নব্বইয়ের দশকে বলিপাড়ায় নিজের কেরিয়ার গড়ে তুলেছিলেন রবীনা টন্ডন। একের পর এক সফল হিন্দি ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বলিপাড়ায় যে রাজনীতি চলে এবং অভিনেত্রী যে তার শিকার হয়েছেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করলেন রবীনা।
রবীনা সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি যখন কেরিয়ারে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছন, তখন রাজনীতির শিকার হন। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘আমি সব সময় স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস রেখেছি। আমার মনে হয় এই ধরনের প্রতিযোগিতা থাকলে এক জন তাঁর সেরাটা দিতে পারেন। কিন্তু বলিউডে সবাই এক রকম ভাবতেন না।’’
বলিপাড়ার অভিনেত্রী করিশ্মা কপূরের নাম উল্লেখ করে রবীনা জানান, করিশ্মার সঙ্গে তাঁর তুমুল প্রতিযোগিতা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমি এবং করিশ্মা একই ধারার ছবিতে, একই রকমের চরিত্রে অভিনয় করতাম। এমনকি নাচের শৈলীও প্রায় একই ধরনের ছিল আমাদের।’’ কিন্তু করিশ্মার সঙ্গে নাকি সম্পর্কের সমীকরণ সরল ছিল না রবীনার।
১৯৯৬ সালে ডেভিড ধওয়ানের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘সাজন চলে সসুরাল’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন গোবিন্দ, করিশ্মা কপূর, তব্বু প্রমুখ।
সাক্ষাৎকারে রবীনা জানান, ‘সাজন চলে সসুরাল’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের কথা ছিল তাঁর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর পরিবর্তে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় করিশ্মাকে।
১৯৯৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বিজয়পথ’ ছবিটি। এই ছবিতে অজয় দেবগনের বিপরীতে অভিনয় করেন তব্বু।
‘বিজয়পথ’ ছবিতেও নাকি অভিনয়ের প্রস্তাব প্রথমে দেওয়া হয় রবীনাকে। সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, পরে কোনও অজানা কারণে রবীনাকে ছবি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।
রবীনা বলেন, ‘‘তব্বু কোনও দিন আমার সঙ্গে রাজনীতি করেনি। ও খুব শান্ত প্রকৃতির মানুষ। তবে বাকিদের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।’’
করিশ্মাকে পরোক্ষ ভাবে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি রবীনা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনও দিনও এমন বলিনি যে নবাগতা তারকাদের সঙ্গে কাজ করব না বা নতুন পরিচালকের ছবিতে অভিনয় করব না। আমি নিজেও এই ইন্ডাস্ট্রিতে এক দিন নতুন ছিলাম। সবাইকে সুযোগ দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’’
রবীনার দাবি, তিনি কোনও দিন পেশাগত জীবনে উন্নতির জন্য অন্য অভিনেত্রীর ক্ষতি করেননি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে।
করিশ্মা যে রাজনীতি করে তাঁর কেরিয়ারে প্রভাব ফেলেছেন কথার ভাঁজে বার বার পরোক্ষ ভাবে সে দিকেই ইঙ্গিত দেন রবীনা।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, করিশ্মার সঙ্গে রবীনার সম্পর্ক নাকি কোনও দিনও ভাল ছিল না। একই ছবির শুটিং করতে গিয়েও নাকি সেটের মধ্যে অশান্তি হত দুই অভিনেত্রীর।
১৯৯৪ সালে রাজকুমার সন্তোষীর পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘আন্দাজ় আপনা আপনা’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন আমির খান, সলমন খান, করিশ্মা এবং রবীনা।
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘আন্দাজ় আপনা আপনা’ ছবির সেটে নাকি মাঝেমধ্যেই মতের অমিল হত রবীনা এবং করিশ্মার। দুই তারকার ঝামেলা সহজে থামত না।
বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, মুক্তির আগে ‘আন্দাজ় আপনা আপনা’ ছবির প্রচার সে রকম ভাবে হয়নি। ঠিক মতো প্রচার হলে নাকি ছবিটি বক্স অফিস থেকে আরও আয় করতে পারত।
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘আন্দাজ় আপনা আপনা’ ছবির প্রচার না হওয়ার নেপথ্যে ছিলেন করিশ্মা এবং রবীনা। দুই অভিনেত্রীর মধ্যে এতটাই মন কষাকষি ছিল যে তাঁদের কারণে সকলকে ছবির প্রচারের জন্য এক জায়গায় হাজির করানো যায়নি। তাই ছবির প্রচারই ভাল ভাবে হয়নি।