Botswana- Germany Conflict

হাতি নিয়ে হাতাহাতি! জার্মানিকে শিক্ষা দিতে ২০ হাজার গজরাজ ‘উপহার’ দিতে চায় আফ্রিকার ছোট্ট দেশ

বৎসোয়ানার প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, তাঁরা জার্মানিকে ২০ হাজার হাতি ‘উপহার’ দিতে চান। তিনি চান, জার্মানরাও হাতির সঙ্গে বসবাস করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করুক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:০৪
Share:
০১ ১৮

বৎসোয়ানা এবং জার্মানি— হাতি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিরোধ চরমে উঠেছে। গত কয়েক দিন ধরে হাতিই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। এই বিরোধ নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও হাতি নিয়ে সমস্যা কিন্তু দু’দেশের মধ্যে নতুন নয়।

০২ ১৮

নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত বৎসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকগোয়েতসি মাসিসির এক হুমকিকে কেন্দ্র করে। তিনি সম্প্রতি জানান, জার্মানিকে বৎসোয়ানা ২০ হাজার হাতি ‘উপহার’ দিতে চায়! প্রশ্ন ওঠে উপহারে সমস্যা কোথায়? আসলে মাসিসি যতই উপহারের কথা বলুন না কেন তাঁর কথার নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক বিরোধ।

Advertisement
০৩ ১৮

হাতি শিকার নিয়ে জার্মানি নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকেই বিরোধ শুরু হয় দু’দেশের মধ্যে। বৎসোয়ানা থেকে ‘হান্টিং ট্রফি’ আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বার্লিন। যা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করে মাসিসি সরকার।

০৪ ১৮

‘হান্টিং ট্রফি’ কী? কোনও বন্যপ্রাণীকে গুলি করে বা অন্য উপায়ে হত্যা করার পর সেই সব পশুর মাথা, চামড়াকে ‘ট্রফি’ বানিয়ে অনেকেই নিজের বাড়িতে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। ‘হান্টিং ট্রফি’ হিসাবে হাতির মাথা এবং চামড়া বৎসোয়ানা থেকে আমদানি করত জার্মানি। পশু শিকারও চলত আফ্রিকার দেশটিতেই। কিন্তু সম্প্রতি সেই আমদানির উপরই নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে বার্লিন।

০৫ ১৮

এর পরই জার্মানিকে আক্রমণ করে বৎসোয়ানার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘বৎসোয়ানা হাতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বার জার্মানির হাতির সঙ্গে বসবাস করার অভিজ্ঞতা পাওয়া উচিত।’’

০৬ ১৮

এখানেই থেমে থাকেননি বৎসোয়ানার প্রেসিডেন্ট। জার্মানির এক দৈনিক সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে হাতির সংখ্যা যে ভাবে বেড়ে চলেছে তা প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় শিকার। এ ভাবে হান্টিং ট্রফি আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে জার্মানি চাইছে আমাদের দেশের মানুষকে দরিদ্র করে দিতে। শুধু তা-ই নয়, হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের মানুষ প্রভূত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। হাতিরা সম্পত্তির ক্ষতি করছে, ক্ষেতে ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছে।’’

০৭ ১৮

মাসিসি বলেন, ‘‘বার্লিনে বসে অন্য দেশকে নিয়ে মন্তব্য করা খুবই সহজ। যত ক্ষণ না কেউ সমস্যায় পড়ছেন, তত ক্ষণ সেই সমস্যা নিয়ে কারও মাথাব্যথা হয় না। প্রাণী সংরক্ষণ নীতির কারণে আমাদের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। এটা কোনও মজার বিষয় নয়।’’

০৮ ১৮

তার পরই বৎসোয়ানার প্রেসিডেন্ট জানান, তাঁরা জার্মানিকে ২০ হাজার হাতি ‘উপহার’ দিতে চান। তিনি চান, জার্মানরাও হাতির সঙ্গে বসবাস করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করুক।

০৯ ১৮

বৎসোয়ানার স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে শিকারই রুটিরুজির অন্যতম পথ। শিকার করার পর প্রাণীদের মাথা, চামড়া-সহ শরীরের অন্যান্য অংশ বিক্রি করে রোজগার করেন তাঁরা।

১০ ১৮

২০১৪ সালে বৎসোয়ানাই ‘হান্টিং ট্রফি’ নিজেদের দেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। যদিও স্থানীয় সম্প্রদায়ের লাগাতার আন্দোলন এবং চাপের কারণে বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় বৎসোয়ানা সরকার।

১১ ১৮

এখন গোটা দেশে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিকারের অনুমতি দেওয়া রয়েছে। প্রতিটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে শিকারের জন্য লাইসেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লাইসেন্স প্রাপকরাই শুধুমাত্র শিকার করতে পারবেন। তবে অবশ্যই সরকারের বেঁধে দেওয়া সংখ্যা পার করতে পারবেন না।

১২ ১৮

বিদেশ থেকে শিকারিরা এসে এই লাইসেন্সের মাধ্যমে হাতি বা অন্যান্য জন্তু মারেন। বদলে তাঁদের দিতে হয় মোটা টাকা। একটা হাতি মারলে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা দিতে হয় বলে খবর।

১৩ ১৮

বৎসোয়ানায় ইতিমধ্যেই হাতির সংখ্যা এক লক্ষ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। এত হাতি নিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছে সে দেশের সরকার। জার্মানি নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর হাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় অন্য রাস্তা খুঁজছে মাসিসি সরকার। তারা প্রতিবেশী দেশ অ্যাঙ্গোলায় আট হাজার এবং মোজাম্বিকে ৫০০ হাতি পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

১৪ ১৮

মাসিসি ‘উপহার’ পাঠানোর কথা বললেও জার্মানি এই নিয়ে চিন্তিত নয় বলেই জানান বার্লিনের পরিবেশ মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তিনি জানান, এখনই এই নিয়ে চিন্তা করতে নারাজ তাঁর দেশের সরকার।

১৫ ১৮

শুধু বৎসোয়ানা নয়। পশু হত্যা বন্ধ এবং সংরক্ষণ নীতির কারণে আফ্রিকার অনেক দেশেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যার জন্য পশ্চিমের দেশগুলির নেওয়া নীতিকেই দায়ী করছে তারা।

১৬ ১৮

জার্মানির মতো ব্রিটেনও হান্টিং ট্রফি আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আইনসভায় ‘দ্য হান্টিং ট্রফি (আমদানি নিষেধাজ্ঞা) বিল’ পাশ করে। এই বিল নিয়েও আপত্তি তোলে বৎসোয়ানা।

১৭ ১৮

মাসখানেক আগে বৎসোয়ানার বেশ কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ ব্রিটেনের রাস্তায় প্রতিবাদ জানান। তাঁদের দাবি ছিল, অবিলম্বে ব্রিটেনের আইনসভায় পাশ হওয়া বিলটি প্রত্যাহার করতে হবে।

১৮ ১৮

বৎসোয়ানার বন্যপ্রাণী মন্ত্রী লন্ডনের হাইড পার্কে ১০ হাজার হাতি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। শুধু ব্রিটেন, জার্মানি নয়, ইউরোপীয় অনেক দেশের বিরুদ্ধেই বৎসোয়ানার অভিযোগ একই।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement