সত্তরের দশক থেকে শ্রীদেবী হোক বা নব্বইয়ের দশক থেকে মাধুরী দীক্ষিত, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন, বলিপাড়ায় হিট ছবি উপহার দিয়েছেন বহু অভিনেত্রী। দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভট্টের মতো নায়িকারাও বাদ পড়েননি। এই অভিনেত্রীরা সকলেই একের পর এক হিট ছবি উপহার দিলেও ব্যবসার ক্ষেত্রে বলিউডে ১০০ কোটি টাকার ক্লাবে কোন অভিনেত্রীর নাম স্বর্ণাক্ষরে উজ্জ্বল রয়েছে তা জানেন কি?
বর্তমানে কোনও ছবি ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে চাইলে তার পথ আগের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে সহজ হয়েছে বলে বলিপাড়ার একাংশের দাবি।
সত্তর থেকে নব্বইয়ের দশকের মধ্যে কোনও হিন্দি ছবি যদি ১০০ কোটির ক্লাবে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলত, তবে তা সত্যিই বিরাট বড় সাফল্য বলে ধরা হত।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, আগেকার দিনে দর্শক ছবিকে শুধুমাত্র বিনোদন এবং খানিকটা বিলাসিতার উপাদান হিসাবেও মনে করতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সেই ধারণা বদলাতে শুরু করে।
অনেকে আবার টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির কারণকেও ১০০ কোটির ক্লাবে নাম লেখানোর পথ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। একাংশের ধারণা, আগে টিকিটের দামের সঙ্গে বর্তমান দামের তুলনা করলে আকাশপাতাল পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
টিকিটের দাম কম থাকলেও রাজ কপূর, অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খন্নার মতো অভিনেতার ছবি দেখতেও প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমাতেন দর্শক।
তবে আশির দশকেও ১০০ কোটি টাকার ক্লাবে নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন বলিপাড়ার এক অভিনেত্রী। কিন্তু তিনি তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের তালিকায় ছিলেন না।
১৯৮২ সালে বব্বর সুভাষের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ ছবিটি। এই ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তীকে।
মিঠুনের বিপরীতে ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন কিম যশপাল। বলিপাড়ায় ১০০ কোটির ক্লাবে অভিনেত্রীদের মধ্যে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে প্রথম লিখিয়েছিলেন তিনি।
‘ডিস্কো ড্যান্সার’ ছবিতে অভিনয় করেই ১০০ কোটি টাকার ক্লাবে নাম লিখিয়েছিলেন কিম।
মডেলিং এবং পত্রিকার প্রচ্ছদের জন্য ফোটোশুটের মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কিম। অভিনেত্রীর আসল নাম সত্যকিম যশপাল।
অভিনয়ে সুযোগ পেলেও পার্শ্বচরিত্রে দেখতে পাওয়া যেত কিমকে। ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ ছবির মাধ্যমেই কেরিয়ারে সাফল্যের সিঁড়িতে এক লাফে অনেক ধাপ এগিয়ে যান তিনি।
‘নসীব’, ‘ফির ওহি রাত’, ‘বুলন্দি’র মতো হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে বলিপাড়ায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন কিম। ১৯৮০ সাল থেকে বলি অভিনেতা ড্যানি ডেনজংপার সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন তিনি।
পেশার সূত্রে পরিচয় হলেও ড্যানি এবং কিমের বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়ে প্রেমে পরিণত হয়। দুই তারকা সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ড্যানির সঙ্গে একত্রবাস করতেন কিম। কিন্তু তাঁদের ভালবাসার সম্পর্ক কোনও পরিণতি পায়নি।
সাত বছর সম্পর্কে থাকার পর ড্যানির সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় কিমের। ১৯৯০ সালে সিকিম রাজবংশের গাওয়াকে বিয়ে করেন ড্যানি।
১৯৯৩ সালে অভিনয়জগৎ থেকে অবসর নিয়ে নেন কিম। আলোকচিত্রীদের নজরেও কখনও পড়েননি তিনি। ১০০ কোটির ক্লাবে প্রথম নাম লেখানো অভিনেত্রী বর্তমানে বলিপাড়া থেকে ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছেন।