সোমবার সকালে শাহরুখ খানের ছবি ‘জওয়ান’-এর প্রথম ঝলক মুক্তি পেয়েছে। প্রথম ঝলকেই শাহরুখ সকলের মন জিতে নিয়েছেন। তবে অভিনেতার প্রসঙ্গে বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত এক সাংবাদিক যে মন্তব্য করেছেন তা প্রকাশ্যে আসার পর শাহরুখকে নিয়ে বলিপাড়ায় অন্য চর্চা শুরু হয়েছে।
সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় নিজের প্রশংসা ছাড়া শাহরুখ নাকি অন্য কোনও তারকার, বিশেষত বলিপাড়ার অন্য কোনও নায়কের প্রশংসা করতে রাজি হন না। নায়িকাদের সঙ্গেই নাকি সাক্ষাৎকার দিতে বেশি পছন্দ করেন অভিনেতা।
সম্প্রতি অনুপম চোপড়ার একটি পডকাস্টে (অনলাইন মাধ্যমে প্রাপ্ত একটি ধারাবাহিকের পর্বে) শাহরুখ সম্পর্কে কিছু না-জানা কথা ভাগ করে নেন ওই সাংবাদিক। নিজের পেশাগত জীবনের কিছু পুরনো অভিজ্ঞতা নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি।
‘রাউন্ডটেবিল ইন্টারভিউ’ বা একসঙ্গে বহু তারকার সাক্ষাৎকার নেওয়ার আয়োজন করেছিলেন ওই সাংবাদিক। সেই সূত্রে শাহরুখের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। তিনি চেয়েছিলেন বলিপাড়ার অন্য তারকাদের সঙ্গে বসে শাহরুখ সাক্ষাৎকার দিন। কিন্তু প্রস্তারব শুনে বেঁকে বসেন শাহরুখ।
ওই সাংবাদিকের দাবি, সাক্ষাৎকার দেওয়ার আগে একাধিক শর্ত রেখেছিলেন শাহরুখ। অভিনেতা বলেছিলেন, ‘‘আমি শুধুমাত্র নায়িকাদের সঙ্গে বসে সাক্ষাৎকার দেব। আমার সঙ্গে যেন কোনও অভিনেতা উপস্থিত না থাকেন।’’
শাহরুখের শর্ত শুনে খানিকটা অবাক হয়ে যান ওই সাংবাদিক। শাহরুখ নাকি আরও বলেন, ‘‘আমি সাক্ষাৎকারে অন্য নায়কের প্রশংসা করতে রাজি নই। গোলটেবিল সাক্ষাৎকারে আমাকে ডাকলে আমি নায়িকাদের মাঝে বসব।’’
বলিপাড়ায় যে অভিনেতার প্রশংসা সকলে করেন, যাঁর অভিনয় থেকে শুরু করে আচার-আচরণ নিয়েও গুণমুগ্ধ বলিউডের অধিকাংশ তারকা, সেই শাহরুখই নাকি অন্য অভিনেতার প্রশংসা করতে আপত্তি জানাচ্ছেন? তবে কি শাহরুখ এত বড় তারকা হয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন? বার্তালাপের শেষে অবশ্য এমন শর্ত রাখার কারণও রাজীবকে জানালেন শাহরুখ।
অন্য অভিনেতাদের সঙ্গে কেন শাহরুখ সাক্ষাৎকার দিতে রাজি নন তার কারণ জানিয়ে অভিনেতা নাকি বলেন, ‘‘আমি অন্য অভিনেতাদের প্রশংসা করতে কেন রাজি নই জানেন? আমার মনে হয় অভিনেতাদের মধ্যে অহং কারবোধ কাজ করে।’’
পুরনো অভিজ্ঞতা ভাগ করে ওই সাংবাদিক জানান, হলিউডের ক্ষেত্রে স্টুডিয়োর তরফে গোলটেবিল সাক্ষাৎকারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বলিপাড়ার তারকারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা কখন, কার সঙ্গে সাক্ষাৎকার দেবেন।
সাক্ষাৎকারের জন্য বলিপাড়ার এক খ্যাতনামী অভিনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ওই সাংবাদিক। অভিনেতার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে অন্য এক অভিনেতাকেও ডাকার কথা ছিল আমার। কিন্তু উনি বলেন নবাগত অভিনেতাকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি সাক্ষাৎকার দেবেন না।’’
ওই সাংবাদিক দাবি করেন, নবাগত অভিনেতা কম সময়ের মধ্যেই বলিপাড়ায় নিজের পরিচিতি তৈরি করেছিলেন। সাক্ষাৎকারের জন্য তিনিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই নবাগত অভিনেতাকে কোনও ভাবে বাদ দিতে পারতেন না রাজীব।
জনপ্রিয় অভিনেতাকে সাংবাদিক বলেন, ‘‘আমি নবাগত অভিনেতাকে ডাকবই। কারণ উনিও আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি মনে করেন ওঁকে আমন্ত্রণ করলে আপনি আসবেন না, সেটা পুরোপুরি ভাবে আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’’
ওই সাংবাদিকের দাবি, পরে ইন্ডাস্ট্রির নবাগত অভিনেতার সঙ্গেই সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ওই অভিনেতা। এমনকি সমাজমাধ্যমে নিজেদের ছবি পোস্ট করে জানিয়েওছিলেন যে তাঁরা সাক্ষাৎকারের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছেন।
ইরফান খান, আমির খান, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি এবং রণবীর কপূরের মতো অভিনেতাদের একসঙ্গে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক। কিন্তু এই সাক্ষাৎকারের নেপথ্যে রয়েছে অন্য গল্প। তা-ও পডকাস্টে জানিয়েছেন সাংবাদিক।
শেষ মুহূর্তে গিয়ে আমির সাক্ষাৎকারের সময় পরিবর্তনের অনুরোধ করেন। তার পরেই শুরু হয় গন্ডগোল। শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে পরিবর্তিত সময়ে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি ছিলেন না ইরফান।
সেই সময় যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত ‘ডি-ডে’ ছবির শুটিং সেটে ব্যস্ত ছিলেন ইরফান। ফোন করে ইরফান জানান তিনি সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না। তার পর নিজের ফোন বন্ধ করে দেন অভিনেতা।
ইরফানকে ফোনে না পেয়ে ‘ডি-ডে’ ছবির প্রযোজক, পরিচালক-সহ ছবি নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন ওই সাংবাদিক। শেষ পর্যন্ত নিখিল আডবাণীকে ফোনে পেয়ে ইরফানকে সাক্ষাৎকারে আসার জন্য রাজি করান। শুটিংয়ের ফাঁকে সময় বার করে সাক্ষাৎকার দিয়ে যান ইরফান।
শুটিংয়ের ফাঁকে কোনও রকমে সময় বার করে সাক্ষাৎকার দিতে এসেছিলেন নওয়াজ়উদ্দিনও। সাংবাদিক জানান, নওয়াজউদ্দিন বাইরে শুটিং করছিলেন। সাক্ষাৎকার দিয়ে চার ঘণ্টা যাত্রা করে সেটে পৌঁছে পরের দিন শুটিং করেন নওয়াজ।