রাজ্যে বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ নতুন নয়। কর্মসংস্থান নিয়ে বিরোধীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, সরব হয়েছেন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়েও পাল্টা ‘জবাব’ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই সব দফতরকে লিখিত নির্দেশে মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিক জানিয়েছেন, ২২ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্য সরকারের সর্বত্র নিয়োগের সবিস্তার তথ্য দিতে হবে বিভাগীয় প্রধানদের।
মুখ্যসচিবের বার্তা, ২০১১-র মে (ওই সময়ে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল সরকার) থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কত নিয়োগ হয়েছে, সেই তথ্য সরকারের নির্দিষ্ট ই-মেলে জানাতে হবে। জানাতে হবে গ্রুপ-এ, বি, সি এবং ডি-তে নিয়োগের সংখ্যা।
চুক্তিভিত্তিক এবং অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ-তথ্যের পাশাপাশি, অধ্যাপক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং অন্যান্য পদে কোথায় কত নিয়োগ হয়েছে, দিতে হবে তার ব্যাখ্যাও।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘কাউকে বঞ্চিত করিনি। বিপুল চাকরি দিয়েছি। শুধু এমএসএমই-তেই ১ কোটি ১৫ লক্ষ লোক চাকরি পেয়েছেন।”
এর পর তাঁর সংযোজন, “যারা বড় বড় কথা বলছে, তাদের থোঁতা মুখ ভোঁতা করে দেব। কেন্দ্রে ৪০% বেকারত্ব বেড়েছে। আমাদের ৪০% দারিদ্র কমেছে।’’
কর্মচারী সংগঠনগুলির অনেকের দাবি, দীর্ঘ দিন রাজ্যে স্থায়ী নিয়োগ নেই। পড়ে রয়েছে বহু শূন্যপদ।
তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি মনোজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, “নিয়মিত পদগুলিতে স্থায়ী নিয়োগ তো হচ্ছেই না। চুক্তিভিত্তিকদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।”
মনোজ আরও বলেন, “স্থায়ী নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী স্থায়ীকরণও প্রয়োজন। না হলে সংশ্লিষ্টদের ভবিষৎ প্রশ্নের মুখে পড়ছে।”
সরকারি সূত্রের দাবি, বিগত বেশ কয়েকটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বহু নিয়োগে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তাতে পূরণ করা যাবে হাজার হাজার শূন্যপদ।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে সরকারের এই নিয়োগ-তথ্য রাজনৈতিক প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে তৃণমূলের।