গায়ক আদনান সামির সঙ্গে নাগরিকত্বের বিতর্ক আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে। ২০১৬ সালে শোনা গিয়েছিল যে, আদনান নাকি পাকিস্তান থেকে এসে ভারতে নাগরিকত্ব নিয়েছেন। সাত বছর কেটে যাওয়ার পরেও নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। পাকিস্তানের এক অভিনেত্রীকে বিয়ে করেছিলেন আদনান। তবে সে সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। চার বছর সংসার করেই বিচ্ছেদের পথে হাঁটা দেন আদনান এবং জ়েবা বখতিয়ার।
১৯৯৩ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে আদনানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন জ়েবা। উর্দু ধারাবাহিক এবং ছবির পাশাপাশি তত দিনে হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করে পরিচিতি তৈরি করে ফেলেছিলেন জ়েবা।
বলিপাড়ায় ১৯৯১ সালে কাজ শুরু করেন জ়েবা। রণধীর কপূর পরিচালিত এবং প্রযোজিত ‘হেনা’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। ঋষি কপূরের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
‘হেনা’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর বলিজগতে ডাকসাইটে সুন্দরী নায়িকা হিসাবেই নামডাক হয়ে যায় জ়েবার। তার পরেও গুটিকতক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
কিন্তু অভিনয়ের মাধ্যমে জ়েবা যে পরিমাণ পরিচিতি পেয়েছেন, তার থেকেও বেশি পরিচিতি পেয়েছেন তাঁর জীবনের সম্পর্কগুলি নিয়ে। বার বার সম্পর্কে জড়িয়ে বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন অভিনেত্রী।
‘হেনা’ মুক্তি পাওয়ার দু’বছরের মধ্যেই আদনানের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন জ়েবা। জ়েবার চেয়ে ন’বছরের ছোট ছিলেন আদনান। বয়সের ফারাক থাকা সত্ত্বেও জ়েবার প্রেমে পড়েন আদনান।
১৯৯৩ সালে জ়েবাকে বিয়ে করেন আদনান। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক চার বছরও টেকেনি। তার মধ্যেই দু’পক্ষ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। আদনান এবং জ়েবার এক পুত্রসন্তানও রয়েছে।
১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর পাকিস্তানে জন্ম জ়েবার। পাকিস্তানি ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের কেরিয়ার গড়ার পথে হাঁটা শুরু করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ‘আনারকলি’ ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে বহুল প্রশংসা কুড়োন নায়িকা।
তার পরেই হিন্দি ফিল্মজগতে অভিনয়ের সুযোগ পান জ়েবা। হিন্দি ছবিতে প্রথম নায়ক হিসাবে ঋষি কপূরের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি।
তবে অভিনয় শুরু করার আগেই গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন জ়েবা। ১৯৮২ সালে সলমন ভল্লিয়ানি নামে এক পাকিস্তানিকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর কন্যাসন্তানেরও জন্ম দেন অভিনেত্রী।
কিন্তু কন্যাসন্তান জন্মের পর জ়েবার সঙ্গে সলমনের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। পরে এই দম্পতি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বিচ্ছেদের পর তাঁদের কন্যাসন্তানকে জ়েবার বোন দত্তক নেন।
হিন্দি ফিল্মজগতে আসার আগে কৌতুকাভিনেতা জাভেদ জাফ্রিকে বিয়ে করেন জ়েবা। ১৯৮৯ সালে জাভেদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অভিনেত্রী। কিন্তু বিয়ের খবর পুরোপুরি গোপন রেখেছিলেন জাভেদ।
পরে জ়েবা নিজেই তাঁর সঙ্গে জাভেদের বিয়ের কথা জনসমক্ষে প্রকাশ করেন। জাভেদও বিয়ের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু তাঁদের বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। বিয়ের এক বছরের মাথায় বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের।
ইতিমধ্যেই পাকিস্তানি ধারাবাহিকে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন জ়েবা। গায়ক আদনানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন জ়েবা। জাভেদের সঙ্গে বিচ্ছেদের তিন বছরের মধ্যে আদনানকে বিয়ে করেন তিনি।
আদনানকে বিয়ের পরেও কয়েকটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জ়েবা। কিন্তু ‘হেনা’ তাঁকে যে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল, তার ছিটেফোঁটাও আর মেলেনি জ়েবার ভাগ্যে।
বলিউড ছেড়ে আবার পাকিস্তানে ফিরে যান জ়েবা। সেখানে গিয়ে বড় পর্দা এবং ধারাবাহিকে কাজ করতে থাকেন তিনি। পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করে ফেলেন অভিনেত্রী।
১৯৯৫ সালে একটি উর্দু ছবি পরিচালনাও করেন জ়েবা। কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও আদনানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক টেকেনি। ১৯৯৭ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
তার পর অভিনয় নিয়েই নিজেকে আরও ব্যস্ত করে ফেলেন জ়েবা। অভিনয়ের পাশাপাশি ছবি পরিচালনা এবং প্রযোজনাও করেন তিনি।
২০০৮ সালে পাকিস্তানের বাসিন্দা সোহেল খান লেঘরিকে বিয়ে করেন জ়েবা। ১৫ বছর ধরে সোহেলের সঙ্গে ঘর করছেন জ়েবা।