করোনাকালে লকডাউনের জেরে ধ্বস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতি। কাজ হারিয়েছেন অগণিত মানুষ। তবে বছরের শুরুতে ফের নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে শুরু করতে পারেন ছোটখাটো ব্যবসা। কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলেই তো হল না! পুঁজি কোথায়? তার সমাধান করতে পারে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা। তবে কোন ব্যবসা করলে ভাগ্য বদলে যেতে পারে?
স্টার্ট-আপ হোক বা ছোট ও মাঝারি মাপের ব্যবসা— নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য পেতে পারেন। ব্যবসা শুরুর জন্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেই আর্থিক সাহায্য দেয় মোদী সরকার। তার মধ্যে ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’ (পিএমএমওয়াই) অন্যতম। ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল এই ঋণপ্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন কর্পোরেট নন, এমন ক্ষেত্রের উদ্যোগপতিরা বা কৃষিক্ষেত্রের বাইরে ছোট ও মাঝারি সংস্থা। এ ছাড়া রয়েছে ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’ বা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র মতো প্রকল্প।
শীতের মরসুমে নতুন আলু, পেঁয়াজ হোক অথবা ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিন, বেগুন, পালংশাকের মতো শাকসব্জি— কোনও কিছুরই দাহিদা কম নয়। আবার আবহাওয়া বদল হলে মরসুমি শাকসব্জির ক্রেতাও যথেষ্ট। এর বাজার ধরতে শাকসব্জির চাষ শুরু করতে পারেন।
চাষবাসের জন্য সার অপরিহার্য। ফলে সারের সরবরাহ করার জন্য নিজের সংস্থা খুলতে পারেন। তবে তার আগে বীজ, সার বিক্রির লাইসেন্স জোগাড় করতে হবে। এর পর নিজের আশপাশেই জায়গা দেখে উচ্চ গুণমানের সার বা বীজ সংগ্রহ করতে চেষ্টা করুন। প্রয়োজন বিদেশ থেকে আমদানিও করতে পারেন।
চাষবাস বা তার সঙ্গে যুক্ত দ্রব্যের সরবরাহের মতোই লাভজনক জমির গুণমান পরীক্ষার বন্দোবস্ত। ফলে তা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি গড়ে তুলতে পারেন। জমির মান পরীক্ষা করে তাতে কত পরিমাণ সার প্রয়োজন? কোন জমিতে কী ফলনে বেশি লাভ হতে পারে? এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে ল্যাবরেটরির ব্যবসা বেশ লাভদায়ক হতে পারে।
জমির মালিকানা থাকলেও তাতে কী ফসল ফলালে লাভের মুখ দেখবেন? ভেবেচিন্তেও কিনারা হচ্ছে না? তবে এ নিয়ে পরামর্শদাতার কাছে ছুটতে পারেন। এবং এই ক্ষেত্রে পরিষেবা সংস্থা কাজে আসতে পারে। ভবিষ্যতে এর চাহিদা বাড়বে বলেই মত অনেকের।
পশুপালন করে এমন খামার তো বহু রয়েছে। তবে তার জন্য খাদ্য উৎপাদনের ব্যবসার কথা ভেবেছেন কখনও? ছোট শিল্প সংস্থার মধ্যে এ ব্যবসাও ভাগ্যবদল করতে পারে। শক্তিশালী সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে হাঁস-মুরগির খামারের জন্য খাবারে জোগানের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, শুয়োর এমনকি ঘোড়ার খাবারের চাহিদাও কম নয়। এর বাজার ধরতে চারার ব্যবসাও শুরু করতে পারেন।
কম পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করতে চান? কখনও জৈব সার বিক্রির কথা ভেবেছেন? দেশ জুড়েই এই চাহিদা কম নয়। উৎপাদনের সঠিক বন্দোবস্ত করে এ নিয়ে নিজের সংস্থা খুলতে পারেন।
বছরের যে কোনও মরসুমেই লাভজনক ব্যবসার হতে পারে মাছচাষ। ভেড়ি তৈরি করে তাতে নানা প্রজাতির মাছের চাষে মুনাফাও কম নয়। পাশাপাশি, এতে খরচও বিশেষ নেই।
নিজের জমিজায়গা রয়েছে? তবে তাতে শুয়োরের খামার গড়ে তুলতে পারেন। পোর্ক বা শুয়োরের মাংসের চাহিদা বছরভর থাকে। পাশাপাশি, এতে বিশেষ যন্ত্রপাতিও প্রয়োজন হয় না। মুনাফাও কম নয়।
ফসল ফলানোর ইচ্ছে রয়েছে। অথচ নিজের জমিজিরেত বা খামার নেই? চিন্তা করবেন না। তা সত্ত্বেও ব্যবসা শুরু করতে পারেন। চাষবাসের কাজে সহকারীর চাহিদা তো কম নয়। তার জোগান দিতে কাজে আসতে পারে আপনার সংস্থা।