পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ষাটের দশকের প্রথম দিক পর্যন্ত হিন্দি সিনেমাজগতে নায়কদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সুনীল দত্ত। বহু হিট ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার কাজেও হাত লাগিয়েছিলেন তিনি।
বলিপাড়ায় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন সুনীলের পুত্র সঞ্জয় দত্তও। দর্শকের প্রিয় ‘সঞ্জুবাবা’ হয়ে ওঠেন তিনি।
সুনীল এবং সঞ্জয়— দত্ত পরিবারের এই পিতা-পুত্র জুটির নামডাক হলেও অভিনেতা হয়ে আলোর রোশনাইয়ের আড়ালে থেকে গিয়েছেন ওই পরিবারের এক সদস্য।
সুনীল দত্ত যখন তাঁর প্রযোজনা সংস্থা খুলেছিলেন তখন তাঁর সঙ্গে সহকারী হিসাবে কাজ করেছিলেন সুনীলের ভাই সোম দত্ত।
‘ইয়ে রাস্তে হ্যায় প্যার কে’, ‘মুঝে জীনে দো’ এবং ‘ইয়াদে’র মতো বহু হিন্দি ছবির প্রযোজনা করেন সুনীল। তাঁর সঙ্গে সহ-প্রযোজক হিসাবে কাজ করতেন সোম।
সুনীলের সঙ্গে প্রযোজনার কাজ করতে করতে সে দিকেই আগ্রহ তৈরি হয়ে যায় সোমের। ছবি নির্মাণের তুলনায় প্রযোজনার কাজই বেশি পছন্দ ছিল তাঁর।
প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয়ের দিকেও ঝুঁকতে শুরু করেন সোম। ভাইকে অভিনয়ে নামাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন সুনীল।
১৯৬৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘মন কা মীত’ নামের হিন্দি ছবিটি। এই ছবিতে সোমকে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন সুনীল।
‘মন কা মীত’ ছবিতে লীনা চন্দ্রভরকরের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় সোমকে। কিশোর কুমারের চতুর্থ স্ত্রী ছিলেন লীনা।
সোমের সঙ্গে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বিনোদ খন্নাও। ‘মন কা মীত’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন বিনোদও। খলনায়কের ভূমিকায় দেখা যায় বিনোদকে।
‘মন কা মীত’ ছবি বক্স অফিসে হিট হয়। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করলেও জনপ্রিয়তা পেলেন না সোম। তার পরিবর্তে পরিচিতি তৈরি হয়ে যায় বিনোদ এবং লীনার।
বিনোদ এবং লীনা দু’জনের কাছেই একের পর এক ছবির প্রস্তাব আসতে থাকে। কিন্তু সোম থেকে যান রোশনাইয়ের আড়ালে। মোট ২২টি ছবিতে অভিনয় করলেও সোমের একটি ছবিও ব্যবসা করতে পারেনি।
শেষ পর্যন্ত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সোম। প্রযোজনার কাজও ছেড়ে দেন তিনি। টিনসেল নগরী ছেড়ে পাড়ি দেন নিজের গ্রামের বাড়িতে।
হরিয়ানার জামনগরের মান্ডোলি গ্রামে চলে যান সোম। সেখানেই নিজের শেষ জীবন কাটান তিনি। দীর্ঘকালীন অসুস্থতার কারণে ২০১৫ সালে মারা যান সোম।
দত্ত পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হয়েও সোম অভিনেতা হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি। তাঁর এক পুত্র এবং দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। তিন জনই অভিনয়জগৎ থেকে শতহস্ত দূরে।