আর এক মাসও বাকি নেই। ১২ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে সলমন খানের ছবি ‘টাইগার ৩’। সলমনের এই ছবি যে বক্স অফিসে ঝড় তুলতে পারে সে অনুমান করেছেন ছবি বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু ছবি মুক্তির আগে সলমনকে ‘মিথ্যাবাদী’ বললেন বলি অভিনেতা চন্দ্রচূড় সিংহ। হঠাৎ এমন কেন বললেন চন্দ্রচূড়?
নব্বইয়ের দশক থেকে অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত চন্দ্রচূড়। ‘তেরে মেরে সপনে’, ‘মাচিস’, ‘বেতাবি’, ‘জোশ’, ‘কেয়া কেহনা’, ‘আমদানি আঠঠানি খরচা রুপাইয়া’র মতো হিন্দি ছবি রয়েছে অভিনেতার কেরিয়ারে।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে যেখানে বলি পরিচালক কর্ণ জোহর জানান, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য চন্দ্রচূড়কে প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি ফিরিয়ে দেন। কর্ণের সঙ্গে সেখানে দেখা যায় সলমনকেও।
কর্ণের কথা শুনে সলমন জানান, চন্দ্রচূড়ের হাতে কোনও কাজ না থাকা সত্ত্বেও ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তিনি। সলমনের এই বক্তব্য মিথ্যা বলে দাবি করেন চন্দ্রচূড়।
কর্ণ সঞ্চালিত ‘কফি উইথ কর্ণ’ রিয়্যালিটি শোয়ের পুরনো একটি পর্বের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে। সেই পর্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সলমন। শো চলাকালীন সলমনের সঙ্গে পেশাগত জীবন নিয়ে আলোচনা শুরু করেন কর্ণ।
১৯৯৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় কর্ণ পরিচালিত প্রথম ছবি ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ খান, রানি মুখোপাধ্যায় এবং কাজল। এই ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় সলমনকে।
কর্ণ শোয়ে দাবি করেন, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে (চরিত্রের নাম আমন) অভিনয়ের জন্য বলিউডের একাধিক অভিনেতাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমনের চরিত্রে অভিনয় করতে কেউ রাজি ছিলেন না।
কর্ণ বলেন, ‘‘সইফ আলি খানকে আমি আমনের চরিত্রে অভিনয় করতে বলেছিলাম। কিন্তু ও কাজ করতে চাইল না। সইফের পর আমি চন্দ্রচূড়ের কাছে গিয়েছিলাম। চন্দ্রচূড়ও সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল।’’
কর্ণের কথা শুনে সলমন বলেন, ‘‘তোমার ছবিতে অভিনয় করার জন্য তুমি শাহরুখ খানকে ঠিক যত সহজে হাতের কাছে পেয়েছিলে, আমনের চরিত্রের জন্য অভিনেতার খোঁজ পাওয়া তোমার পক্ষে ঠিক ততটাই কঠিন ছিল।’’
সলমনকে উদ্দেশ করে কর্ণ বলেন, ‘‘এখনও মনে আছে আমার প্রথম ছবির গল্প তোমায় শোনাতে যাওয়ার কথা। সইফ এবং চন্দ্রচূড় দু’জনেই মানা করে দিয়েছিল। তুমি তখন আমায় বলেছিলে যে কেউ এই চরিত্রে অভিনয় করবে না। তার পর তোমার সঙ্গে দেখা করতে বললে।’’
সলমন ঘটনার আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘‘সইফ সে সময় কোনও কাজ করছিল না। চন্দ্রচূড়ের হাতেও কোনও কাজ ছিল না। তবুও ওরা তোমায় ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আমি তোমার দক্ষতা দেখেছিলাম। তাই রাজি হই। কিন্তু তার পর আর তুমি আমার সঙ্গে কাজ করোনি।’’ সলমন এবং কর্ণের কথোপকথনের এই অংশের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে।
চন্দ্রচূড় সম্পর্কে সলমন যে মন্তব্য করেছেন তা নাকি মিথ্যা, ভিডিয়োর তলায় এমনটাই দাবি করলেন চন্দ্রচূড়। অভিনেতা সেই ভিডিয়োর নীচে মন্তব্য করেন, ‘‘সলমনের মিথ্যা।’’
চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য দেখে এক নেট ব্যবহারকারী কৌতূহলের বশে অভিনেতাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন। চন্দ্রচূড় কেন সলমনকে হঠাৎ মিথ্যাবাদী বললেন তা জানতে চান ওই নেটব্যবহারকারী। চন্দ্রচূড়কে কি তা হলে প্রস্তাব দেওয়া হয়নি?
চন্দ্রচূড় মন্তব্য করার জায়গায় লিখে জানান, কর্ণ যখন তাঁর কাছে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন তখন তাঁর হাতে একাধিক ছবির কাজ ছিল। সলমনের কথামতো কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন না তিনি।
চন্দ্রচূড় লেখেন, ‘‘আমার কাছে তখন ‘দাগ: দ্য ফায়ার’, ‘জোশ’, ‘কেয়া কহনা’, ‘সিলসিলা হ্যায় প্যার কা’র মতো বহু ছবি ছিল।’’
সত্য বলার জন্য নেটব্যবহারকারী চন্দ্রচূড়কে ধন্যবাদ জানানোর কিছু ক্ষণ পরেই মন্তব্যটি সমাজমাধ্যম থেকে মুছে দেন অভিনেতা। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে অনেকেই অভিনেতার মন্তব্যের ‘স্ক্রিনশট’ নিয়ে ফেলেন।
শাহরুখের সঙ্গে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ না পেলেও ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জোশ’ ছবিতে শাহরুখের সহ-অভিনেতা হিসাবে অভিনয় করতে দেখা যায় চন্দ্রচূড়কে।