সিনেপ্রেমীদের একাংশ মজার ছলে প্রায়ই বলে থাকেন, ‘‘টিভি চালালেই দেখি ‘সূর্যবংশম’ হচ্ছে।’’ তবে ছোট পর্দায় সম্প্রচারিত হওয়ার পরেই ব্যবসা করতে সফল হয়েছিল অমিতাভ বচ্চনের এই ছবি। তবে শুধুমাত্র ‘সূর্যবংশম’ নয়, হিন্দি চলচ্চিত্রজগতে এমন বহু ছবি রয়েছে যেগুলি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে, কিন্তু ছোট পর্দায় সম্প্রচারিত হওয়ার পর দর্শকের কাছে বহুল প্রশংসা কুড়িয়েছে।
১৯৮০ সালে রবি চোপড়ার পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’। ধর্মেন্দ্র, জীতেন্দ্র, বিনোদ খন্না, হেমা মালিনী, পরভিন ববি, সীমা গারেওয়াল অভিনীত এই ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিসে তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ছবিটির দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ার কারণে তা বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি। তবে ছবিটি ছোট পর্দায় সম্প্রচারিত হওয়ার পর তা দর্শকের প্রশংসা কুড়োয়।
রাজকুমার সন্তোষীর পরিচালনায় ১৯৯৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘আন্দাজ আপনা আপনা’। আমির খান, সলমন খান, করিশ্মা কপূর, রবিনা টন্ডনের মতো বলি তারকারা এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন।
‘আন্দাজ আপনা আপনা’ ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিস থেকে ভাল উপার্জন করেনি। বলিপাড়ার জল্পনা, ঠিকঠাক প্রচার করতে না পারার কারণেই দর্শকের কাছাকাছি পৌঁছতে পারেনি ছবিটি। অথচ ছোট পর্দায় এই ছবিটি সম্প্রচারিত হলে তা দর্শকের মনে জায়গা করে নেয়।
দ্বৈতচরিত্রে বলিপাড়ার ‘শাহেনশাহ’ অমিতাভ বচ্চন। সঙ্গে বাঙালি অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সূর্যবংশম’ ছবিটি সিনেপ্রেমীরা প্রায় সকলেই দেখেছেন।
‘সূর্যবংশম’ ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিস থেকে ভাল ব্যবসা করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু ছোট পর্দায় সম্প্রচারণের পর ছবিটির খ্যাতি দর্শকমুখে ছড়িয়ে পড়ে।
বলিপাড়ার রোম্যান্টিক ঘরানার ছবির তালিকায় রয়েছে ‘রহেনা হ্যায় তেরে দিল মে’। শুধু ছবিটি নয়, তার গানগুলিও একই ভাবে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অথচ বক্স অফিসে এই ছবিটি ব্যর্থ হয়।
২০০১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘রহেনা হ্যায় তেরে দিল মে’। এই ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেন দিয়া মির্জা এবং আর মাধবন। দিয়া এবং মাধবনের পাশাপাশি এই ছবিতে নজর কাড়ে সইফের অভিনয়। অথচ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর ছবিটি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।
প্রেক্ষাগৃহ থেকে সরে যাওয়ার পর ছোট পর্দায় মাঝেমধ্যেই দেখানো শুরু হতে থাকে ‘রহেনা হ্যায় তেরে দিল মে’ ছবিটি। এর ফলে আরও বৃহত্তর স্তরে ছবিটি পৌঁছে যায়। বর্তমানে দর্শকের অন্যতম প্রিয় ছবিগুলির তালিকায় রয়েছে এই ছবিটি।
এস শঙ্করের পরিচালনায় ২০০১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘নায়ক: দ্য রিয়্যাল হিরো’ ছবিটি। অনিল কপূর, রানি মুখোপাধ্যায়, অমরিশ পুরী অভিনীত এই ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিসে ফ্লপ করে। অথচ ছোট পর্দায় সম্প্রচারিত হওয়ার পর ছবিটি দর্শকের ভালবাসা পায়।
২০০৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘টারজান: দ্য ওয়ান্ডার কার’। এই ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন বৎসল শেঠ এবং আয়েশা টাকিয়া। পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় অজয় দেবগন, ফারিদা জালাল, অমরিশ পুরীর মতো তারকাদের।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ৬ কোটি টাকা বাজেটে তৈরি ‘টারজান: দ্য ওয়ান্ডার কার’ ছবিটি বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করতে পারেনি। অথচ ছোট পর্দার মাধ্যমে এই ছবি দর্শকের প্রশংসা অর্জন করে।
২০০১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘আমদানি অঠ্ঠানি খরচা রুপাইয়া’। গোবিন্দ, জুহি চাওলা, চন্দ্রচূড় সিংহ, তব্বু, জনি লিভার-সহ একাধিক বলি তারকা এই ছবিতে অভিনয় করেন। বক্স অফিসে ব্যর্থ হলেও ছোট পর্দায় কমেডি ঘরানার এই ছবি খ্যাতিলাভ করে।
২০০৮ সালে দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ওয়ে লাকি! লাকি ওয়ে!’। ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন অভয় দেওল। বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়লেও টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচারিত হওয়ার পর দর্শকের মনে ধরে এই ছবি।