নব্বইয়ের দশকে বলিপা়ড়ায় সাফল্য ছুঁয়ে ফেলেছিলেন অভিনেত্রী অমৃতা সিংহ। সেই সময় বলিউডের উঠতি অভিনেতা ছিলেন সইফ আলি খান। দুই তারকার মধ্যে পেশাগত দিক থেকে চূড়াসমান পার্থক্য থাকলেও বয়সে ছোট অভিনেতার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন অমৃতা।
কিন্তু সইফকে নিয়ে বলিপাড়ার অন্য এক অভিনেত্রীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অমৃতা। অমৃতার দিকেও কাদা ছুড়তে বাকি রাখেননি বলি নায়িকা।
সইফের কেরিয়ার শুরু হওয়ার কথা ছিল রোম্যান্টিক ঘরানার হিন্দি ছবির মাধ্যমে। সইফের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করতেন কাজল। কিন্তু সইফের অপেশাদারিত্বের কারণে সেই ছবি থেকে বাদ পড়ে যান তিনি।
ছবি থেকে বাদ পড়লেও অভিনয়জগতে নিজের পরিচিতি গড়ার আগে নিজের প্রেমকাহিনি বুনতে শুরু করে দিয়েছিলেন সইফ। ফোটোশুটের সময় তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অমৃতার। প্রথম দেখাতেই অভিনেত্রীর প্রেমে পড়ে যান তিনি।
অমৃতাকে ডেটে যাওয়ার প্রস্তাব দেন সইফ। বাইরের কোনও রেস্তরাঁয় খেতে না গিয়ে অমৃতা তাঁর বাড়িতেই আমন্ত্রণ জানান সইফকে। সিমি গারেওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমৃতা জানান, প্রথম দেখাতেই তাঁর বাড়িতে টানা দু’দিন ছিলেন সইফ।
অমৃতা বলেন, ‘‘দু’দিন থাকার পর সইফকে শুটিংয়ের কাজে যেতে হত। ওর কাছে টাকাপয়সা ছিল না। আমার কাছে ১০০ টাকা ধার চেয়েছিল ও। আমার গাড়িতে করেই ওকে শুটিংয়ের জন্য যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ও কিছুতেই শুনছিল না।’’
পরে অমৃতা অবশ্য বলেন, ‘‘সইফকে বার বার গাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করছিলাম আমি। নেপথ্যে অন্য কারণ ছিল। আর কোনও কারণে না হোক, অন্তত গাড়ি ফেরত দেওয়ার জন্য ওকে আবার আমার সঙ্গে দেখা করতে হত।’’
নব্বই দশকের গোড়ায় আবার কাজলের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পান সইফ। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বেখুদি’ ছবিতে কাজলের বিপরীতে অভিনয়ের প্রস্তাবের সুযোগ পেয়েছিলেন সইফ। কাজলের সঙ্গে একাধিক দৃশ্যের শুটিংও সম্পূর্ণ করে ফেলেছিলেন অভিনেতা।
‘বেখুদি’ ছবির শুটিং চলাকালীন সইফের সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব হয়ে যায় কাজলের। শুটিংয়ের মাঝেও দু’জনের মধ্যে খুনসুটি চলত। সেই সময় অমৃতার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন সইফ। অমৃতা এবং সইফের সম্পর্কের কথাও জানতেন কাজল।
কানাঘুষো শোনা যায়, শুটিংয়ের মাঝে মজার ছলে কাজল হঠাৎ সইফকে জিজ্ঞাসা করে বসেন, অমৃতার মতো এক জন খারাপ মানুষের সঙ্গে কী ভাবে সম্পর্কে রয়েছেন সইফ? কাজলের এই কথা কোনও ভাবে অমৃতার কানে গিয়ে পৌঁছয়।
পরে ‘বেখুদি’ ছবি থেকে সইফকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। সইফের পরিবর্তে কাজলের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় কমল সাদানাকে। এর পরেই কাজলের বিরুদ্ধে জনসমক্ষে মন্তব্য করে বসেন অমৃতা।
অমৃতার বিষয়ে কাজল যা যা সইফকে বলেছিলেন, তা পুরোটাই প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন অমৃতা। অমৃতার দাবি, সইফের সঙ্গে শুটিং করার সময়ই অভিনেতার প্রেমে পড়ে যান কাজল।
সইফকে যে ‘বেখুদি’ ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তা মেনে নিতে পারেননি কাজল। তাই রাগের বশে অমৃতা সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য করে ফেলেছেন বলে দাবি করেন অমৃতা।
১৯৯১ সালে অমৃতাকে বিয়ে করেন সইফ। জীবনসঙ্গীর চেয়ে বয়সে বড় হওয়ার কারণে কটাক্ষের শিকার হন অমৃতা। এই প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে অমৃতা বলেন, ‘‘সইফ আমার থেকে যতই ছোট হোক না কেন, ও ভীষণ ধৈর্যশীল। সেই কারণেই আমরা একসঙ্গে থাকতে পেরেছি।’’
বিয়ের পর দুই সন্তানের জন্ম দেন অমৃতা। তবে, অমৃতা এবং সইফের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। ২০০৪ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় সইফ-অমৃতার। ২০১২ সালে করিনা কপূরকে বিয়ে করেন সইফ।
তৈমুর এবং জাহাঙ্গির— দুই পুত্রসন্তান নিয়ে করিনার সঙ্গে সংসার করছেন পটৌডির নবাব সইফ। প্রথম পক্ষের সন্তানদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন তিনি। খান পরিবারের যে কোনও অনুষ্ঠানেই সইফ-অমৃতার দুই সন্তান— সারা আলি খান এবং ইব্রাহিম আলি খানকে দেখা যায়।