ব্রাজিলীয় মডেল আর্থার ও উরসো। ২০২১ সালে প্রথম বার আন্তর্জাতিক শিরোনামে উঠে এসেছিলেন তিনি। এক সঙ্গে ৯ তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন আর্থার। ঘটা করে সেই সম্পর্কের উদ্যাপন করেন।
ব্রাজিলের একটি চার্চে গিয়ে ৯ তরুণীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন আর্থার। নিজের এই বহুগামী সম্পর্ককে আলাদা মাত্রা দেন মহা ধূমধামের সঙ্গে। তবে যে উৎসাহ নিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ফিকে হয়েছে।
৯ স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করা হয়নি আর্থারের। কারণ বিয়ের কয়েক মাস পরেই এক স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। বহুগামী সম্পর্কে তিনি প্রথমে রাজি হয়েছিলেন। তবে পরে মোহভঙ্গ হয়। আর্থার তার পর থেকে থাকছিলেন ৮ স্ত্রীকে নিয়েই।
সকলকে নিয়ে থাকার জন্য ব্রাজিলের জোঁ পেসোয়া শহরে প্রাসাদোপম একটি বাড়ি বানিয়েছেন আর্থার। ৩৬ বছর বয়সি যুবক ৮ স্ত্রীকে নিয়ে দিব্যি দিন কাটাচ্ছিলেন। তবে সংসারে ফের নামে অশান্তির ছায়া।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ৮ জনের মধ্যে আর্থার তাঁর ৪ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে ফেলেছেন। উভয়পক্ষের মধ্যে বহুগামী সম্পর্ক, দৈনন্দিন দিনযাপন সংক্রান্ত নানাবিধ বিষয়ে মতবিরোধ হয়েছে বলে ব্রিটিশ একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। উভয়পক্ষের সম্মতিতেই হয়েছে বিবাহবিচ্ছেদ।
আর্থার জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁর আইনসম্মত স্ত্রী ৪ জন। তাঁদের নিয়ে ব্রাজিলের বিশাল বাড়িতে থাকেন তিনি। তবে আরও সঙ্গীর খোঁজ চলছে। নতুন নতুন সঙ্গী ছাড়া তিনি থাকতে পারেন না বলে জানান ব্রাজিলীয় মডেল।
গত বছর থেকেই চর্চায় আর্থারের সংসার, সঙ্গী, বিবাহিত জীবন। কী ভাবে ৮ জন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি সংসার করে চলেছেন, কী ভাবে ভারসাম্য রেখে সকলকে মানিয়ে চলেন, তা জানার জন্য উৎসাহীদের আগ্রহের অন্ত নেই।
এ বিষয়ে একাধিক বার একাধিক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আর্থার। তাঁর বহুগামী জীবন নিয়ে যাবতীয় কৌতূহল নিরসন করেছেন। আর্থার জানিয়েছেন, একাধিক স্ত্রীকে নিয়ে থাকা, সকলের সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে সংসার করা আদতে এমন কিছু কঠিন নয়।
আর্থার জানিয়েছিলেন, সকলের মন রাখতে একটি রুটিন তিনি বানিয়ে নিয়েছেন। কবে কখন কোন স্ত্রীর সঙ্গে ঠিক কতটা সময় তিনি কাটাতে চান, কোন সময় কী করতে চান, রুটিনে সে সব লেখা ছিল। সেই রুটিন অনুযায়ী দিন কাটান আর্থার।
এমনকি ব্রাজিলীয় মডেল নিজের যৌন জীবনকেও বেঁধে ফেলেছেন রুটিনে। কোন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি কখন মিলিত হবেন, তার রুটিন তৈরি করা রয়েছে। সেই রুটিন অনুযায়ী চলে নিত্য যৌনমিলন।
৮ স্ত্রীকে নিয়ে থাকবেন বলেই সাধ করে বাড়ি তৈরি করেছিলেন আর্থার। কেন বিচ্ছেদ হল? তিনি জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম বহুগামী জীবন শুরু করার পর তাঁকে নানা কথা শুনতে হত। তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে অনেকেই ঠাট্টা করতেন। যা শুনে তাঁদের মন খারাপ হয়ে যেত।
সমাজের এই টিপ্পনী, হাসাহাসির মাঝে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে উঠেছিলেন আর্থার। স্ত্রীদের সঙ্গে তিনি এ নিয়ে আলোচনায় বসেন। কথাবার্তার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করে নিয়েছিলেন নিজেরাই।
এমন আলোচনার মাধ্যমেই ৪ স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর্থার। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও অশান্তি হয়নি। শান্তিতেই আমরা সম্পর্ক শেষ করেছি। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে আমরা নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছি। মুক্ত ভালবাসার সম্পর্ক তো এমনই হওয়া উচিত।’’
বহুগামী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার নেপথ্যে কোন কৌশল লুকিয়ে রয়েছে? আর্থার জানান, প্রত্যেক মানুষকে সম্মান করা প্রয়োজন। সেটাই সবথেকে বেশি দরকারি।’’
তাঁর দর্শন, ‘‘আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের ব্যক্তিস্বাধীনতাকে সম্মান করি। একে অপরের চাহিদা বুঝি। আমরা তাই বুঝে নিয়েছি। কখন শেষ করা দরকার।’’
৪ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর আবার কি বিয়ে করার কথা ভাবছেন আর্থার? বারবার তাঁকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। প্রতি বার তাঁর জবাবে একটি বিষয় স্পষ্ট ছিল। তিনি এক জনকে নিয়ে থাকতে পারেন না। তাঁর একাধিক সঙ্গী প্রয়োজন।
আর্থার জানান, তিনি আরও নতুন সঙ্গীর খোঁজে রয়েছেন। আবার বিয়ে করবেন কি না, এখনও সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি ব্রাজিলের মডেল। তবে বিয়ে না করলেও সঙ্গী তাঁর প্রয়োজন।
শুধুমাত্র বহুগামী সম্পর্কের কারণেই নয়, সঙ্গী খোঁজার অন্য কারণও রয়েছে। আর্থার জানান, তাঁর বিশাল বাড়িটি এখন খাঁ খাঁ করে। বাড়ির এক-একটি ঘরে বড় আকারের সুদৃশ্য বিছানা রয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের পর সেগুলি খালি খালি লাগে।
সেই কারণেও নতুন সঙ্গিনীদের খোঁজ করছেন আর্থার। তিনি চান, আবার তাঁর রুটিন সচল হয়ে উঠুক। আবার স্ত্রীদের হাসি-ঠাট্টায় গমগম করে উঠুক গোটা বাড়ি।