ফিফার উপর বেজায় চটেছেন ব্রিটিশ মডেল তথা পর্ন তারকা তানিয়া টেট। তিনি ফুটবলের অন্ধ ভক্ত। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপ দেখতে তাঁর একেবারেই ইচ্ছা করছে না।
খেলোয়াড় নয়, বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট তানিয়া। কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন তিনি মেনে নিতে পারেননি। ফলে ফিফার উপর তিনি রীতিমতো ক্ষুব্ধ।
শুধু কাতার নয়, পশ্চিম এশিয়ার যে কোনও দেশেই বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে এই ফুটবল ভক্তের সমস্যা রয়েছে। কারণ, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের মানসিকতা তাঁর অপছন্দের।
তানিয়া জানিয়েছেন, তাঁর কাছে মোবাইলের মাধ্যমে যৌনতা চেয়ে অনেক ফোন আসে। বেশির ভাগ ফোন আসে পশ্চিম এশীয় দেশগুলি থেকে। বিশেষত সৌদি আরবে এই ধরনের যৌনতার চাহিদা বেশি বলে দাবি পর্ন তারকার।
সেই সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজনে হতাশ তানিয়া। তিনি খোলাখুলি জানিয়েছেন, কাতার, সৌদি বা পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য দেশের রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর আপত্তিকর মনে হয়।
তানিয়ার দাবি, এই দেশগুলিতে মেয়েদের প্রতি অবিচার হয়ে চলেছে অবিরত। পুরুষের জন্য সেখানে এক রকম নিয়ম, বাকি সকলের জন্য সেই নিয়মই যায় বদলে। কাতারে সমলিঙ্গ সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ব্রিটিশ পর্ন তারকা।
তানিয়ার মতে, মহিলা এবং এলজিবিটিকিউ গোষ্ঠীর মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল কোনও দেশে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করা উচিত ছিল ফিফার। কাতারে মেয়েদের স্বাধীনতা, সমানাধিকার স্বীকৃত নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে পশ্চিম এশিয়া থেকে যাঁরা সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক ভাবে সে দেশের মানসিকতা আন্দাজ করেছেন তিনি।
৪৩ বছরের তানিয়া জনপ্রিয় ব্রিটিশ মডেল। পর্ন দুনিয়ায় তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। তিনি ফুটবলের ভক্ত। লিভারপুলের একনিষ্ঠ সমর্থক। সেখানেই জন্ম তানিয়ার।
সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি পর্ন ভিডিয়ো তৈরি করি। যদি ফুটবল ভক্ত হিসাবে বিশ্বকাপ দেখতে আমি কাতারে যেতাম, সেখানে একেবারেই আমাকে ভাল ভাবে থাকতে দেওয়া হত না। আমার কেরিয়ার আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আমি নিজেকে খুব সৌভাগ্যবতী মনে করি যে, নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী আমি কাজ করতে পারছি।’’
বিশ্বকাপের পাশাপাশি নিয়মিত ক্লাব ফুটবল দেখেন তানিয়া। কাতারে বিশ্বকাপের জন্য ফিফার উপর তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন ঠিকই। তবে একই সঙ্গে এই বিশ্বকাপের কিছু ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছেন।
তানিয়া জানিয়েছেন, এই বিশ্বকাপে তাঁর প্রিয় ক্লাব লিভারপুলের কিছু সুবিধা হবে। এই মুহূর্তে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকায় লিভারপুল রয়েছে ৬ নম্বরে। বিশ্বকাপের পর ২০২৩ সালে নতুন শুরুর বিষয়ে আশাবাদী তিনি।
তানিয়ার মতে, লিভারপুলের ফুটবলারদের অনেকেই চোট পেয়েছেন। ফলে প্রিমিয়ার লিগে তাঁদের দল সমস্যায় পড়েছে। বিশ্বকাপের মধ্যে সেই চোট সারিয়ে নেওয়ার সময় পাচ্ছেন লিভারপুল তারকারা। ফলে আগামী বছর নতুন মরসুমের খেলা শুরু হলে তাঁর দল ভাল জায়গায় থাকবে বলে মনে করছেন তানিয়া।
তবে বিশ্বকাপের জন্য প্রিমিয়ার লিগ মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছে ফিফা, যা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না ব্রিটিশ তারকা। তাঁর মতে, ফিফার এই সিদ্ধান্ত ‘জঘন্য’। আগামী বছর প্রিয় দলের ভাল শুরুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন তানিয়া।
কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এই দেশের নানা রক্ষণশীল নিয়মকানুনে ফুটবলপ্রেমীরা সার্বিক ভাবে খুশি নন। বিশ্বকাপ শুরুর মুখেই কাতারের শাসক শিবির জানিয়ে দেয়, স্টেডিয়ামে বসে মদ্যপান একেবারে নিষিদ্ধ।
এ ছাড়া আরও একাধিক বিধিনিষেধ বিশ্বকাপ দেখতে আসা ফুটবল সমর্থকদের উপর আরোপ করেছে কাতার। দেশের নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে মহিলাদের খুব বেশি খোলামেলা পোশাক না পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাকি সমর্থকের মতো কাতার নিয়ে তাই ক্ষোভপ্রকাশ করলেন তিনি।