China-Taiwan Conflict

China-Taiwan Conflict: মহাশক্তিধর নৌবহর, বিধ্বংসী রেলগান, সোনালি ঈগল... আর কী অস্ত্র রয়েছে চিনের হাতে

ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে ঘিরে এত কাল চিন-আমেরিকার ‘স্থিতাবস্থা’র সম্পর্ক ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২২ ০৮:৫৬
Share:
০১ ২৫

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগুন এখনও নেভেনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ লগ্নে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করেছিল রুশ সেনা। তা এখনও চলছে। কখনও হয়তো তার গতি বাড়ছে। কখনও সেই অভিযান চলছে ঢিমেতালে। এই ঘটনাকে ঘিরে দ্বিধাবিভক্ত গোটা দুনিয়া।

০২ ২৫

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে নতুন করে তপ্ত হয়ে উঠেছে আমেরিকা এবং চিনের সম্পর্ক। মঙ্গলবার আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে ঘিরে এত কাল চিন-আমেরিকার ‘স্থিতাবস্থা’র সম্পর্ক ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে।

Advertisement
০৩ ২৫

গোটা দুনিয়া যখন একটি যুদ্ধের সাক্ষী থাকছে সেই সময় বিশ্বের অন্য দুই বৃহৎ শক্তির কূটনৈতিক সম্পর্ক তপ্ত হয়ে ওঠায় নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে। কারণ, পেলোসির তাইওয়ান সফরের দিনেই চিনের ফুজিয়ানের ব্যস্ত রাস্তায় নামানো হয়েছে ট্যাঙ্ক। ‘ইয়িন সুরা’ নামে একটি টুইটার হ্যান্ডল থেকে চিনা ট্যাঙ্কের ওই ভিডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করা হয়েছে। পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে, পেলোসির তাইওয়ান সফরের দিনেই তাইওয়ান সীমান্তে সেনা সমাবেশ করতে শুরু করেছে চিন।

০৪ ২৫

আমেরিকা এবং চিন সম্পর্কে এই টানাপড়েন নতুন নয়। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনও দুই দেশের মধ্যে সঙ্ঘাতের আবহ তৈরি হয়েছিল। তবে জো বাইডেনের আমলে আমেরিকার প্রতিনিধি হিসাবে ন্যান্সি পেলোসির এই তাইওয়ান সফর দুই দেশের কূটনীতিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বলেই অনেকের ধারণা। যার জল সরাসরি সঙ্ঘাতের দিকে গড়াতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

০৫ ২৫

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এখনও পর্যন্ত চিন বিশ্বাস করে ‘লড়াই ছাড়াই জয়’ নীতিতে। তবে ভবিষ্যতে বেজিং এই নীতি থেকে সরে আসতে পারে বলেও অনেকের মত। তবে এর উল্টো মতও রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, চিন ক্ষমতাশালী হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমেরিকার মতো ‘পুলিশগিরি’ করতে রাজি নয় তারা। ঘটনাচক্রে ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধের পর চিন আর কোনও যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু দক্ষিণ চিন সাগরে তাইওয়ান-সহ বিভিন্ন এলাকায় চিনের ‘খবরদারি’ নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলেছে আমেরিকা।

০৬ ২৫

তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকা এবং চিনের স্নায়ুযুদ্ধের ইতিহাস বহু পুরনো। কিন্তু তাতে নতুন রঙের পোচ দিয়েছে গত মে মাসে টোকিয়োয় ‘কোয়াড’ বৈঠকে বাইডেনের করা মন্তব্য। সেখানে বাইডেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘আমেরিকা তাইওয়ানের পক্ষ নেবে।’’ আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়, ইউক্রেনে আমেরিকা সেনা পাঠায়নি। কিন্তু তাইওয়ানে কি আমেরিকা তা পাঠাবে? বাইডেন উত্তর দেন, ‘‘হ্যাঁ। প্রয়োজনে আমরা তা-ও করব। চিনের সে কথা মাথায় রাখা উচিত।” বস্তুত তাইওয়ান নিয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা এতটা খোলাখুলি আগে কখনও বলেনি আমেরিকা।

০৭ ২৫

তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চিন এবং আমেরিকার মধ্যে সঙ্ঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, চিনের চমকপ্রদ অস্ত্রের ভান্ডারে কী কী রয়েছে। সামরিক খাতে খরচের হিসাবে চিন আমেরিকার থেকে অনেকটা পিছিয়ে। কিন্তু কূটনীতিবিদদের একাংশের মত, ড্রাগনের দেশের অনেক খবরই চিনের পাঁচিল পেরোতে পারে না। ফলে খাতায়কলমে চিনের সামরিক খরচ কম মনে হলেও তা হয়তো হিমশৈলের চূড়ামাত্র।

০৮ ২৫

শক্তিশালী পদাতিক সেনা আছে। চিনের রয়েছে প্রচুর ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি। কিন্তু চিনের শক্তি হচ্ছে তার শক্তিশালী নৌবহর। সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, চিনা নৌবহর দুনিয়ায় সর্ববৃহৎ।

০৯ ২৫

চিনা নৌবহরে রয়েছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ। চিনা প্রযুক্তিতে তৈরি ওই যুদ্ধজাহাজে ৪০-৬০টি বিমান থাকতে পারে। থাকতে পারে হেলিকপ্টারও। চিনা ওই বিমানবাহী জাহাজের নাম ফুজিয়ার টাইপ ০০৩ এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার।

১০ ২৫

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০৪০ সালের মধ্যে চিনা নৌবহরের আকার আরও ৪০ শতাংশ বাড়বে। চিনের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে জলসীমা। সে কারণেই নৌবহরের আয়তন বৃদ্ধিতে বিশেষ জোর দিয়েছে বেজিং। ছোট-বড় নানা আকারের নৌবহর রয়েছে চিনের হাতে। রয়েছে আকাশ এবং জলে চলতে পারে এমন উভচর বিমান। রয়েছে নানা শ্রেণির ডুবোজাহাজ এবং বিমান নামার জন্য বিশেষ ধরনের যুদ্ধজাহাজ।

১১ ২৫

আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের ধারণা, ২০৩০ সালের মধ্যে চিন পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা অন্তত চার গুণ বাড়িয়ে ফেলবে। যার অর্থ, ওই সময়ের মধ্যে বেজিংয়ের হাতে থাকবে হাজার খানেক নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড।

১২ ২৫

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, হাইপারসনিক অর্থাৎ শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে জোর দিয়েছে চিন। লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক জিনো লিওনির মতে, ‘পিছিয়ে’ আছে জেনে বেজিং অন্যান্য অস্ত্রের মতো ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতেও ‘বড়সড় লাফ’ দিতে চাইছে।

১৩ ২৫

চিনের হাতে কী কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র আছে তা নিয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই বলেই সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মত। কারণ শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করেছে বেজিং। তবে গত বছর দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় স্পষ্ট চিনের হাতে ঘণ্টায় ১২ হাজার ১৬৯ কিমি গতিবেগে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রযুক্তি এসে গিয়েছে।

১৪ ২৫

মনে করা হচ্ছে দু’ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তাদের হাতে রয়েছে। একটি হাইপারসনিক গ্লাইড ক্ষেপণাস্ত্র, যা অনেক উঁচু দিয়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। অপরটি ফ্র্যাকশনাল অরবাইটাল বম্বার্ডমেন্ট সিস্টেম (এফওবিএস), যা নিচু কক্ষপথে উড়ে গিয়ে আঘাত হানে।

১৫ ২৫

মনে করা হয় ‘রেলগান’ নামক একটি অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম হয়েছে চিন। যা আসলে দু’টি রেললাইনের উপর বসানো একটি দৈত্যাকার বন্দুক। তড়িৎচৌম্বকীয় শক্তির মাধ্যমে সেই বন্দুক থেকে বুলেট ছোড়া হয়, যার আকার একটি গোলার মতো। ওই বুলেট শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে দৌড়য়। চিনের হাতে ‘রেলগান’ বসানো যুদ্ধজাহাজ রয়েছে বলেই সমরবিদদের একটা বড় অংশের মত।

১৬ ২৫

চিনের হাতে রয়েছে ‘মাদার অব অল বম্ব’। যা বোমারু বিমান থেকে ফেলা যাবে। তবে এ নিয়ে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি।

১৭ ২৫

চিনের হাতে রয়েছে যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসকারী ‘ক্যারিয়ার কিলার’ ক্ষেপণাস্ত্র। যুদ্ধে নৌবহর ধ্বংস করতে ওই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকরী বলেই যুদ্ধবিশারদদের মত।

১৮ ২৫

রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে এমন ড্রোন রয়েছে চিনের হাতে। যার নাম ‘স্টেলথ ড্রোন’।

১৯ ২৫

রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে এমন যুদ্ধবিমানও রয়েছে চিনের হাতে। যার নাম ‘স্টেলথ ফাইটার’।

২০ ২৫

চিনের হাতে রয়েছে দুনিয়ায় সর্ববৃহৎ উভচর বিমান। যা আকাশ এবং জল দুই জায়গাতেই চলতে পারে। যা সাধারণত বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেই বিমানের নাম এজি-৬০০।

২১ ২৫

‘সোনালি ঈগল’ চিনের আরও এক ভয়ঙ্কর অস্ত্র। ‘সিআর-৫০০ গোল্ডেন ঈগল’ নামে মানববিহীন ওই হেলিকপ্টার ড্রাগনের সুরক্ষায় নিযুক্ত।

২২ ২৫

সম্প্রতি চিন দাবি করেছে, সেনা বাঙ্কার ধ্বংস করার মতো বোমা তাদের হাতে রয়েছে। যা আগের থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশি ক্ষমতাশালী।

২৩ ২৫

৯০ ডিগ্রি কোণে গুলি ছোড়া যেতে পারে এমন আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে চিনের হাতে। কোনও বিশেষ অভিযানে ওই ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

২৪ ২৫

যুদ্ধ মানে শুধুমাত্র সঙ্ঘাত নয়। যুদ্ধের সঙ্গে মিশে রয়েছে সামরিক কৌশলও। যুদ্ধবিদদের ধারণা, চিনা সমরসজ্জার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স)-র ব্যবহার। মিলিটারি রোবোটিকস এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে ব্যাপক ভাবে ওই প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে চিন।

২৫ ২৫

এ ছাড়াও চিনের আরও ভয়ঙ্কর অস্ত্র হল সাইবার হানা। ইতিমধ্যেই চিনা হ্যাকারদের বিরুদ্ধে বার বার সাইবার হানার অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ। গত জুলাই মাসে ওই সাইবার হানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুনিয়ার অন্তত ৩০ হাজার সংস্থা। সেখান থেকে নানা তথ্য চুরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আমেরিকা এবং চিনের সরাসরি সঙ্ঘাতের ঘটলে তাতে বড় ভূমিকা নিতে পারে চিনা হ্যাকাররা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement