স্বপ্ন দেখা সহজ। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ করা চাট্টিখানি কথা নয়। যাঁরা সেই লক্ষ্যপূরণ করতে পারেন, তাঁরাই তো আসল নায়ক। সাফল্যের এমনই এক কাহিনি তৈরি হয়েছে দিল্লির হেড কনস্টেবলকে ঘিরে। তাঁর জীবনকাহিনি অনেককেই প্রেরণা জোগাবে।
২০২২ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসে সাফল্যের মুখ দেখেছেন রামভজন কুমার। ৬৬৭ র্যাঙ্ক করেন তিনি। তার পর থেকেই বদলে গিয়েছে তাঁর জীবন।
রাজস্থানের দৌসা জেলার বাপি নামে একটি ছোট্ট গ্রামে বাড়ি রামের। সেখানেই তাঁর বড় হয়ে ওঠা।
নিম্ন মধ্যবিত্ত বাড়ির সন্তান ৩৪ বছরের রাম। তাঁর বাবা-মা শ্রমিকের কাজ করতেন। ছোটবেলায় দিনমজুরের কাজ করেছিলেন রামও।
অভাবের সংসারে বড় হয়ে ওঠা তাঁর। তাই পড়াশোনার ফাঁকে সংসার চালানোর জন্য অনেক কৃচ্ছ্রসাধন করতে হয়েছে রামকে।
তবে এত কষ্টের মধ্যেও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি রাম। বরং তা সযত্নে লালন করেছেন। জীবনে চলার পথে যতই সংগ্রাম করতে হোক না কেন, হাল ছাড়েননি কখনও।
২০০৯ সালে পুলিশে কনস্টেবল হিসাবে যোগ দেন রাম। দিল্লি পুলিশে সেই সময় ফিরোজ আলম নামে এক কনস্টেবলের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছিল।
২০১৯ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়ে এসিপি (অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ) হন ফিরোজ। তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন রাম।
রাম স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও এক দিন ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হবেন। কিন্তু সাফল্যের পথ একেবারেই মসৃণ ছিল না।
৭ বার ইউপিএসসিতে বসেছিলেন রাম। কিন্তু সফল হননি। অষ্টম বারের চেষ্টায় শেষমেশ লক্ষ্যপূরণ হয় তাঁর।
কনস্টেবল হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন রাম। দিনে রোজ ৬ ঘণ্টা করে পড়তেন তিনি।
পরীক্ষার আগে প্রস্তুতি নিতে অফিস থেকে ১ মাসের ছুটি নিয়েছিলেন রাম। সেই সময় দিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে পড়তেন তিনি।
কঠোর পরিশ্রম আর ধৈর্যই তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ফিরোজের সাফল্য আমায় অনুপ্রাণিত করেছিল।’’
ফিরোজ একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিলেন। ওই গ্রুপে রাম এবং অন্য ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীরা ছিলেন। রামের কথায়, ‘‘ফিরোজ নিয়মিত সাহায্য করে গিয়েছেন। পরামর্শ দিয়েছেন।’’
রামের এই সাফল্যের কাহিনি প্রকাশ্যে আসতেই, তা জেনে মুগ্ধ হয়েছেন অনেকে। সাফল্য আর ব্যর্থতা নিয়েই জীবন। ব্যর্থ হলে ভেঙে না পড়ে লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে চললেই সাফল্য হওয়া যায়, তা করে দেখিয়েছেন রাম।