লোকসভার আগামী বাজেট অধিবেশনে পেশ করা হতে পারে ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষা বিল (ডিজিটাল ডেটা প্রোটেকশন বিল)। এই বিল নিয়ে অনেক দিন ধরেই কাজ করছে কেন্দ্র।
সম্প্রতি এই বিলের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। খসড়া প্রকাশ করে জনগণের কাছ থেকে খসড়া বিল সম্পর্কে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২০২৩-’২৪-এর বাজেট অধিবেশনে এই বিল লোকসভা পেশ করা হতে পারে। বিলটি পাশ হলে ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষা আইন নেটিজেনদের অধিকার এবং কর্তব্যগুলি নির্দিষ্ট করে দেবে।
অন্য দিকে, তথ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইনের সঙ্গেও নে়টি়জেনদের পরিচয় করাবে এই বিল। সূত্রের খবর, এই বিল বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা এবং ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিয়মে বেঁধে দেবে।
কেন্দ্র জানিয়েছিল, ব্যক্তিগত তথ্যগুলিকে সুরক্ষা দিতে এবং তথ্য অপব্যবহার আটকাতে তৎপর হয়েছে সরকার। আর সেই জন্যই এই বিল আনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, এই বিলের মাধ্যমে তথ্য সুরক্ষা নিয়ে মানুষের ধারণা যাতে স্বচ্ছ হয়, সেই চেষ্টাও করা হবে।
কারও কাছ থেকে যে উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া হবে, তা যাতে শুধু সেই উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হয়, সেই বিষয়টিও এই বিল নিশ্চিত করবে।
ব্যক্তিগত তথ্য যাতে সঠিক পদ্ধতিতে এবং আইনসম্মত ভাবে সংগ্রহ করা হয় এবং সেই তথ্য যাঁরা সংগ্রহ করবেন, তাঁরা যেন অন্যকে এই তথ্য পাচার না করেন, সেই ব্যবস্থাও এই বিলের মাধ্যমে করা হবে বলে সূত্রের খবর।
এ সবের পাশাপাশি কোনও মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সঠিক এবং সময়ে সময়ে আপডেট যাতে করে রাখা হয়, সে বিষয়েও যুক্তিসঙ্গত উপায় বার করতে পারে এই বিল।
কোনও মানুষ তাঁর তথ্য কোথাও দেওয়ার পর প্রয়োজন অনুযায়ী যাতে তা মুছে ফেলতে পারেন, সেই অধিকারও থাকবে এই বিলে। এমনটাই সূত্রের খবর৷
তথ্য নিয়ে কারচুপি বা জালিয়াতি করলে বা তথ্য সুরক্ষার নিয়ম লঙ্ঘন করলে ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং ন্যায়সঙ্গত বিচারের ব্যবস্থা করবে এই বিল। ন্যায়সঙ্গত বিচারের জন্য একটি বোর্ড গঠন করার কথাও এই বিলে উল্লেখ থাকবে।
ব্যক্তিগত অধিকার, জনস্বার্থ এবং ব্যবসায় (বিশেষ করে স্টার্টআপ) স্বচ্ছতা আনার জন্য এই বিল প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দীর্ঘ দিন এই বিলের খসড়া পর্যালোচনা করেছিল যৌথ সংসদীয় কমিটি। এর পর ২০২২-এর ৩ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য সুরক্ষা বিল পেশ করার পর তা প্রত্যাহার করেছিল। কেন্দ্রীয় টেলিকম এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, যৌথ সংসদীয় কমিটি মূল খসড়ার পর্যালোচনা করার সময় ৯১ ধারার এই বিলে ৮৮টিতে সংশোধনীর পরামর্শ দিয়েছিল।
এর পরই সরকার মূল বিলটি সাময়িক ভাবে প্রত্যাহারের এবং নতুন করে বিল পেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
নভেম্বরে সরকার ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষা বিলের আরও একটি খসড়া এনেছিল এবং জনসাধারণের পরামর্শের জন্য রেখেছিল।
ভারতে বর্তমানে ৭৬ কোটিরও বেশি মানুষ ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করেন। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই এই সংখ্যা ১২০ কোটিতে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।