বিয়ে করার পর যেন বলিপাড়া থেকে একদম উধাও হয়ে গিয়েছেন বিপাশা বসু। কন্যা দেবীকে নিয়ে এখন ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে সব সময় স্বামী কর্ণ সিংহ গ্রোভারের সঙ্গে ছবিও পোস্ট করেন তিনি। কিন্তু বিয়ের সাত বছর কাটতে চলল, তবুও কর্ণের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে বলিপা়ড়ায় চর্চা থামেনি।
ধারাবাহিক জগত থেকে অভিনয় শুরু করেছিলেন কর্ণ। তিন বছর হিন্দি ধারাবাহিকে কাজ করার পর ‘দিল মিল গয়ে’ সিরিয়ালের মাধ্যমে সাফল্যের স্বাদ পান তিনি।
অভিনয় জগতে নিজের পরিচিতি তৈরি হওয়ার পর টেলি অভিনেত্রী শ্রদ্ধা নিগমের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন কর্ণ। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। দশ মাস এক ছাদের তলায় থাকার পর কর্ণের সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন শ্রদ্ধা।
কর্ণ যে ডান্স রিয়্যালিটি শোয়ে প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেই শোয়ে কর্ণের কোরিয়োগ্রাফার ছিলেন নিকোল অ্যালভারেস। নিকোলের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন কর্ণ। পরকীয়া সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসায় কর্ণ এবং শ্রদ্ধার বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
শ্রদ্ধার সঙ্গে বিচ্ছেদের তিন বছর পর সহ-অভিনেত্রী জেনিফার উইঙ্গেটকে বিয়ে করেন কর্ণ। ‘দিল মিল গয়ে’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ের দৌলতে জেনিফারের সঙ্গে আলাপ হয় কর্ণের। দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
জেনিফারের সঙ্গে কর্ণের সম্পর্ক নিয়ে টেলিপাড়ায় আলোচনার বন্যা বয়ে যেত। টেলিভিশনের পর্দায় কর্ণ এবং জেনিফারের জুটি দর্শকের মনে ধরেছিল। তাঁরা বাস্তবেও একসঙ্গে থাকছেন দেখে এই তারকা জুটিকে দর্শকেরা ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন।
কিন্তু কর্ণ এবং জেনিফারের সম্পর্কে চিড় ধরে। জেনিভার জানতে পারেন যে, কর্ণের সঙ্গে নিকোলের আবার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এমনকি, বিচ্ছেদের পরেও প্রাক্তন স্ত্রী শ্রদ্ধার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন কর্ণ।
একই সঙ্গে দুই মহিলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে থাকার কথা জানতে পেরে যান জেনিফার। কর্ণের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকলেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই সময় কর্ণের সঙ্গে ‘দিল মিল গয়ে’ ধারাবাহিকের শুটিং করতেন জেনিফার।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, দু’জনের মধ্যে কথোপকথন বন্ধ থাকায় শুটিং ফ্লোরে একে অপরের সামনেও যেতেন না জেনিফার এবং কর্ণ। এমনকি, শুটিংয়ের সময়ও আলাদা করে নিয়েছিলেন তাঁরা। একসঙ্গে কোনও দৃশ্যে অভিনয় করার না থাকলে তাঁরা শুটিং ফ্লোরে অন্য সময়েই আসতেন।
জেনিফারের সঙ্গে অশান্তি হওয়ার পর শ্রদ্ধা এবং নিকোলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন কর্ণ। নিজের ভুল বুঝেছেন বলে কর্ণকে ক্ষমাও করে দেন জেনিফার। তাঁদের সম্পর্ক আবার জোড়া লাগে। কিন্তু আবার কিছু দিন পর তাঁদের সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির আবির্ভাব হয়।
‘কবুল হ্যায়’ নামের একটি হিন্দি ধারাবাহিকে কাজ করতে শুরু করেন কর্ণ। কানাঘুষো শোনা যায় যে, সেই ধারাবাহিকের প্রযোজক গুল খানের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন কর্ণ।
শুধু প্রযোজকের সঙ্গেই নয়, তাঁর পাশাপাশি ধারাবাহিকের মুখ্য অভিনেত্রী সুরভি জ্যোতির সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক গভীর হতে থাকে কর্ণের।
জেনিফারের কানে কর্ণের সঙ্গে সুরভির সম্পর্কের কথা আসে। শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও শুটিং সেটে সুরভির সঙ্গে কর্ণ সময় কাটাতেন বলে জানতে পারেন জেনিফার।
কর্ণ এবং সুরভিকে হাতেনাতে ধরবেন বলে এক দিন সোজা শুটিং ফ্লোরে পৌঁছে যান জেনিফার। সেখানে গিয়ে দু’জনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন অভিনেত্রী। রাগ সামলাতে না পেরে কর্ণের গালে সপাটে চড় মারেন জেনিফার।
প্রথম বার ক্ষমা করে দিলেও দ্বিতীয় বার একই ভুলে ক্ষমা করতে পারেননি জেনিফার। তাঁর সঙ্গে একই ছাদের তলায় থেকেও বার বার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কারণে কর্ণের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন জেনিফার।
দু’বছর সংসার করার পর ২০১৪ সালে কর্ণ এবং জেনিফারের বিচ্ছেদ হয়। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, বিপাশা বসুর সঙ্গে ‘অ্যালোন’ ছবিতে কাজ করার সময় তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কর্ণ। সেই কারণেই নাকি কর্ণকে ডিভোর্স দেন জেনিফার।
২০১৫ সালে ‘অ্যালোন’ নামের হরর ঘরানার হিন্দি ছবিটি মুক্তি পাওয়ার এক বছরের মধ্যেই বিপাশাকে বিয়ে করেন কর্ণ। বিয়ের পর আর সে রকম ভাবে অভিনয় করতে দেখা যায়নি কাউকেই। এখন কন্যাসন্তানকে নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন তারকা জুটি।