সম্প্রতি ৩০ বছরে পা রাখল সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘খলনায়ক’ ছবিটি। সেই উপলক্ষে মুম্বইয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পরিচালক-সহ সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় দত্ত এবং জ্যাকি শ্রফ। ছিলেন না শুধুমাত্র ‘খলনায়ক’-এর নায়িকা মাধুরী দীক্ষিত নেনে। সে সুযোগেই সঞ্জয়-মাধুরীকে নিয়ে মন্তব্য করে বসেন সুভাষ।
সুভাষ বলেন, ‘‘সঞ্জয় বার বার বলত ‘খলনায়ক’ ছবি ভালই ব্যবসা করবে। আমায় এই কথা বলত ঠিকই, কিন্তু ওর নজর সব সময় মাধুরীর দিকেই থাকত।’’ সুভাষের এমন মন্তব্য শুনে অবাক হয়ে যান সঞ্জয়। কিন্তু হাসির ছলে তা উড়িয়েও দেন।
সঞ্জয়ের ‘খলনায়ক’ ছবির সেই বিখ্যাত গান ‘নায়ক নেহি, খলনায়ক হুঁ ম্যায়’। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি এতটাই জনপ্রিয় যে তার ছাপ পড়েছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’-এও।
নব্বইয়ের দশকে সঞ্জয়ের সঙ্গে মাধুরীর জুটি দর্শকের পছন্দের ছিল। ‘সাজন’, ‘থানেদার’ এবং ‘খলনায়ক’-এর মতো একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন সঞ্জয়-মাধুরী জুটি। কিন্তু ক্যামেরার এ পারেও দুই তারকার প্রেমের সম্পর্ক দানা বেঁধেছিল। তা নিয়ে এখনও বলিপাড়ায় চর্চা হয় বিস্তর।
১৯৯১ সালে ‘সাজন’ ছবি মুক্তির পরেই বলিপাড়ায় সঞ্জয় এবং মাধুরীর সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। মাধুরীর সঙ্গে যখন সঞ্জয়ের আলাপ হয় তখন অভিনেতা বিবাহিত। রিচা শর্মাকে বিয়ে করেছিলেন সঞ্জয়।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, মাধুরীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সঞ্জয়। মাধুরীকে বিয়ে করবেন বলেও নাকি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অভিনেতা।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, আমেরিকায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন রিচা। সে সময় তিনি জানতে পারেন যে সঞ্জয় তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা করছেন। জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে আবার মুম্বই ফিরে আসেন।
মুম্বইয়ে ফিরে এক সাক্ষাৎকারে রিচা জানান, সঞ্জয় তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ চান না। ভুল বোঝাবুঝি এবং দূরত্বের কারণে তাঁদের দু’জনের সম্পর্কে প্রভাব পড়েছে। কিন্তু ১৫ দিন পরে আবার আমেরিকায় চলে যান তিনি।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে রিচা দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেননি সঞ্জয়। তাঁদের দু’জনের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি ঢুকে পড়েছিলেন বলেই সম্পর্কে চিড় ধরে।
রিচার বোন এনা শর্মা যদিও সঞ্জয় এবং রিচার সম্পর্ক ভাঙনের কারণ হিসাবে দায়ী করেন মাধুরীকে। ১৯৯২ সালে এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেন তিনি।
যদিও রিচার সঙ্গে সঞ্জয়ের আইনি বিচ্ছেদের সুযোগ হয়নি। ১৯৯৬ সালে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রিচা। মাধুরীর সঙ্গেও সঞ্জয়ের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি।
১৯৯৩ সালে সঞ্জয় যখন জেলবন্দি হন, সে সময় অভিনেতার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেন মাধুরী। হেফাজতে থাকাকালীন সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখাও করতে যাননি অভিনেত্রী।
১৯৯৩ সালের অক্টোবর মাসে কম সময়ের জন্য জামিনে ছাড়া পান সঞ্জয়। মাধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তখন মুখ খোলেন অভিনেতা। সঞ্জয় জানান, মাধুরী শুধুমাত্র তাঁর সহ-অভিনেত্রী এবং ভাল বন্ধু।
সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমার আর মাধুরীর সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম কথা রটেছে। আমি তার জন্য দুঃখিত। মাধুরীর কাছে আমি এ বিষয়ে ক্ষমাও চেয়েছি। আমরা দু’জন শুধুমাত্র ভাল বন্ধু।’’