বলি পাড়ার অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীই প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বেশ কিছু দিন চর্চায় থাকার পর ইতি হয় বেশির ভাগ সম্পর্কেরই। আবার কখনও বিয়েতে পরিণতিও পায় সেই সম্পর্ক।
সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পর বেশির ভাগ তারকাই তাঁদের প্রাক্তন সম্পর্কে বিশেষ কিছু জনসমক্ষে বলেন না। মুখোমুখি দেখা হয়ে গেলেও অনেকক্ষেত্রেই একে অপরকে এড়িয়ে যাওয়াতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।
তবে বলিউডে এমন কিছু তারকা আছেন যাঁরা সম্পর্কের বিচ্ছেদের পর প্রাক্তনদের উপর সমস্ত রাগ এবং ক্ষোভ জনসমক্ষেই প্রকাশ করেছেন। জেনে নিন তেমনই আট তারকার কথা।
এই তালিকায় প্রথমেই যাঁর নাম রয়েছে তিনি অভিনেতা অক্ষয় কুমারের প্রাক্তন প্রেমিকা শিল্পা শেট্টি। বলিউডের ‘খিলাড়ি’ টুইঙ্কল খান্নার সঙ্গে বিয়ে করার আগে চুটিয়ে প্রেম করতেন শিল্পার সঙ্গে। তাঁরা বিয়ে করবেন বলেও বলি মহলে কানাঘুষোয় শোনা যেত। কিন্তু হঠাৎই শিল্পাকে ছেড়ে টুইঙ্কলের সঙ্গে প্রেম শুরু করেন অক্ষয়। অক্ষয়-টুইঙ্কলের প্রেমের রসায়ন প্রকাশ্যে আসতেই রেগে আগুন হন শিল্পা। তিনি দাবি করেন, অক্ষয় তাঁকে ঠকিয়েছেন। জনসমক্ষেই দুষতে শুরু করেন অক্ষয়কে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘অক্ষয় আমাকে ব্যবহার করেছে এবং অন্য এক জনকে পাওয়ার পর নিজের সুবিধামতো আমাকে জীবন থেকে বাদ দিয়েছে। আমার রাগ একমাত্র অক্ষয়ের উপরেই। আমি নিশ্চিত সে ভবিষ্যতে কর্মফল সব ফিরে পাবে। এত তাড়াতাড়ি অতীত ভুলে যাওয়া সহজ নয়। কিন্তু আমি এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পেয়েছি। তবে আমি আর কখনও অক্ষয়ের বিপরীতে কোনও সিনেমায় কাজ করব না।’’
শিল্পা আরও জানান, ‘ধড়কন’ সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করার সময় টুইঙ্কলের সঙ্গে অক্ষয়ের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। কিন্তু সিনেমার শ্যুটিং চলাকালীন টুঁ শব্দ করেননি শিল্পা। তাঁদের সম্পর্কের কারণে যাতে প্রযোজকদের হয়রানির শিকার না হতে হয় তাই শ্যুটিং শেষ হওয়া অবধি কষ্ট চেপে রাখার সিদ্ধান্ত নেন বলেও জানান শিল্পা।
বলিউডে পা দেওয়ার পরই অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের নাম জড়িয়ে পরে পরিচালক সাজিদ খানের সঙ্গে, কিন্তু খুব শীঘ্রই তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর পরই সাজিদ জানান, জ্যাকলিন তাঁকে খুব বিরক্ত করতেন। আর সেটাই তাঁদের বিচ্ছেদ হওয়ার প্রধান কারণ।
সাজিদ আরও জানান, ২০১৩ সালে ইতি হলেও তাঁদের সম্পর্কে তিক্ততা শুরু হয়েছিল ২০১২ সালের শেষ থেকেই। জ্যাকলিনের সমস্ত কাজে বাগড়া দেওয়ার স্বভাবের জন্য তিনি মন দিয়ে কাজ করতে পারছিলেন না বলেও সাজিদ জানান। সাজিদের পরিচালনায় তৈরি ‘হিম্মতওয়ালা’-র খারাপ ব্যবসার জন্যও তিনি জ্যাকলিনকে দায়ী করেন।
তিতিবিরক্ত হয়ে প্রাক্তন প্রেমিক তথা ব্যবসায়ী নেস ওয়াদিয়ার বিরুদ্ধে থানা-পুলিশও করেছিলেন অভিনেত্রী প্রীতি জিন্টা। পুলিশের কাছে অভিযোগ করে তিনি জানান, নেস নাকি তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘‘নেস আমাকে দুনিয়া থেকে গায়েব করে দেওয়ার ভয় দেখাত। নেস নিজেকে খুব শক্তিশালী ব্যক্তি বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন। আমি আমার জীবনে শান্তি চেয়েছিলাম বলে অনেক দিন মুখ বুজে সব সহ্য করেছি। খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মুম্বইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নেস আমাকে মারধর করার পর আমি আর চুপ থাকতে পারিনি। মৃত্যুভয় আমাকে গ্রাস করেছিল।’’
এর পর পরই নেসের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন প্রীতি।
করিনা কপূরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁকে ছেড়ে কথা বলেননি শহিদ কপূর। জনসমক্ষে করিনাকে ‘পশু’র সঙ্গেও তুলনা করেন শহিদ।
তিনি বলেন, ‘‘আমি আবার ওঁর (করিনা) সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি মনে করি আমার প্রযোজক যদি আমাকে গরু বা মহিষের সঙ্গেও প্রেম করতে বলেন, তা হলে তা-ও আমাকে করতে হবে। কারণ অভিনেতা হিসেবে সেটাই আমার কাজ।’’
তবে শহিদের এই মন্তব্য খুবই অসম্মানজনক বলেও মনে করেছিলেন অনেকে।
প্রকাশ্যে প্রাক্তন স্ত্রী অমৃতা সিংহের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সইফ আলি খানও। ঠিক কী কারণে অমৃতার সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়েছিল? জবাবে সইফ বলেন, ‘‘অভিনেতা হিসেবে আমি মূল্যহীন বলে আমাকে সবসময় খোঁটা দেওয়া হত।’’
অমৃতা তাঁর মা এবং বোনকেও কটূক্তি করতেন বলে সইফ দাবি করেছিলেন। এমনকি, অমৃতা তাঁর মা এবং বোনকে গালিগালাজ করতেন বলেও তিনি জানান। বিষয়টি তাঁর কাছে অসহ্য হয়ে দাঁড়লে তার পর তিনি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন বলেই তিনি জানান।
কঙ্গনা রানাউত এবং হৃতিক রোশনের সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বিতর্ক ব্যক্তিগত আক্রমণের রূপ নেয় তাঁদের বিচ্ছেদের পর। তিক্ততা এতটাই মাত্রা ছাড়িয়েছিল যে হৃতিক এক বার মন্তব্য করেছিলেন যে, কঙ্গনার সঙ্গে প্রেম করার থেকে নাকি পোপের সঙ্গে প্রেম করা অনেক ভাল।
তাঁদের বিচ্ছেদ-বিতর্ক নিয়ে কথা বলার সময় হৃত্বিক মন্তব্য করেন, ‘‘অনেক গুজব ছড়াচ্ছে। এক জন বোকা মানুষও বলতে পারবে যে এই গুজবগুলি কোথা থেকে আসছে। আমি জানি না কেন প্রাক্তনরা দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এ রকম নির্বোধের মতো কাজ করে।’’
‘কুইন’ কঙ্গনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল শেখর সুমন-পুত্র অধ্যয়নেরও। বিচ্ছেদ হওয়ার পর অধ্যয়ন দাবি করেন, কঙ্গনা তাঁর উপর ‘কালোজাদু’ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘‘বিদেশে পড়াশোনা করার এবং শহরে মানুষ হওয়ার সুবাদে আমি জ্যোতিষশাস্ত্র এবং কালোজাদুতে বিশ্বাস করতাম না। আমাকে এক ভবিষ্যৎবক্তা বলেন যে এক জন পাহাড়ি মহিলা আমার উপর কালোজাদু করছে। আমি তখন শুধু একজন পাহাড়ি মহিলাকেই চিনতাম। আমার প্রেমিকা কঙ্গনা। কঙ্গনা নির্দিষ্ট পুজোর জন্য মাঝে মধ্যেই হিমাচল যেতেন। আমাকে ওই ভবিষ্যৎবক্তা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতেও বলেন।’’
প্রাক্তন প্রেমিক রণবীর কপূরের উপর একহাত নিয়েছিলেন অভিনেত্রী দীপিকা পাদুকোনও। ‘কফি উইথ কর্ণ’-তে এসে তিনি রণবীরের নাম না করে বলেন, ‘‘ওঁর (পড়ুন রণবীরের) কন্ডোম সংস্থার বিজ্ঞাপনের মুখ হওয়া উচিত। মানুষ একটি ভুল করলে তাকে ভুল বলা যায়। কিন্তু বার বার একই ভুল হলে তা সমস্যার সৃষ্টি করে।’’