জয়-বীরু জুটি থেকে শুরু করে বসন্তী বা গব্বর সিংহ— ১৯৭৫ সালে ‘শোলে’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই সব নাম বলিউডে কান পাতলেই শোনা যায়। অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, সঞ্জীব কুমার, আমজাদ খান, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চনের মতো তারকাদের কেরিয়ারে এই ছবিটি মাইলফলক গড়ে তোলে। কিন্তু বলিউডে এমন এক অভিনেতা রয়েছেন যিনি ‘শোলে’র মতো সফল ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েও ফিরিয়ে দেন।
‘শোলে’ ছবিতে গব্বরের চরিত্রে অভিনয় করে খলনায়ক হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আমজাদ। তবে ছবির পরিচালক রমেশ সিপ্পির প্রথম পছন্দ ছিলেন না তিনি। বলিপাড়া সূত্রে খবর, গব্বর চরিত্রের জন্য প্রথমে বলি অভিনেতা ড্যানি ডেনজংপাকে বেছে দিয়েছিলেন ছবিনির্মাতারা।
কানাঘুষো শোনা যায়, গব্বরের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ড্যানিকে প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন তিনি।
১৯৭২ সালে ‘জরুরত’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন ড্যানি। ২৬ বছর বয়সে ‘ইশারা’, ‘মেরে আপনে’, ‘ঢুন্ঢ’-এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করে ফেলেন অভিনেতা। কিন্তু কোনও ছবিতেই মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাননি।
‘শোলে’র নির্মাতারা মনে করেছিলেন ড্যানি তাঁদের ছবিতে অন্যতম মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করবেন না। কিন্তু অভিনয়ের প্রস্তাব খারিজ করেন ড্যানি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, শুটিংয়ের জন্য সময় বার করতে পারবেন না বলে ‘শোলে’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ড্যানি। কারণ সেই সময় ফিরোজ় খান পরিচালিত ‘ধর্মাত্মা’ ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
চিত্রনাট্যের খসড়া অনুযায়ী ‘ধর্মাত্মা’ ছবিতে দ্বিতীয় অভিনেতা হিসাবে অভিনয়ের কথা ছিল ড্যানির। কানাঘুষো শোনা যায়, ‘ধর্মাত্মা’ ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন ড্যানি। কিন্তু মুক্তির পর তাঁর অভিনীত প্রায় সব দৃশ্য ছবি থেকে বাদ পড়ে।
বলিপাড়া অন্দরমহল সূত্রে জানা যায়, ‘ধর্মাত্মা’ ছবির শুটিং হয়ে যাওয়ার পর ফিরোজ় মনে করেছিলেন যে, ড্যানির চরিত্রটি প্রথম অভিনেতার চরিত্রকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। সে কারণে ড্যানি অভিনীত দৃশ্যগুলিতে কাঁচি চালানো হয়।
‘ধর্মাত্মা’ ছবিটি মুক্তির পর দেখা যায়, ড্যানির চরিত্রটি আর দ্বিতীয় অভিনেতার জায়গায় থাকেনি। বরং ছবিটি দেখে মনে হয়েছে যে ড্যানি কোনও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৯৭৫ সালেই মুক্তি পায় ‘ধর্মাত্মা’ ছবিটি। একই বছরে ‘শোলে’ ছবিটি মুক্তি পেলে গব্বর চরিত্রের জনপ্রিয়তা দেখে মুষড়ে পড়েন ড্যানি।
সত্তর থেকে আশির দশকের মধ্যে একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় ড্যানিকে। অধিকাংশ ছবিই বাণিজ্যিক দিক দিয়ে সফল হয়। কিন্তু কোনও ছবিতেই মুখ্য অভিনেতা হিসাবে দেখা যায়নি ড্যানিকে।
কানাঘুষো শোনা যায়, আশির দশকে বলিপাড়ায় তেমন জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় অভিনয়জগৎ থেকে সরে যাওয়ার কথাও ভেবেছিলেন ড্যানি। সেই সময় একের পর এক ছবিতে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্রে অভিনয় করতে থাকেন তিনি।
১৯৯০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে নজর কাড়েন ড্যানি। ক্ষণিকের জন্য সাফল্যের স্বাদ পেলেও আবার চেনা খাতে বইতে শুরু করে তাঁর কেরিয়ার।
‘বস’, ‘জয় হো’, ‘বেবি’, ‘নাম শাবানা’, ‘মণিকর্ণিকা’, ‘ব্যাং ব্যাং’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় ড্যানিকে। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘উঁচাই’ ছবিতে শেষ অভিনয় করেছেন তিনি। এই ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয়ের পর এখনও পর্যন্ত অন্য কোনও ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি ড্যানিকে।