এক দিকে শাহরুখ খান, বলিপাড়ার ‘কিং খান’। অন্য দিকে আমির খান, বলিপাড়ার ‘পারফেকশনিস্ট’। এই দুই খান তাঁদের কেরিয়ারের ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবি যেমন পুরেছেন ঠিক তেমন দর্শকের মনের কুঠুরিতেও জায়গা করে নিয়েছেন। তবে আমির তাঁর কেরিয়ারের হিট ছবিগুলিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন শাহরুখের কারণেই।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘লগান’, ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর মতো হিন্দি ছবিতে আমিরকে অভিনয় করতে দেখা গেলেও সেই ছবিগুলির জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ। অভিনয়ের প্রস্তাব শাহরুখ ফিরিয়ে দেওয়ায় আমিরের ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে। শাহরুখের ফিরিয়ে দেওয়া একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন আমির। এই ছবিগুলি আমিরের কেরিয়ারের পথে এক একটি মাইলস্টোন গড়ে তোলে।
২০০১ সালে আশুতোষ গোয়ারিকরের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘লগান’ ছবিটি। স্পোর্টস ড্রামা ঘরানার এই ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে বহুল প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন আমির।
আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রশংসা পেয়েছিল ‘লগান’ ছবিটি। কিন্তু এই ছবির নির্মাতারা মুখ্যচরিত্রের জন্য প্রথমে আমিরকে পছন্দ করেননি। তাঁদের প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ।
কানাঘুষো শোনা যায়, শুটিংয়ের জন্য সময় পাননি বলে ‘লগান’ ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন শাহরুখ। তার পর আমিরের কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়। শোনা যায়, তিনিও নাকি এই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
পর পর দু’বার ‘লগান’ ছবিতে অভিনয় করতে আপত্তি জানান আমির। কিন্তু চিত্রনাট্য, সংলাপ শোনার পর তা আমিরের পছন্দ হয় এবং ছবিতে অভিনয়ের জন্য রাজি হন তিনি।
চেতন ভগতের কলমে ‘ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান’ উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিটি। ২০০৯ সালে রাজকুমার হিরানির পরিচালনায় মুক্তি পায় এই ছবিটি। আমিরের পাশাপাশি আর মাধবন, শরমন জোশী, করিনা কপূর খান, বোমান ইরানির মতো তারকারা এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
আমিরের কেরিয়ারে ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিটি একটি মাইলস্টোন হয়ে রয়েছে। তবে এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের জন্য ছবি নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ।
কিন্তু শাহরুখ অন্য ছবির কাজে ব্যস্ত থাকায় ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর শুটিংয়ের জন্য সময় বার করতে পারেননি। তাই রাজকুমারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন।
শাহরুখ ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর সমস্যায় পড়েন রাজকুমার। শেষে আমিরের কাছে যান তিনি। ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় আমিরকে।
‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির চিত্রনাট্যের খসড়া শুনে মনে ধরে আমিরের। রাজকুমারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান তিনি। শাহরুখ এই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার কারণেই আমিরের কেরিয়ারে একটি সফল ছবি যুক্ত হয়।
২০১২ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘তালাশ: দ্য আন্সার লায়েস উইদিন’ ছবিটি। এই ছবিতে পুলিশ ইনস্পেক্টরের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় আমিরকে। আমিরের পাশাপাশি করিনা কপূর খান, রানি মুখোপাধ্যায়, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির মতো তারকারাও অভিনয় করেছিলেন এই ছবিতে।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘তালাশ: দ্য আন্সার লায়েস উইদিন’ ছবির পরিচালক-প্রযোজকেরা মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথমে পছন্দ করেছিলেন শাহরুখকে। অভিনেতার কাছে প্রস্তাবও নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, সাসপেন্স থ্রিলার ঘরানার ছবিতে অভিনয় করে ইনস্পেক্টরের চরিত্রটি পর্দায় ঠিক মতো ফুটিয়ে তুলতে পারবেন কি না তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না শাহরুখ। তাই এই ছবির প্রস্তাব খারিজ করে দেন তিনি। তার পর আমির সেই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজি হন।
২০০৬ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা পরিচালিত ‘রং দে বসন্তী’ ছবিটি। আমিরের পাশাপাশি সোহা আলি খান, সিদ্ধার্থ, শরমন জোশী, আর মাধবনের মতো অভিনেতারা এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
কানাঘুষো শোনা যায় ‘রং দে বসন্তী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যও শাহরুখকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাকেশ। তবে আমির যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সে চরিত্রে নয়।
‘রং দে বসন্তী’ ছবিতে অজয়সিংহ রাঠৌরের চরিত্রাভিনেতা হিসাবে দেখা গিয়েছে মাধবনকে। শাহরুখকে এই চরিত্রের জন্য পছন্দ করেছিলেন রাকেশ। কিন্তু শাহরুখ এই ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হননি।
বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, আমিরের সহ-অভিনেতা হিসাবে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে হবে বলেই এই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শাহরুখ। পরে এই চরিত্রের জন্য মাধবনকে প্রস্তাব দেন রাকেশ এবং পরিচালকের প্রস্তাবে রাজিও হন অভিনেতা।