চলতি মাসেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘ভোলা’। দর্শক এই ছবিতে অজয় দেবগনের অভিনয়ের বহুল প্রশংসা পেয়েছে। নব্বইয়ের দশক থেকেই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন অজয়।
কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে আসা অজয়ের পক্ষে সহজ ছিল না। গায়ের রং নিয়ে অনবরত কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন তিনি। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, সমসাময়িক অন্যান্য অভিনেতার তুলনায় অজয় দেখতে ভাল ছিলেন না বলে নাকি তাঁকে ছবি নির্মাতারা অভিনয়ের প্রস্তাব দিতে চাইতেন না।
অবশেষে বলি পরিচালক সন্দেশ কোহলির হাত ধরে বলিপাড়ায় পদার্পণ করেন অজয়। ১৯৯১ সালের ২২ নভেম্বর মুক্তি পায় অজয় অভিনীত ‘ফুল অওর কাঁটে’ ছবিটি।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, স্টান্ট কোরিয়োগ্রাফার বীরু দেবগনের পুত্র হওয়ার কারণেই অ্যাকশন ঘরানার ছবি দিয়েই নিজের কেরিয়ার শুরু করেন অজয়। ‘ফুল অওর কাঁটে’ ছবির প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন বলিজগতের তাবড় তারকারা। উপস্থিত তারকাদের তালিকায় ছিলেন অনিল কপূরও।
আশির দশক থেকেই হিন্দি ফিল্মজগতের পাশাপাশি দক্ষিণী ফিল্মজগতেও রাজত্ব শুরু করেছিলেন অনিল কপূর। প্রথম সারির অভিনেতাদের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
‘ফুল অওর কাঁটে’ ছবির প্রিমিয়ারে অজয়ের সঙ্গে দেখা করেন অনিল। অজয়ের প্রথম ছবি মুক্তি পাওয়ার আনন্দে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়নি তাঁকে। বরং অজয়কে ভয় দেখাতে শুরু করলেন অনিল।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, অজয়কে তাঁর ছবির মুক্তির বিষয়ে আশাহত করেছিলেন অনিল। অনিল বলেন, ‘‘নতুন নায়ক, নতুন নায়িকা, এমনকি নতুন পরিচালক। এই ছবি চলবে বলে মনে হয়? এ ছবি মুক্তি না পাওয়াই ভাল।’’
অনিলের মুখে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে যান অজয়। আসলে ‘ফুল অওর কাঁটে’ যে দিন মুক্তি পাওয়ার কথা, তার ঠিক এক দিন আগেই মুক্তি পেয়েছিল অনিলের ছবি।
২১ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় অনিল অভিনীত ‘লমহে’ ছবিটি। এই ছবির পরিচালনা এবং প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন যশ চোপড়া। অনিলের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন শ্রীদেবী।
একেই যশ চোপড়ার ছবি বলে কথা! তার উপর অনিল এবং শ্রীদেবীর মতো বলিপাড়ার দুই বড় মাপের তারকা অভিনয় করছেন। অনিল নিশ্চিত ছিলেন যে, ‘লমহে’ বক্স অফিস থেকে ভাল সাড়া পাবে।
একই সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফুল অওর কাঁটে’ ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে যে তা বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়বে, তাও খানিকটা হুমকির স্বরেই অজয়কে জানিয়েছিলেন অনিল।
কিন্তু অনিলের বারণ করা সত্ত্বেও অজয় পিছপা হননি। নির্ধারিত তারিখেই ‘ফুল অওর কাঁটে’ ছবিটি মুক্তি পায়। বক্স অফিসে তখন অনিলের মুখোমুখি এক নবাগত অভিনেতা।
বলিপাড়ার একাংশ অনুমান করেছিলেন যে, অজয়ের প্রথম ছবি মুখ থুবড়ে পড়বে। ব্যবসার দিক দিয়ে কোনও মতেই ‘লমহে’ ছবিটিকে টক্কর দিতে পারবে না অজয়ের ‘ফুল অওর কাঁটে’।
কিন্তু সকলের ভুল ভাঙে। যশরাজ ব্যানারের ছবিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ব্যবসার দিক থেকে এগিয়ে যেতে থাকে অজয়ের ছবি। ‘লমহে’ বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।
অনিল ভয় দেখালেও তাঁর কথা ফলল না। শেষ পর্যন্ত ফুল দিয়ে কাঁটা তুলে নিয়েছিলেন অজয়। ২০২১ সালে একটি রিয়্যালিটি শোয়ে এসে অজয় এই অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন। অজয় জানান যে, তাঁর মঙ্গলের কথা ভেবেই অনিল এই কথাগুলি বলেছিলেন। অজয়ের দাবি, তাঁর প্রথম ছবি ফ্লপ হয়ে যাক, তা চাননি অনিল।