China Protest

কোথাও যৌনতার ফাঁদ, কোথাও বিধিনিষেধে ছাড়, বিদ্রোহ দমাতে আর কী করছে চিন?

এ বার সমাজমাধ্যমেও বিরোধী স্বরকে ধামাচাপা নেওয়ার জন্য অভিনব পদক্ষেপ করেছে চিন। তবে তা করতে গিয়ে যা হল, তা জিনপিং সরকার এবং সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টির জন্য কম অস্বস্তিকর নয়।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৪৪
Share:
০১ ২৪

দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভের মুখে সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে চিন সরকার। হঠাৎই বুধবার গুয়াংঝৌ শহরে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ রোধের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দমন-পীড়ন অব্যাহত।

০২ ২৪

গুয়াংঝৌ শহর কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, শহরের অর্ধেক এলাকা থেকে করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement
০৩ ২৪

এ ছাড়া কোনও এলাকায় করোনার সংক্রমণ হলে গণহারে আরটি-পিসিআর টেস্টও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বিক্ষোভের জেরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা অবশ্য উল্লেখ করা হয়নি।

০৪ ২৪

যে সব এলাকায় বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে, সেই সব এলাকা থেকে সরে গেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

০৫ ২৪

তবে শহরের যে সব এলাকায় বড় বিক্ষোভ হয়েছে, সেই সব এলাকা থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি।

০৬ ২৪

চিন সরকারের কঠোর কোভিডনীতির বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সে দেশের নাগরিকরা। বিক্ষোভ দমনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে বেজিং প্রশাসনও।

০৭ ২৪

সমাজমাধ্যমেও বিরোধী স্বরকে ধামাচাপা নেওয়ার জন্য অভিনব পদক্ষেপ করল তারা। তবে তা করতে গিয়ে যা হল, তা জিনপিং সরকার এবং সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টির জন্য কম অস্বস্তিকর নয়।

০৮ ২৪

এমনিতে চিনে বাইরের কোনও সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত সমাজমাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে নজরদারি চালায় সরকার।

০৯ ২৪

তবে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ফোন পরীক্ষা করে দেখেছে, তাঁদের অনেকেই ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর মাধ্যমে টুইটারে সরকার-বিরোধী বক্তব্য রাখছেন।

১০ ২৪

এই বিরোধিতার কথা যাতে বহির্বিশ্ব জানতে না পারে, তার জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বেশ কিছু টুইট ছড়িয়ে পড়ছে চিন থেকেই। জানা যাচ্ছে, প্রতিবাদী স্বরকে ধামাচাপা দিয়ে নজর অন্য দিকে ঘোরাতেই এমনটা করা হচ্ছে।

১১ ২৪

এই সংক্রান্ত টুইটগুলির হ্যাশট্যাগ দেওয়া হয়েছে ‘হ্যাংঝৌ’। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চিনের এই হ্যাংঝৌ প্রদেশেই গত সোমবার সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা।

১২ ২৪

ভারতের বেশ কিছু সংবাদ সংস্থার তরফে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ছড়ানো ওই টুইটগুলি পরীক্ষা করা হয়। সেগুলি পরীক্ষা করে হতবাক অনেকেই।

১৩ ২৪

বহু টুইটে শুধু তরুণীদের ছবি রাখা হয়েছে। একটি টুইটে বলা হয়েছে, “আমি সিঙ্গল, আমি কি একজন স্বামী পেতে পারি?” আর একটি টুইটে আবার দেখা যাচ্ছে, “আমি তোমার সঙ্গে পছন্দের জায়গায় যৌনতায় মাততে চাই।”

১৪ ২৪

তবে সবচেয়ে বেশি রিটুইট করা হয়েছে যে টুইটটি, তাতে লেখা হয়েছে, “কোন ভঙ্গিতে যৌনতায় মাতলে, তুমি সব চেয়ে বেশি তৃপ্ত হবে, তা আমায় জানিয়ো।”

১৫ ২৪

চিনের বিক্ষোভকারীদের দাবি, এ সব টুইট তাঁরা করছেন না। বরং তাঁদের সরকার-বিরোধী পোস্টগুলিকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই এ সব করা হচ্ছে।

১৬ ২৪

বস্তুত, চিনে বিক্ষোভের শুরু গত ১৮ সেপ্টেম্বরের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ওই দিন চিনের গুইঝৌ প্রদেশে কয়েক জনকে একটি বাসে করে নিভৃতবাস সেন্টারে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ২৭ জনেরই মৃত্যু হয়। এর পর এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ শুরু হয় অনলাইনে।

১৭ ২৪

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেনের ফুতিয়াং জেলায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে সেখানে লকডাউন করা হয়। এর জেরে সেখানেও বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের পদত্যাগও দাবি করা হয়।

১৮ ২৪

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেনের ফুতিয়াং জেলায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে সেখানে লকডাউন করা হয়। এর জেরে সেখানেও বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের পদত্যাগও দাবি করা হয়।

১৯ ২৪

রাজধানী বেজিঙের বেশ কয়েক জন বলেছেন, পুলিশ তাঁদের ফোন করে তাঁরা কোথায় আছেন, সে বিষয়ে তথ্য চাইছে। কী ভাবে পুলিশ তাঁদের পরিচয় জানতে পারল, তা স্পষ্ট নয়।

২০ ২৪

পুলিশ অনেক লোকের ফোন পরীক্ষা করে দেখছে যে সেখানে ভিপিএন আছে কি না, টেলিগ্রাম বা টুইটারের মত অ্যাপ আছে কি না– যা চিনে নিষিদ্ধ।

২১ ২৪

গত দু’দিনে বেশ কিছু লোককে আটকও করা হয় যার মধ্যে এমন লোকও আছেন যাঁরা রাস্তায় ছবি তোলার জন্য থেমেছিলেন।

২২ ২৪

সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এক মহিলা জানিয়েছেন, বেজিঙে একটি বিক্ষোভে যোগ দেবার পর তিনি এবং তার পাঁচ বন্ধু পুলিশের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন। তাঁদের এক জন ফোন না ধরায় পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেয়, যে তিনি ‘অবৈধ সমাবেশে’ গিয়েছিলেন কি না।

২৩ ২৪

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে আর এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁদের কয়েক জনকে স্থানীয় থানায় গিয়ে রবিবার রাতে তাঁরা কী কী করেছেন, তার লিখিত বিবৃতি জমা দিতে বলা হয়েছে।

২৪ ২৪

সব মিলিয়ে, এক দিকে কিছু কিছু প্রদেশে বিধিনিষেধ শিথিল করা এবং অন্য দিকে সব রকম ভাবে কড়া হাতে প্রতিবাদ দমন— এই ভাবেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে চাইছে চিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement