মেরিনা আব্রামোভিচ এবং উলে। বিশ্বের অনেকে এই যুগলকে বিশ্বের ‘অন্যতম শ্রেষ্ঠ’ যুগল বলে মনে করে। মেরিনা এবং উলে, পেশায় দু’জনেই শিল্পী ছিলেন। যাঁদের সম্পর্ক শেষ হয়েছিল বিশ্বের অন্যতম আশ্চর্য চিনের প্রাচীর বা ‘গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’য়।
মেরিনা ছিলেন সার্বিয়ার এক জন ‘পারফরম্যান্স শিল্পী’। উলে ‘পারফরম্যান্স শিল্পী’ হলেও তিনি ছিলেন জার্মানির বাসিন্দা। মেরিনা এবং উলে দু’জনেরই জন্মদিন ৩০ নভেম্বর। আমস্টারডামে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁদের। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম।
প্রাথমিক ভাবে, এই যুগল একসঙ্গে চিনের প্রাচীর দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। প্রাচীরের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে একে অপরকে বিয়ে করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা।
১২ বছর চুটিয়ে প্রেম করার পরে ১৯৮৮ সালে মেরিনা এবং উলের সম্পর্ক ভেঙে যায়। বিয়ের স্বপ্ন ভেঙে গেলেও বিচ্ছেদ উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
ঠিক করেন বিয়ে করতে না পারলেও চিনের প্রাচীরে গিয়েই আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ করবেন তাঁরা। উদ্যাপন হিসাবে যা শুরু হয়েছিল তা দম্পতির জন্য শেষ বিদায়ে পরিণত হয়েছিল।
চিনের প্রাচীরে প্রায় তিন মাস কাটাতে হত মেরিনা এবং উলেকে। আর তার জন্য প্রয়োজন ছিল চিন সরকারের অনুমতিপত্রের। সেই অনুমতিপত্র পেতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল তাঁদের। পাশাপাশি, চিনের প্রাচীরে অনেক দিন থাকার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ কিনতে অনেক টাকারও প্রয়োজন ছিল। সেই টাকা জোগাড় করতেও সক্ষম হন মেরিনা এবং উলে।
মেরিনা ঠিক করেন প্রাচীরের পূর্ব দিক দিয়ে হাঁটা শুরু করবেন তিনি। আর উলে হাঁটা শুরু করবেন প্রাচীরের পশ্চিম দিক থেকে।
দু’জনে দু’দিক থেকে হাঁটা শুরু করলে তাঁদের মাঝখানে এক জায়গায় এসে দেখা করতে সময় লাগত তিন মাস। তিন মাস পরে দেখা হওয়ার পর সেখান থেকেই জীবনে আলাদা আলাদা পথে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
পুরো বিষয়টিকে বিশ্বের কাছে একটি ‘পারফর্মিং আর্ট’ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলেন মেরিনা এবং উলে।
যেমন ভেবেছিলেন তেমনই হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে চিনের প্রাচীরের মাঝখানে এসে দেখা করেন মেরিনা এবং উলে। বিশ্ব জুড়ে নাম ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের। এক সঙ্গে চিনের প্রাচীরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন মেরিনা এবং উলে। এর পর আর তাঁরা নিজেদের ঠিক রাখতে পারেননি। বিদায়বেলার কথা ভেবে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন তাঁরা।
যেমন ভেবেছিলেন তেমনই হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে চিনের প্রাচীরের মাঝখানে এসে দেখা করেন মেরিনা এবং উলে। বিশ্ব জুড়ে নাম ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের। এক সঙ্গে চিনের প্রাচীরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন মেরিনা এবং উলে। এর পর আর তাঁরা নিজেদের ঠিক রাখতে পারেননি। বিদায়বেলার কথা ভেবে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন তাঁরা।
চিনের প্রাচীরে দাঁড়িয়ে বিদায় মুহূর্তের আগে মেরিনা এবং উলের আলিঙ্গনের ছবি নিয়ে এখনও চর্চা করেন ‘পারফরম্যান্স শিল্পী’রা। বিভিন্ন প্রদর্শনীতে সেই ছবি এখনও দেখানো হয়।
উলে এবং মেরিনার সেই ‘পারফরম্যান্স’ বহু যুগলের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। উলে এবং মেরিনা চিনের প্রাচীরে তাঁদের সেই দেখা করার ঘটনার নাম দেন ‘দ্য লাভার্স’।
‘দ্য লাভার্স’ মুক্তির পর থেকে উভয় শিল্পীর পরিচিতি অনেক বেড়ে যায়। তবে মেরিনাই বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।
‘দ্য লাভার্স’কে নিয়ে বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্রও তৈরি হয়েছিল। অনেক বিজ্ঞাপনেও জায়গা পেয়েছিল এই শিল্প।
২০২০ সালের এপ্রিলে উলে মারা গিয়েছেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৬। বর্তমানে মেরিনার বয়স ৭৫ বছর।