয়মিত টাকা যেত।”
যদিও বিজেডি বিধায়ক সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাল্টা তাঁর দাবি, এই সংস্থার মালিকের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে তাঁদের। যে ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।