Kim Jong Un

খাবার নেই, দারিদ্র চরমে! দেশের খাদ্যসঙ্কট নিয়ে মুখ খুললেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম

গত কয়েক দশক ধরে খাদ্যের ঘাটতিজনিত সমস্যার মুখোমুখি উত্তর কোরিয়া। নব্বইয়ের দশকে মারাত্মক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার পর থেকে সেই সমস্যার শুরু।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৩৬
Share:
০১ ২০

বড়সড় বিপদের মুখোমুখি উত্তর কোরিয়া। চরম খাদ্যসঙ্কটের মুখে পড়েছে সে দেশ। কিম জং উনের দেশে খাদ্যে ঘাটতিও দেখা গিয়েছে। আর তা নিয়ে চিন্তায় ব্যাকুল সে দেশের একনায়ক।

০২ ২০

সাধারণ মানুষকে খাবারের মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা ‘গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন খোদ কিম।

Advertisement
০৩ ২০

পাশাপাশি, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য তাঁর সরকার নতুন নতুন উপায় খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে বলেও জানিয়েছেন কিম।

০৪ ২০

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ‘কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ় এজেন্সি’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে দেশের ক্ষমতাসীন দল ‘ওয়ার্কার্স পার্টি অফ কোরিয়া’র দলীয় বৈঠকে কিম এই মন্তব্য করেন।

০৫ ২০

মঙ্গলবার এবং বুধবার পলিটব্যুরোর অষ্টম কেন্দ্রীয় কমিটির ১৯তম বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই খাদ্যের ঘাটতি নিয়ে ওই মন্তব্য করেন কিম।

০৬ ২০

গত কয়েক দশক ধরে খাদ্যের ঘাটতিজনিত সমস্যার মুখোমুখি উত্তর কোরিয়া। নব্বইয়ের দশকে মারাত্মক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার পর থেকেই সমস্যার শুরু। এর পর থেকে একাধিক বার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সে দেশের খাদ্যসমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

০৭ ২০

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে চিনের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে একাধিক চুক্তির কারণে উত্তর কোরিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে খাদ্য পরিস্থিতি ‘এখনও খারাপ’ বলে গত বছর মন্তব্য করেন কিমদের প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার এক মন্ত্রী।

০৮ ২০

সেই সমস্যার কথা এ বার তুলে ধরলেন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান নিজেই।

০৯ ২০

সম্প্রতি কিম তাঁর দলকে সারা দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করতে এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের মাধ্যমে শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দূরত্ব কমিয়ে আনার ডাক দিয়েছেন। চলতি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত সুপ্রিম পিপল্‌স অ্যাসেম্বলির বৈঠকে কিম এই ঘোষণা করেন।

১০ ২০

উত্তর কোরিয়ার একনায়ককে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘সামগ্রিক ভাবে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিস্থিতি ভয়াবহ। ভৌগোলিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং জীবনযাত্রার ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলগুলির মধ্যে গুরুতর ভারসাম্যহীনতা এবং বিশাল ব্যবধান রয়েছে।’’

১১ ২০

কিম নাকি আরও বলেছেন যে, ‘‘আমাদের বসে থাকা উচিত নয়। পরিস্থিতি কবে অনুকূল হবে, এই ভেবে অপেক্ষা করাও উচিত নয়। বরং জনগণের স্বার্থে আমাদের দায়িত্বের প্রতি অবিচল থাকতে হবে। আরও নতুন নতুন উপায় এবং চাকরি খুঁজে বার করা উচিত আমাদের।’’

১২ ২০

বর্তমানে ‘নিষিদ্ধ অস্ত্র কর্মসূচি’র জন্য কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে মজে থাকা উত্তর কোরিয়াকে অনেক আগেই একঘরে করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিমের নেতৃত্বাধীন উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে বিরত রাখতে তার উপর জারি করা হয়েছে বহু নিষেধাজ্ঞা।

১৩ ২০

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোভিড অতিমারির আবহেও অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়েছিল কিমের দেশ। সীমান্ত এলাকায় বাণিজ্য কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি এখনও বদলায়নি বলেই দাবি উত্তর কোরিয়ার।

১৪ ২০

পাশাপাশি, রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য অধিকাংশ বড় দেশ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কও ছিন্ন করেছে। আর্থিক ভাবে শোচনীয় অবস্থা দেশের। দেশের মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। চোখ ফেরালেই চারপাশে নজরে পড়ছে দারিদ্র।

১৫ ২০

সেই আবহেই ‘জনদরদি’ হয়ে উঠলেন কিম। দিলেন দেশের জনগণকে খাদ্যসমস্যা থেকে বার করে আনার বার্তা।

১৬ ২০

এর আগেও কিমের ‘জনদরদি’ রূপ ধরা পড়েছিল। সম্প্রতি, কাঁদতেও দেখা গিয়েছিল উত্তর কোরিয়ার একনায়ককে। কোরিয়ান সেন্ট্রাল টেলিভিশন জানিয়েছে, ঘটনাটি গত ডিসেম্বরের, উত্তর কোরিয়ার মায়েদের নিয়ে ডাকা একটি বৈঠকে।

১৭ ২০

পিয়ং ইয়ংয়ে বৈঠকটি ডেকেছিলেন উত্তর কোরিয়ার একনায়কই। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় শিশুদের জন্মহার কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সে ব্যাপারেই দেশের মায়েদের সাহায্য চেয়েছেন কিম।

১৮ ২০

আরও সন্তান প্রসবের আর্জি জানিয়ে বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার মায়েদের কিম বলেন, ‘‘দেশের জন্মহার বৃদ্ধির স্বার্থে মায়েদের সাহায্যের দরকার আমাদের।’’ দেশের শক্তিকে মায়েরাই শক্তিশালী করতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আর একই সঙ্গে এটাও জানাতে চাই যে, আমিও যখন কোনও সমস্যায় পড়ি তখন আমারও প্রথমে মায়ের কথাই মনে পড়ে।’’ এর পরেই কাঁদতে দেখা যায় কিমকে।

১৯ ২০

গত এক বছরের হিসাব বলছে, উত্তর কোরিয়ায় জন্মের হার ১.৮ শতাংশে এসে ঠেকেছে। উত্তর কোরিয়ায় এখন মোট জনসংখ্যা দু’কোটি ৫০ লক্ষ। একই সঙ্গে দীর্ঘ দিন খাদ্যাভাবের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেই দেশ।

২০ ২০

বেঁটেখাটো, গোলগাল চেহারার কিমের ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন উত্তর কোরিয়ার মানুষ। কারণ তাঁরা জানেন, এঁর কোপে পড়লে টিকে থাকা অসম্ভব। এঁর শাসনে থাকলে যে কোনও মুহূর্তে জেলে যেতে হতে পারে। আর এক বার জেলে গেলে ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই। সমালোচকেরা বলেন, হিটলার, মুসোলিনির মতো ভয়ই কিমের দেশশাসনের মন্ত্র। এ বার সেই কিমই দেশের জনগণের খাবারের অধিকার নিয়ে আওয়াজ তুললেন।

সব ছবি: রয়টার্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement