Vande Bharat Express

মোদীর সাধের ট্রেনের ইঞ্জিন মেরামত মাত্র ২৪ ঘণ্টায়, মামলা করা হল মোষমালিকের বিরুদ্ধে

পশ্চিম রেলওয়ের জনসংযোগ আধিকারিক বলেছেন, রেলের কাছে এমন অনেক বিকল্প ‘নাক’ পড়ে থাকে। তারই একটি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২২ ১৮:৪৫
Share:
০১ ১৯

অকূলপাথারে পড়েছেন গুজরাতের এক মোষ মালিক। খোদ ভারতীয় রেল এফআইআর দায়ের করেছে তাঁর বিরুদ্ধে। অপরাধ, তাঁর পালিত মোষের ধাক্কায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাধের ট্রেনের ‘নাক ভোঁতা’ হয়ে গিয়েছে!

০২ ১৯

ঠিক সাত দিন আগেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের তৃতীয় রুটের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তখনই মোদী বলেছিলেন, বন্দে ভারতের এই তৃতীয় সংস্করণ আরও উন্নত, আরও হালকা হবে। আর তাই আরও বেশি গতিময়ও হবে।

Advertisement
০৩ ১৯

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সেই উন্নততর ট্রেন যাত্রা শুরু করে। ঠিক সাত দিনের মাথায় ৬ অক্টোবর দুপুর সোয়া ১১টায় ঘটে দুর্ঘটনা। যার জেরে তুবড়ে যায় ট্রেনের মুখের সামনের দিকের অনেকটা অংশ।

০৪ ১৯

আমদাবাদ থেকে মুম্বইগামী হাইস্পিড ট্রেনটি পূর্ণগতিতেই ছুটছিল বৃহস্পতিবার সকালে। যাত্রা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে আমদাবাদ এবং গান্ধীনগরের মাঝামাঝি এলাকায় ঘটে দুর্ঘটনা। সার বেঁধে মোষদের একটি পাল এগিয়ে যাচ্ছিল রেললাইন পেরিয়ে। ঠিক সেই সময়েই সেখানে এসে পড়ে হাইস্পিড ট্রেন। সজোরে ধাক্কা মারে মোষের পালে।

০৫ ১৯

হাইস্পিড ট্রেনের ধাক্কায় চারটি মোষ মারা যায়। আবার মোষের ধাক্কায় তুবড়ে যায় ট্রেনের ইঞ্জিনও। ইস্পাতের ভারী ইঞ্জিনের উঁচু নাকের মতো অংশের তুবড়ে যাওয়ার ছবি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। সমালোচনায় মুখর হয় বিরোধীরাও।

০৬ ১৯

২৪ ঘণ্টায় ট্রেনের সেই ‘ভোঁতা নাক’ ঠিক করে ভারতীয় রেল। সেই সঙ্গে রেলপুলিশ মামলা করে গুজরাতের ওই মোষমালিকের বিরুদ্ধে।

০৭ ১৯

পশ্চিম রেলওয়ের মুখপাত্র জিতেন্দ্রকুমার জয়ন্ত জানান, ওই মোষের পালের মালিক কে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে আচমকা ট্রেনের সামনে মোষ চলে আসার ঘটনায় সেই অপরিচিত মোষমালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

০৮ ১৯

১৯৮৯ সালের রেলওয়ে আইনের ১৪৭ ধারায় দায়ের হয়েছে মামলাটি। এই আইনে রেলের সম্পত্তি এবং রেলের অধিকৃত এলাকায় বিনা অনুমতিতে প্রবেশ অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।

০৯ ১৯

দুর্ঘটনায় বন্দে ভারতের ‘নাক ভোঁতা’ হওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যাও দেন রেলের জনসংযোগ আধিকারিক। তিনি জানান, আসলে ইস্পাতের অংশটি নয় ইঞ্জিনের ড্রাইভারের কেবিনের সামনের যে ফাইবারের সৌন্দর্যবর্ধক অংশ থাকে, যার আর এক নাম ‘নোজ কোন’, সেটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা নাকি বদলে ফেলতে বিশেষ সময়ই লাগেনি।

১০ ১৯

পশ্চিম রেলওয়ের জনসংযোগ আধিকারিক এ-ও বলেছেন, রেলের কাছে এমন অনেক বিকল্প ‘নাক’ পড়ে থাকে। তারই একটি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে। যাত্রীদের কোনও অসুবিধা না করেই মুম্বই থেকে পাড়ি দিয়েছে ট্রেনটি।

১১ ১৯

আসলে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বেশ হইচই ফেলেই যাত্রা শুরু করেছিল ভারতে। দেশের ট্রেনের গতি বাড়ানোর কথা ভেবেছিলেন মোদী। চার বছর ধরে দীর্ঘ পরিকল্পনার পর শেষে তা বাস্তবায়িত হয়। বহুবার পরীক্ষামূলক ভাবে চালানোর পর শেষে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম যাত্রা শুরু করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। তার পর আরও দু’দফায় মোট তিনটি রুটে চালু হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।

১২ ১৯

শেষ দফায় আমদাবাদ থেকে মুম্বইগামী রুটে চালু হওয়া ট্রেনটিকে বন্দে ভারতের নবতম এবং উন্নততম সংস্করণ বলে উল্লেখ করেন মোদী।

১৩ ১৯

১৬ কামরার এই ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। মাত্র ১৪০ সেকেন্ডে এই গতিতে পৌঁছতে পারে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। তবে ভারতীয় রেলপথ এই গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পারবে না বলে আপাতত ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে চলছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ।

১৪ ১৯

এই ট্রেনে যাত্রীদের আরামের ব্যবস্থাও আগের দু’টি ট্রেনের চেয়ে উন্নত। রয়েছে ‘কবচ’ প্রযুক্তিও। যার সাহায্যে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে বলে দাবি করেছিল রেল। দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ তো বটেই, ‘কবচ’ প্রযুক্তি রক্ষাকবচ হবে অন্য বিপদ এড়ানোর ক্ষেত্রেও। দাবি ছিল রেলের। যদিও সাম্প্রতিক ঘটনা তা বলছে না। ফলে, এই দুর্ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ‘কবচ’ প্রযুক্তি নিয়ে।

১৫ ১৯

আর কী আছে প্রধানমন্ত্রীর অতি সাধের এই ট্রেনে? ট্রেনের প্রতি কামরায় রয়েছে যাত্রীদের বিনোদনের ব্যবস্থা। শীতাতপ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘কোচ কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’।

১৬ ১৯

স্পর্শ ছাড়াই খোলা ও বন্ধের ব্যবস্থা রয়েছে দরজাগুলিতে। এই ট্রেনের আসনও ঘোরানো যায় ইচ্ছেমতো।

১৭ ১৯

বিমানের মতো ব্যবস্থা রয়েছে শৌচাগারগুলিতে। বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য আলাদা শৌচাগার। দৃষ্টিহীন যাত্রীদের জন্য এই ট্রেনের প্রতিটি আসনের পাশে ব্রেইলে লেখা থাকে আসন সংখ্যা।

১৮ ১৯

বন্যার জলেও ক্ষতি হবে না বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। অন্তত তেমনই দাবি রেলের। বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেনের নীচে থাকা যন্ত্রপাতি বন্যার ফলে জমা জলেও সুরক্ষিত থাকবে।

১৯ ১৯

এ হেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মোষকে ধাক্কা দিয়ে তুবড়ে গেলেও এই ট্রেনের সুরক্ষা ব্যবস্থা সেরা বলে দাবি করেছে রেল। এ ট্রেনের এগ্‌জিকিউটিভ চেয়ার কারের ভাড়া মাথাপিছু ২ হাজার ৫০৫ টাকা। সাধারণ চেয়ার কারে সওয়ার হওয়া যাবে ১ হাজার ৩৮৫ টাকা দিলেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement