হিমালয়ের অন্যতম কঠিন শৃঙ্গ ইন্দ্রাসন ও দেও টিব্বা জয় করে ফিরলেন হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা দেবাশিস মজুমদার।
সোনারপুর আরোহীর সদস্য দেবাশিসের আগামী লক্ষ্য ২০২৫ সালে এভারেস্ট জয়। এর আগে ধৌলাগিরি-মানসালু-এভারেস্ট-লোৎসে এই চার-চারটি আট হাজারি শৃঙ্গ ছুঁয়েছেন হুগলি জেলারই বাসিন্দা পিয়ালি বসাক। এ বার রেকর্ড গড়লেন দেবাশিস।
গত ২৮ মে দেবাশিস-সহ ১১ জনের একটি অভিযাত্রী দল বেরিয়ে ছিল মাউন্ট ইন্দ্রাসন (উচ্চতা ৬২২১ মিটার) এবং মাউন্ট দেও টিব্বা (উচ্চতা ৬০০১ মিটার) জয়ের লক্ষ্যে।
১৫ জুন পীর পঞ্জাল হিমালয়ের সবচেয়ে কঠিন শৃঙ্গ সামিট করে ওই দলের বাকি ছয় জয় অভিযাত্রী। বাকিরা অবশ্য খারাপ আবহাওয়ার জন্য ক্যাম্পেই ফিরে আসেন।
দু’দিন থেকে ১৭ জুন দেও টিব্বা জয় করেন দেবাশিস। শনিবার সকালেই বাড়ি ফেরেন এই অভিযাত্রী দলের সদস্যরা।
বাড়ি ফিরে নিজের অভিজ্ঞতা শোনালেন দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতি খারাপ ছিল। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সবাই যেতে পারেননি। প্রথমে চার দিন তো বেস ক্যাম্পে বসেছিলাম।’’
হলুদ টি-শার্ট পরা দেবাশিসের কথায়, ‘‘২২ ঘণ্টার সামিট মার্চ ছিল। সেই রাতটাই শুধু আবহাওয়া ভাল ছিল। তার পর দিন থেকে যা-তা পরিস্থিতি। স্নো-ফল হয়। কোনও রকম টলতে টলতে সামিট ক্যাম্পে ঢুকি। পরের দিন আবার বেরিয়ে পড়ি।’’
অভিযানে ঝুঁকি ছিল, কিন্তু স্বপ্ন তো এখানেই শেষ নয়। হেসে উঠে দেবাশিস বলেন, ‘‘পর্বতারোহণে প্রচুর পয়সা লাগে। পিয়ালির সঙ্গে পরিচয় আছে। ওর মতো, আমার মতো-প্রত্যেক পর্বতারোহীর স্বপ্ন এভারেস্ট জয়ের। কিন্তু ২৫-৩০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। দেখা যাক কী হয়।’’
আদতে চুঁচুড়া সুইমিং ক্লাবে সাঁতার শেখান দেবাশিস। ২০১৫ সাল থেকে পাহাড়ে চড়ার নেশা জাঁকিয়ে বসে।
পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু হয় পাহাড় চড়া। আগেই বিসি রায় এবং নন্দা ঘুন্টি শৃঙ্গ জয় করেছেন দেবাশিস।
চুঁচুড়ার পর্বতারোহী বাড়ি ফিরে বলেন, ‘‘খুব ‘টেকনিক্যাল পিক’ হল ইন্দ্রাসন। বিপজ্জনকও বটে। প্রতি পদে বিপদ নিয়ে বরফ কেটে এগিয়ে যেতে হয়। তার উপর খারাপ আবহাওয়া।’’
দেবাশিষ জানান, তিন দিন ক্যাম্পে বসে থাকতে হয়েছে তুষার ঝড়ের কারণে। সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, রুদ্রপ্রসাদ হালদার ছিলেন তাঁদের দলে।
কিছু দিন আগেই চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালী বসাক এভারেস্ট জয় করে ফিরেছেন। দেবাশিস বলেন, ‘‘এভারেস্ট জয় প্রত্যেক পর্বতারোহীর কাছে স্বপ্ন।’’
দেবাশিস জানান, সব সামলে নিলে তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং এভারেস্ট জয়।