China Age Discrimination

চিনে বেকারত্বের ধুম, ৩৫ বছর হলেই নাকি ছেঁটে ফেলা হয় কর্মীদের! কেন ‘অভিশপ্ত’ এই বয়স?

চিনে ৩৫ বা তার বেশি বয়সি যুবক বা যুবতীদের অধিকাংশই বেকার। চাকরির আশায় তাঁরা হন্যে হয়ে ঘোরেন। কিন্তু বেশির ভাগ সংস্থাই তাঁদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ০৮:৫৯
Share:
০১ ২০

৩৫ বছর। যৌবনের শেয দিকে আসা এই বয়সের গায়ে লেগে থাকে মধ্যবয়সের হাতছানি। শুরুর দিকের টলমল কেরিয়ারকে গুছিয়ে নিয়ে এটাই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার বয়স।

০২ ২০

কিন্তু চিনে ৩৫ বছরের গল্পটা আর পাঁচটা দেশের চেয়ে আলাদা। অন্যান্য দেশে ৩৫ বছরকে সংগঠিত কেরিয়ারের সূচনা হিসাবে ধরা হয়। আর চিনে এই বয়সেই চাকরি চলে যায়।

Advertisement
০৩ ২০

চিনে ৩৫ বা তার বেশি বয়সি যুবক বা যুবতীদের অধিকাংশই বেকার। চাকরির আশায় তাঁরা হন্যে হয়ে ঘোরেন। কিন্তু বেশির ভাগ সংস্থাই তাঁদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

০৪ ২০

নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ৩৫ বছর বয়সি এক চিনা যুবক জানিয়েছেন, তিনি প্রতি দিন রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করতেন। পরিশ্রমে কোনও খামতি ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখন বেকারত্ব তাঁকে গ্রাস করেছে।

০৫ ২০

ওই যুবক একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। হঠাৎ তাঁর চাকরি চলে গিয়েছে। সদ্য ৩৫ বছরে পা দিয়েছেন যুবক।

০৬ ২০

চাকরি চলে যাওয়ার পর আরও অনেক সংস্থায় তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি ইন্টারভিউতেও যোগ দেন। কিন্তু কোনও সংস্থাই তাঁকে চাকরিতে ডাকেনি বলে জানান যুবক।

০৭ ২০

সংবাদমাধ্যমে যুবক এ-ও জানান যে, বেশির ভাগ চাকরির বিজ্ঞাপনে যোগ্যতা হিসাবে বয়সের যে মাপকাঠি বেঁধে দেওয়া হয়, তার সঙ্গে যুবকের বয়স মেলে না। বয়সই তাঁর কেরিয়ারের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

০৮ ২০

কিন্তু কেন? কী আছে এই ৩৫ বছরে যে, এর চেয়ে বেশি বয়সি কোনও কর্মীকে সংস্থায় রাখতে চান না কর্তৃপক্ষ? কেনই বা চিনে চলছে এমন অদ্ভুত নিয়ম?

০৯ ২০

চিনের কর্পোরেট দুনিয়ায় ‘কার্স অফ ৩৫’ বা ’৩৫-এর অভিশাপ’ বলে একটি ধারণা প্রচলিত আছে। এই ধারণাই দেশের বেকারত্বের সমস্যার নেপথ্যে অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়।

১০ ২০

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী চিনে ৩৫ বছর বয়সকে অভিশপ্ত বলে মনে করা হয়। এই বয়সে পৌঁছনোর পর নাকি চিনা যুবকেরা কর্মোদ্যম, কর্মক্ষেত্রের উপযুক্ত আবেদন হারিয়ে ফেলেন।

১১ ২০

চিনের বহু সংস্থা এই ধারণার বশবর্তী হয়েই ৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সি কর্মীদের ছেঁটে ফেলে। পরিবর্তে নতুন করে তরুণদের নিয়োগ করা হয়।

১২ ২০

চিনের সমাজে প্রচলিত ধারণা, ৩৫ বছর বয়স হয়ে গেলে যুবকেরা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি ভাল করে নিতে পারেন না। কেরিয়ার হোক বা বিয়ে কিংবা সন্তানগ্রহণ— সব ক্ষেত্রেই এই বয়সের পর নাকি সমস্যায় পড়তে হয়।

১৩ ২০

চিনের কর্মক্ষেত্রে সম্প্রতি এই ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়েছে। যে কারণে যখন তখন ছাঁটাই করা হচ্ছে কর্মচারীদের। কর্মক্ষেত্রে বয়সের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন চিনারা।

১৪ ২০

‘৩৫-এর অভিশাপ’-এর ধারণার সূচনা কোথায়, কেনই বা এই একটি বয়স নিয়ে সকলের এত মাথাব্যথা, তা স্পষ্ট নয়। তবে ৩৫-এ পৌঁছলেই শুরু হয়ে যায় চিনাদের জীবনের নতুন সংগ্রাম।

১৫ ২০

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনা সংস্থাগুলি কোনও কোনও ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থে কমবয়সিদের নিয়োগ করে। অভিজ্ঞতার তুলনায় পরিশ্রমের ক্ষমতায় বেশি জোর দেয় তারা।

১৬ ২০

কমবয়সি অনভিজ্ঞ কর্মীদের বেতনও তুলনামূলক কম হয়। সংস্থার খরচ বাঁচাতেও তাই ৩৫ বছরের গণ্ডিকে কার্যকরী বলে মনে করা হয়।

১৭ ২০

এক দিকে যেমন চিনের তরুণ প্রজন্ম বেকারত্বের আশঙ্কায় ভুগছেন, তেমনই তারা সংসার পাততেও অনাগ্রহী। বিয়ের প্রতি চিনা তরুণদের সামগ্রিক অনীহা তৈরি হয়েছে।

১৮ ২০

২০২১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, সে বছর চিনে ৭৬ লক্ষ ৩০ হাজার যুগল বিয়ের জন্য সরকারি খাতায় নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন। ২০২২ সালে সেই পরিসংখ্যান কমে হয়েছে ৬৮ লক্ষ ৩০ হাজার।

১৯ ২০

শুধু বিয়ে নয়, চিনে ক্রমাগত কমছে জন্মহারও। যার প্রভাব পড়েছে জনসংখ্যাতেও। সম্প্রতি ১৪০ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে ভারতের চেয়ে এক ধাপ নেমে গিয়েছে চিন। জনসংখ্যার নিরিখে তারা এখন বিশ্বে দ্বিতীয়।

২০ ২০

বেকারত্ব, বয়সের বৈষম্য, তরুণ প্রজন্মের অনাগ্রহ চিনকে সামগ্রিক ভাবে অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তরুণদের উজ্জীবিত করতে প্রশাসনের তরফেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement